খাঁ খাঁ: সাহেববাঁধের পাড়ের এই রাস্তায় গাছের তলায় বিশ্রাম নেওয়ার উপায় নেই। আক্ষেপ কি এ বার ঘুচবে? ছবি: সুজিত মাহাতো
গ্রিন সিটি প্রকল্পে পুরুলিয়া শহরকে আরও সবুজ করার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে পুরুলিয়া পুরসভা।
পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এই জেলার পুরুলিয়া, রঘুনাথপুর ও ঝালদা— তিনটি পুরসভাকেই গ্রিন সিটি প্রকল্পের আওতায় এনেছে। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্যই শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ করে তোলা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় এ জন্য গাছ লাগানো হবে। পুরুলিয়া পুরসভা আবার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বড় গাছ লাগাতে চাইছে।
পুরুলিয়া শহরের রাস্তাঘাটে যত্রতত্র উড়ে বেড়ানো প্লাস্টিক নালা পড়ে অনেক সময় নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই পুরুলিয়া পুরসভা শহরকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে নেমেছে।
পুরপ্রধান সামিমদাদ খান জানিয়েছেন, ‘‘শহরকে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে পুরবাসীর সহায়তা আগে প্রয়োজন। আমরা প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সচেতনতার প্রচারে রাস্তায় নেমেছি। এরপরে দোকান বা বাজারে গিয়ে দোকানদারদের অনুরোধ জানানো হবে পাতলা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ যাতে তাঁরা ব্যবহার না করেন। তাতেও কাজ না হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
দ্বিতীয় পদক্ষেপ জলাভাবের শহরকে সবুজে মোড়া। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় গাছ লাগানো হবে। কী ভাবে বড় গাছ লাগানো হবে? পুরপ্রধান জানিয়েছেন, অন্য জায়গা থেকে বড় গাছ তুলে নিয়ে এসে মাটি খুঁড়ে সেই গাছ লাগানো হবে। একটি সংস্থা এই কাজ করবে। ইতিমধ্যেই সেই সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে।
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘ওই সংস্থা থেকে লোকজন পুরুলিয়ার কয়েকটি রাস্তা দেখে গিয়েছেন। এ বার তাঁরা যে ভাবে বলবেন, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব।’’
তিনি জানান, এই সংস্থাটি কলকাতার রাজারহাটে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বেশ কিছু বড় গাছ পুঁতেছেন। সেই প্রযুক্তিই ব্যবহার করা হবে এখানে। এই প্রযুক্তির পোশাকি নাম ‘ট্রি ট্রান্সপ্ল্যান্ট’।
পুরুলিয়া বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক ঋতব্রত বিশ্বাস জানিয়েছেন, ট্রি ট্রান্সপ্ল্যান্ট মানে একটি বড় গাছকে শিকড় সমেত তুলে নিয়ে এসে অন্য জায়গায় তা বসিয়ে দেওয়া। তার আগে যেখানে বসানো হবে সেই জায়গায় মাটি খুঁড়ে গাছ বসানোর উপযুক্ত করে নিতে হবে। কয়েকদিনের মধ্যে সেই গাছ আশপাশের মাটি ধরে নেবে। এ ভাবে গাছ বেঁচে থাকে।’’
তিনি জানান, এখন উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গাছ কাটার প্রয়োজন হয়ে পড়ছে। এই প্রযুক্তিতে সেই গাছ না কেটে শিকড় সমেত তুলে নিয়ে এসে তা বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা মনোজ মাহাতো বলেন, ‘‘পুরুলিয়ায় একেই জলের কষ্ট। ধীরে ধীরে শহরের গণ্ডি ছড়িয়ে পড়ছে। বড় বড় বাড়ি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সে ভাবে সবুজ বাড়ছে না। শহর যদি সত্যিই সবুজ হয়ে ওঠে, তার থেকে ভাল কিছু আর হয় না।’’
বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, শহরের প্রাণকেন্দ্র ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, হাসপাতাল মোড়, বাস স্ট্যান্ড, ছোট গাড়ির স্ট্যান্ড, হাটের মোড়, বিটি সরকার রোড, কোর্ট মোড়— এই সব জায়গায় গাছ লাগানোর প্রয়োজন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, শহরের বহু রাস্তার দু’পাশ দখল হয়ে রয়েছে। সেই জায়গাগুলিতেও গাছ লাগানো হোক।
পুরপ্রধান অবশ্য বলছেন, ‘‘ওই সংস্থা প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি জায়গা দেখে গিয়েছে। দেখা যাক তাঁরা কী প্রস্তাব দেন। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy