—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লোকসভা নির্বাচনের ফলঘোষণার পর থেকে দলের অন্দরে থাকা ‘বিশ্বাসঘাতক’ চিহ্নিত করার উপর জোর দিচ্ছিল বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল। তাঁদের কোনও ভাবেই রেয়াত করা হবে না বলেও বার বার হুঁশিয়ারি দেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এ বার সেই প্রক্রিয়াও শুরু হল। নির্বাচনে বিরোধীদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ তুলে শনিবার বাঁকুড়ার সিমলাপাল, পার্শ্বলা ও কেঞ্জাকুড়া অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অঞ্চল সভাপতিদের সরিয়ে দিল তৃণমূল। যার প্রেক্ষিতে বিজেপির কটাক্ষ, ‘‘নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে দলের নিচুতলার নেতাদের এ ভাবে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে।’’
সদ্য শেষ হওয়া লোকসভা নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে বাঁকুড়ায়। শেষ পর্যন্ত ৩৩ হাজার ভোটে জয়ী হয় তৃণমূল। কিন্তু জয়ের পরে ‘আত্মতুষ্টি’তে ভুগতে রাজি নন তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব। ভোটের ফল নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু করেছিলেন তাঁরা। যে এলাকাগুলিতে আশানুরূপ ফল হয়নি, সেগুলি চিহ্নিত করা শুরু হয়। যে যে বুথে পরাজয় হয়েছে, তার কারণ বিশ্লেষণ করতে বসেন নেতারা। তাতেই উঠে এসেছে অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব। বাঁকুড়ার নবনির্বাচিত সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতিও। ভোটের ফলের পর তিনি ঘোষণা করেন, ‘‘দুষ্ট গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভাল। দলের সঙ্গে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে দল।”
সিমলাপাল, পার্শ্বলা এবং কেঞ্জাকুড়া— এই তিনটি অঞ্চলের সভাপতিকে সরিয়ে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে জেলা সভাপতির ঘোষণাকেই কার্যকর করা হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
তৃণমূল সূত্রে খবর, গত ৫ জুলাই বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের তরফে জারি করা এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, বিরোধী দলকে সমর্থন করা এবং বিরোধী দলের কার্যকলাপের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগসাজশ থাকায় পার্শ্বলা অঞ্চলের সভাপতি বিবেকানন্দ সিংহ মহাপাত্র, সিমলাপাল অঞ্চলের সভাপতি দেবাশিস গুলি ও কেঞ্জাকুড়া অঞ্চলের সভাপতি রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়কে তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে অরূপ বলেন, ‘‘ওই তিন অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ রয়েছে। নির্বাচনে তাঁরা দলের কাজ না করে বিরোধীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই সবে শুরু হয়েছে। যাঁদের বিরুদ্ধেই এমন প্রমাণ মিলবে, তাঁদেরই দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।’’
কেঞ্জাকুড়ার অঞ্চল সভাপতির পদ খুইয়ে রঞ্জিতের মন্তব্য, “আমি ৪০ বছর ধরে রাজনীতি করে আসছি। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালবেসে এই দল করি। আমি কোনও দলবিরোধী কাজ করিনি। আমার বুথে নজর দেওয়ার কথা বলেছিলেন অরূপ চক্রবর্তী। আমি তা-ই করেছি। প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে আমার বুথে কিন্তু তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে। তার পরেও আমাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। আমার পদের কোনও মোহ নেই। এক জন সাধারণ কর্মী হিসাবে আজীবন আমি তৃণমূল করে যাব।”
তবে সদ্য অপসারিত অপর দুই অঞ্চল সভাপতির প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অন্য দিকে, বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীল রুদ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘তৃণমূল যেখানে ভোট কম পেয়েছে, সেখানে নিজেদের ভুলত্রুটি ঢাকতে নিজেদের দলেরই নিচু তলার কর্মীদের এ ভাবে বলির পাঁঠা করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy