প্রতীকী ছবি।
নেত্রীর বিগ্রেডের সভায় দলের সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব নিয়েও তৃণমূলের অন্দরে হিসেব-নিকেশ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দলের নীচুতলার কর্মী, সমর্থকদের একাংশের মধ্যেও এ নিয়ে আলোচনার খবর মিলছে। জেলার কর্মী, সমর্থকদের বিগ্রেডে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জেলা সভাপতি, ‘কাকা’, রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ভূমিকাকে এগিয়ে রাখছেন তাঁর অনুগামীরা। বিরোধী শিবিরের অনেকে যা মানতে নারাজ। দলের অন্দরের খবর, এ নিয়ে নিচুতলার অনেকেই ওই ব্যাপারে যুক্তি, পাল্টা যুক্তিও দিচ্ছেন।
জেলা সভাপতি অনুগামীদের বক্তব্য, ‘অভিভাবকের’ ভূমিকা নিয়েছেন রবিবাবু। তার জেরেই ১০ হাজারের বেশি কর্মী, সমর্থক কোচবিহার থেকে কলকাতার কর্মসূচিতে যোগ দেন। জেলা সভাপতি নিজে নিউ কোচবিহার স্টেশনে দাঁড়িয়ে থেকে টানা কর্মীদের ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়ার তদারকি করেছেন। নেত্রীর কর্মসূচি নিয়ে জেলাজুড়ে প্রচারও করেছেন। এমনকি সভা শেষে শিয়ালদহ স্টেশনে এসে ওই কর্মী, সমর্থকদের ঠিকমতো বাড়ি ফেরানোর তদারকিও করছেন। রবিবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “দলনেত্রীর ডাকে সবাই কলকাতা যান। এ জন্য কোচবিহারে সমস্ত ব্যবস্থা জেলা সভাপতিই করেন।” কোচবিহার ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি খোকন মিয়াঁ বলেন, “আমাদের পাঠাতে স্টেশনে জেলা সভাপতি ছাড়া অন্য নেতা ছিলেন না।”
যদিও রবিবাবুর বিরোধী শিবিরের দাবি, ওই ব্যাপারে সকলের ভূমিকাই সমান। বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক, সাংসদ থেকে অন্য জনপ্রতিনিধিরাও নিজেদের মতো প্রচার করেছেন। সবাই দলনেত্রীর ডাকেই ওই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। তাই সবার ভূমিকাই সমান-সমান। সাম্প্রতিক জেলা রাজনীতিতে রবি-বিরোধী বলে পরিচিত দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “দলনেত্রীর ডাকে সবাই গিয়েছেন।” মাথাভাঙার বিধায়ক, বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “আমার এলাকা থেকে প্রচুর লোক গিয়েছে এটা বলতে পারি। জেলার অন্য বিধানসভা এলাকার ব্যাপারে আমার বলার ব্যাপার নেই।”
তবে এ নিয়ে কোনও দ্বন্দ্ব বা প্রতিযোগিতার অভিযোগ মানতে চাননি দলের মূল, যুব শিবিরের নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “দলনেত্রীর সভায় মানুষের ঢল নেমেছিল। কোচবিহার থেকে ১০ হাজারের বেশি মানুষ এসেছিলেন। এ দিনের ওই সভা থেকেই বিজেপির বিদায়ঘণ্টা বেজেছে।” যুব তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সভায় স্পষ্ট, বিজেপির উৎখাত হবেই। এখানে জেলার কোনওরকম বিষয় নেই।”
তৃণমূলের অন্দরের খবর, কোচবিহারে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ নতুন নয়। যুব ও মূল তৃণমূলের কোন্দলের জেরে একাধিক গোলমালের ঘটনা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। ওই দুই শিবিরের ঘনিষ্ঠদের মধ্যেই নানা বিষয়ে মতানৈক্য প্রকাশ্যে এসেছে। বিগ্রেড সমাবেশে যাওয়ার আগে ‘ব্যাজ’ দেওয়া নিয়েও দুই শিবিরের চাপানউতোরের অভিযোগ ছিল। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘৮ জানুয়ারি কোচবিহারের সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত যুব তৃণমূলকে সংযত হওয়ার নির্দেশ দেন। মূল তৃণমূলকে মান্যতা দিয়ে সংগঠন করার কথা জানান। তাই জল বেশি গড়ায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy