Advertisement
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আগুন লাগলে ভরসা কী, উঠল প্রশ্ন

সম্প্রতি আনন্দবাজারের পাঠকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মানবাজার ১ পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি কবিতা মাহাতো । এলাকার বাসিন্দাদের নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় উঠে এসেছিল সেই আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন সমীর দত্ত। রইল বাছাই কিছু প্রশ্নোত্তর। •কয়েক দশকে এলাকায় জনসংখ্যা বেড়েছে। দোকানপাট বেড়েছে । রাস্তা আগের চেয়ে অনেক সংকীর্ণ হয়েছে গিয়েছে। যানজটের সমস্যা মেটাতে পঞ্চায়েত সমিতি কী উদ্যোগ নিচ্ছে?

কোন পথে! মানবাজারের বাসস্ট্যান্ডের সামনে বেহাল রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র

কোন পথে! মানবাজারের বাসস্ট্যান্ডের সামনে বেহাল রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৬ ০২:১৪
Share: Save:

•কয়েক দশকে এলাকায় জনসংখ্যা বেড়েছে। দোকানপাট বেড়েছে । রাস্তা আগের চেয়ে অনেক সংকীর্ণ হয়েছে গিয়েছে। যানজটের সমস্যা মেটাতে পঞ্চায়েত সমিতি কী উদ্যোগ নিচ্ছে?

অনাথবন্ধু মুখোপাধ্যায়, নামোপাড়া

সভাপতি: সম্প্রতি মানবাজারের মূল রাস্তা সংস্কার করে চওড়া করা হয়েছে। কিন্তু বাসিন্দা এবং পথচারীদের একাংশ রাস্তার উপরেই সাইকেল এবং মোটরবাইক রাখেন। বেশ কিছু ব্যবসায়ীও রাস্তার উপরেই ঠেলাগাড়ি রেখা বিকিকিনি করেন। ফলে রাস্তা চওড়া হলেও তার সুফল এলাকার বাসিন্দারা পাচ্ছেন না। এই সমস্যা কাটাতে সম্প্রতি এলাকার ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে ব্লক অফিসে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এলাকা যানজট মুক্ত করতে একমুখী যান চলাচল চালু করা হবে। এলাকায় মাইকে বিশদে প্রচার করা হবে।

•মানবাজারের ট্যাক্সিস্ট্যান্ড এলাকার রাস্তা চওড়া হলেও কিছু চালক রাস্তার দু’পাশে গাড়ি রাখেন। এর ফলে রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়টি কি পঞ্চায়েত সমিতির নজরে রয়েছে?

রূপেশ চক্রবর্তী, নামোপাড়া

সভাপতি: বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি ট্যাক্সিস্ট্যান্ড করার পরিকল্পনা রয়েছে। গাড়িগুলি চালকেরা ওখানেই রাখতে পারবেন। আশা করছি তার ফলে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।

•বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার মুখে রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। গর্তে জল জমে থাকে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। মেরামতির জন্য কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে?

সুনীল দত্ত, পোদ্দার পাড়া

কবিতা মাহাতো

সভাপতি: বিষয়টি পঞ্চায়েত সমিতির নজরে এসেছে। বাসস্ট্যান্ডের সামনের রাস্তার ওই বেহাল অংশটুকু মেরামত করার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। আশা করছি কিছু দিনের মধ্যেই সংস্কারে‌র কাজ হয়ে যাবে।

•মানবাজার থানা এলাকায় প্রায় হাজার দেড়েক ছাত্রী রয়েছে। কিন্তু মেয়েদের স্কুল রয়েছে সাকুল্যে একটি। ওই স্কুলের উপর চাপ কমাতে এলাকায় আরও একটি গার্লস স্কুল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে কি?

প্রদীপকুমার মণ্ডল, টিচার্স কলোনি

সভাপতি: ব্লক এলাকায় পুঞ্চা থানার পায়রাচালিতে সম্প্রতি আরও একটি আদিবাসী জুনিয়ার গার্লস হাইস্কুল চালু হয়েছে। মানবাজার থেকে ওই স্কুলের দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। মানবাজার শহরের মধ্যে আরও একটি গার্লস স্কুলের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা জায়গার খোঁজ করছি। জমি পেলেই শিক্ষা দফতরে অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হবে।

• এলাকায় কোথাও আগুন লাগলে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া উপায় থাকে না। দমকল কেন্দ্র রয়েছে সেই পুরুলিয়া শহরে। সেখান থেকে ইঞ্জিন এসে পৌঁছতে পৌঁছতে সব পুড়ে খাক হয়ে যায়। মানবাজারে দমকল কেন্দ্র তৈরির জন্য পঞ্চায়েত সমিতি কি কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে?

