তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মহিলা উদ্যোগীদের ঋণ, শিশু ও মহিলাদের পুষ্টির জন্য বরাদ্দের ঘোষণা— এমন নানা ঘোষণা ছিল কেন্দ্রীয় বাজেটে। সব মিলিয়ে সরকার মহিলাদের জন্য নানা প্রকল্পে বরাদ্দ করলে তা আখেরে অর্থনীতিকেই মজবুত করবে বলে মনে করছেন জেলার মহিলাদের অনেকে।
শনিবার বাজেট পেশ করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন কেন্দ্রীয় বাজেটে তফসিলি জাতি ও উপজাতির মহিলা উদ্যোগীদের জন্য একটি নতুন প্রকল্পের ঘোষণা করেন। উল্লেখযোগ্য ভাবে মহিলা ক্ষমতায়নের প্রতি একটি পদক্ষেপ বলে মনে করছেন অনেকেই।
নতুন প্রকল্প অনুসারে, আগামী পাঁচ বছরে সরকারের তরফে একজন তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত মহিলা উদ্যোগীদের ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। উদ্দেশ্য, সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশ থেকে উঠে আসা কোনও মহিলা স্বনির্ভর হতে চাইলে, সেখানে যেন পুঁজি অন্তরায় না হয়। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন, সামনের পাঁচ বছর সকলের উন্নতি, সব অংশের উন্নতি উপলব্ধি করার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তাঁদের মতো ব্যবসায়ীদের কথা সরকার ভাবলে নিজেদের ব্যবসায় আরও লাভ করতে সহায়তা হবে বলে মনে করছেন সিউড়ির মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নহোদরী আদিবাসীপাড়ার বাসিন্দা অনিতা মাহালি। তিনি বাঁশের নানা সামগ্রী তৈরি করেন। ওঁর সঙ্গে কাজ করেন আরও বেশ কিছু মহিলা। বিষয়টি দেখাশোনা করে সরকারে ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি উদ্যোগ এবং বস্ত্র দফতর বা এমএসএমই। প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, রাজ্য ও কেন্দ্রের যে প্রকল্প তাতে মহিলাদের উদ্যোগী হওয়ার সুযোগ ছিল। তবে মহিলাদের জন্য নতুন প্রকল্প হলে বরাদ্দ বাড়বে, উপকৃত হবেন অনেকেই।
বাজেট বক্তৃতায় শিশু ও মহিলাদের জন্য আরও একটি ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি এবং পোষণ ২.০ প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেন নির্মলা। তিনি জানান, এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ৮ কোটির বেশি শিশু, এক কোটি প্রসূতি এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু জেলায় ২০ লক্ষ কিশোরীকে পুষ্টি সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। সেটি যাতে ঠিক ভাবে হয় সে জন্য খরচ যথাযথ ভাবে উন্নত করা হবে।
জানা গিয়েছে, সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি অ্যান্ড পোষণ ২.০ প্রকল্পে গত অর্থবর্ষে বরাদ্দ ছিল ২১,২০০ কোটি টাকা। সেটিই এই অর্থবর্ষে বাড়িয়ে ২১,৯৬০ কোটি টাকা করা হয়েছে। উদ্দেশ্য, দেশের মানব সম্পদের উন্নতি, অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই এবং সে বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
অন্তঃসত্ত্বা, সদ্য মা হয়েছেন এমন মহিলা এবং শিশুদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়ে থাকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে। বীরভূম জেলার ক্ষেত্রে জানা গিয়েছে, উপভোক্তার সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ। কিন্তু বরাদ্দ বৃদ্ধিতে কতটা লাভ হবে, বাস্তবে না দেখে বলা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সংগঠনের জেলা নেত্রী মহম্মদবাজারের অনিন্দিতা মণ্ডল জানান, পোষণের জন্য দেওয়া চার্ট অনুযায়ী খাবার বা তার সঠিক মূল্য সরকারের তরফে পাঠানো হলে পুষ্টি ঠিক থাকবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)