প্রতি বছরের মতোই এ বারও হইহই করে সরস্বতী পুজো করছেন অপরাজিতা আঢ্য। রবিবার ও সোমবার মিলিয়ে এ বার সরস্বতী পুজোর তিথি। রবিবার বেহালার নাচের স্কুলে সরস্বতী পুজো সারছেন অভিনেত্রী। হাওড়ার নাচের স্কুলে বাগ্দেবীর আরাধনা করবেন সোমবার। শনিবার থেকেই সরস্বতী পুজোর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন অভিনেত্রী। জোরকদমে পুজোর প্রস্তুতি সারতে সারতে চা-শিঙাড়ার আসরও বসেছিল, জানালেন অপরাজিতা।
সরস্বতী প্রতিমা নিয়ে আসতেই তাকে বরণ করে আসনে বসান অভিনেত্রী। আলপনা দেওয়াতেও ছিল তাঁর বিশেষ যোগদান। লক্ষ্মীপুজো, গণেশ চতুর্থী বা সরস্বতী পুজো— যে কোনও পুজোতেই একশো শতাংশ যোগদান থাকে অভিনেত্রীর। প্রতিটি পুজোর অর্থও সমাজমাধ্যমে সহজ ভাবে বুঝিয়ে দেন তিনি। সেই প্রসঙ্গেই আনন্দবাজার অনলাইন প্রশ্ন রেখেছিল, সমাজ মেয়েদের লক্ষ্মীমন্ত হতে বলে। কিন্তু সরস্বতীমন্ত হয়ে উঠতে শেখায় না কেন? সঙ্গে সঙ্গে অপরাজিতার উত্তর, “বিদ্যাকে আসলে সবাই ভয় পায়। মেয়েরা শিক্ষিত হয়ে উঠুক, এটা সবাই চায় না। সবাই প্রত্যাশা করে, মেয়েরা কোনও কিছুর প্রতিবাদ করবে না। শিক্ষিত হলেই তো তারা মুখ খুলবে। আর সত্যি কথা তো কেউ সহ্য করতে পারে না। তাই লক্ষ্মীমন্ত হতে বলা হয়, যাতে মেয়েরা সব সহ্য করে নেয়। সরস্বতীমন্ত হতে শেখানো হয় না।”
তবে লক্ষ্মী-সরস্বতী হয়ে ওঠার আগেও কালী হয়ে ওঠার পরামর্শ দিয়েছেন অপরাজিতা। অভিনেত্রীর স্পষ্ট জবাব, “আমি সবাইকে বলি, আগে মা কালী হয়ে ওঠো। আমি নিজেকেও তা-ই বলি। আমি তো সব সময় খাঁড়া নিয়ে ঘুরি।” নারীদের হয়ে স্পষ্ট কথা বলেন অপরাজিতা। দেবী সরস্বতী সম্পর্কে অভিনেত্রী বলেন, “মহাকালী, মহালক্ষী ও মহা সরস্বতী— তিনটিই দুর্গার রূপ। কাম, অহংকার, রূপ, গুণ, গন্ধ, ধৈর্য, হাসি সমস্ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য মিলিয়েই সম্পূর্ণ নারী হয়ে উঠতে হয়। কোনও কিছু বাদ দিয়ে নয়।”
সব শেষে বাগ্দেবীর আরাধনা নিয়ে অভিনেত্রীর পরামর্শ, “সবার আগে শিক্ষার প্রয়োজন। শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। শিক্ষিত না হলে আমাদের বিভ্রান্তি কাটবে না। সমাজে আমরা পিছিয়েই থাকব। সুতরাং লেখাপড়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “শিক্ষিত মানে শুধু পুঁথিগত শিক্ষার কথা বলছি না। আমাদের সময়ে বলা হত, স্নাতক না হলে ভাল ঘরে বিয়ে হবে না। তাই স্নাতক হওয়া জরুরি। এই ভাবনাই আরও অশিক্ষার প্রতিফলন। শিক্ষিত মানে নিজের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে সচেতন হওয়া। সেই চেতনা যেন সকলের জেগে ওঠে।”