শ্যামল মাহাতো, প্রিন্স রোড

সভাপতি: এলাকায় দমকল কেন্দ্র না থাকায় খুবই সমস্যা হয়। এই গ্রীষ্মেই একের পর এক আগুন লাগার ঘটনায় বিষয়টির ভয়াবহতা আরও বেশি করে বোঝা গিয়েছে। এলাকার বিধায়ক তথা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর সঙ্গে এই বিষয়ে আমাদের কথা হয়েছে। তাঁর মাধ্যমে এই সমস্যার কথা আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে।

•মানবাজার বাসস্ট্যান্ডে দু’টি শৌচালয় নির্মাণের পরে প্রায় বছর খানেক ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। যাত্রী এবং সাধারণ মানুষজন খুবই সমস্যায় পড়েন। ওই শৌচালয়গুলি কবে চালু হবে?

বিশ্বজিৎ ঘোষ, মধুপুর

সভাপতি: শৌচালয় দু’টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কথা রয়েছে, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সেখানে জলের সংযোগ দেবে। কিন্তু এখও সেই সংযোগ না আসায় সেগুলি চালু করা যায়নি। তবে দ্রুত চালু করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হবে।

•মানবাজার থেকে ডিয়ার পার্ক পর্যন্ত মাত্র একটি বাস ও দু’টি ট্রেকার চলে। বেশির ভাগ এলাকাতেই পরিবহনের ছবিটা এ রকমই। বিকেলের পরে মানবাজার থেকে গ্রামে যাওয়ার জন্য কার্যত কোনও পরিবহন থাকে না। এর ফলে বিভিন্ন কাজে শহরে আসা গ্রামের মানুষজন খুবই সমস্যায় পড়েন। ছোট গাড়ি চলাচলের জন্য কিছু রুট তৈরি করলে গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতির কি কোনও ভাবনাচিন্তা রয়েছে?

চঞ্চল সেন, ইন্দকুড়ি

সভাপতি: পরিবহনের অভাবে কোনও গ্রামের বাসিন্দারা সমস্যায় পড়েন তাহলে স্থানীয় ছোট গাড়িগুলিকে যাত্রীপরিবহণের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব।

•সম্প্রতি মানবাজারে কিছু পথবাতি লাগানো হলেও অনেক এলাকাই এখনও অন্ধকারে রয়ে গিয়েছে। ওই এলাকাগুলিতে কবে বাতি লাগানো হবে?

বিধান মণ্ডল, টিচার্স কলোনি

সভাপতি: নির্দিষ্ট এলাকা উল্লেখ করে পঞ্চায়েত সমিতিকে জানালে আমরা সেখানে পরিদর্শন করব। তার পরে প্রয়োজন মাফিক পথবাতির সংখ্যা আরও বাড়ানো যেতে পারে।।

•মানবাজারের শ্মশান ঘাটে ছাউনি না থাকায় শ্মশানযাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হয়। বৃষ্টিতে জ্বলন্ত চিতা নিভে যাওয়ার নজিরও রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি কি ছাউনি তৈরির কথা ভাবছে?

মিহির বিশ্বাস, ইন্দকুড়ি

সভাপতি: এই সমস্যাটি দীর্ঘ দিনের। অনেকেই পঞ্চায়েত সমিতিকে বিষয়টি জানিয়েছেন। শীঘ্রই ছাউনি তৈরির জন্য পদক্ষেপ করা হবে।

• মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের পরিকাঠামো ভাল নয়। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীর অভাব রয়েছে। কথায় কথায় বাইরে রেফার করে দেওয়া হয় নেই । সামান্য অসুখ হলেও বাইরে রেফার করে দেওয়া হয়। পঞ্চায়েত এই সমস্যা মেটাতে কোনও ভূমিকা নেবে কি?

প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায়, নামোপাড়া

সভাপতি: রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা চিকিৎসকের ঘাটতির কথা জানিয়েছেন। পরিকাঠামোর মান বাড়ানোর জন্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হবে।

• বলুডি গ্রামের জলের ট্যাঙ্কটি বেহাল হয়ে পড়ায় বাতিল করা হয়েছিল। তারপরে প্রায় পাঁচ বছর ধরে মানবাজারের বাসিন্দারা সরাসরি নদীর জলই ব্যবহার করছেন। বিষয়টি অস্বাস্থ্যকর। এর সমাধান কবে হবে?

স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়, ইন্দকুড়ি

সভাপতি: জাইকা প্রকল্প চালু হলে এই সমস্যা আর থাকবে না বলে আমাদের জানানো হয়েছিল। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী জেলায় এলে তাঁকে পানীয় জলের সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। দফতরের আধিকারিকেরা বিষয়টি দেখছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। সরকারি সাহায্যেরও আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে। আশা করছি শীঘ্রই সমস্যা মেটানো সম্ভব হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE