প্রতীকী ছবি।
ভোরবেলা এক শিশুর প্রবল কান্না শুনে প্রতিবেশীর বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন স্থানীয়রা। বাড়িতে ঢুকে দেখেন, প্রায় বেহুঁশ হয়ে পড়ে রয়েছেন এক দম্পতি ও তাঁর ছেলে-মেয়ে। সর্বত্র মল এবং বমি। তার মাঝে চিৎকার করে কাঁদছে দম্পতির বছর খানেকের নাতি। সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে শুক্রবার গভীর রাতে চিকিৎসাধীন ওই দম্পতির মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরেই মারা গিয়েছেন দম্পতি। তবে দেহের ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। পাশাপাশি, ওই বাড়ি থেকে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, বাঁকুড়ার ইন্দপুর থানার ধানসাতরা গ্রামের বাসিন্দা ওই মৃতদের নাম অশোক বসু (৫৩) এবং কেয়া বসু (৩৫)। দম্পতির মৃত্যুর আসল কারণ জানতে দেহ দু’টি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্তও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পেশায় চাষি অশোক তাঁর পরিবারের সকলকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়েছিলেন। তবে ভোরবেলায় অশোকের বাড়ি থেকে তাঁর নাতির কান্নায় ঘুম ভেঙে যায় প্রতিবেশীদের। তার পর অশোকের বাড়িতে গিয়ে প্রতিবেশীরা দেখেন, বাড়ির ভিতর প্রায় অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছেন অশোক, তাঁর স্ত্রী কেয়া, ছেলে জিতেন এবং দম্পতির বিবাহিত মেয়ে চম্পা সরকার। তাঁদের মাঝে বসে প্রবল কান্নাকাটি করছে চম্পার বছরখানেকের সন্তান। বাড়ির সর্বত্র বমি আর মল ছড়িয়েছিল।
পরিবারের চার জন গুরুতর অসুস্থকে শুক্রবার ভোরে স্থানীয় ইন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চার জনেরই শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁদের ভর্তি করানো হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। শুক্রবার গভীর রাতে সেখানেই মারা যান অশোক ও তাঁর স্ত্রী। চিকিৎসার জন্য চম্পাকে দুর্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হলেও শনিবার দুপুর পর্যন্ত জিতেনের চিকিৎসা চলছিল বাঁকুড়ার ওই হাসপাতালে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। মৃত্যুর আসল কারণ জানতে দেহ দু’টির ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ওই বাড়ি থেকে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।”
খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরেই এই ঘটনা বলে মনে করছেন অশোকের দাদা সুভাষ বসু। তিনি বলেন, “পাশাপাশি থাকলেও আলাদা বাড়িতে বসবাস করায় রাতে ভাই ও তাঁর পরিবার কী খেয়েছিল, তা বলতে পারব না। আমরা নিশ্চিত রাতের খাবারে বিষক্রিয়ায় মারা গিয়েছে ওরা।” দম্পতির প্রতিবেশী লক্ষ্মী বসু বলেন, “শুক্রবার ভোরে শিশুটির কান্নার আওয়াজ না পেলে হয়তো জানতেই পারতাম না যে ওই বাড়িতে এত বড় ঘটনা ঘটে গিয়েছে। দু’জন জলজ্যান্ত মানুষ এ ভাবে মারা যাবে, ভাবতেও পারছি না।”
শনিবার দুপুরে ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান তালড্যাংরার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, “খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণেই এমন ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। এই পরিবারকে সমস্ত সাহায্যের জন্য গ্রাম পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে আমাকে ফোন করার কথাও বলেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy