ঘটনাস্থলে রাজ্য শিশুসুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
যৌন হেনস্থার ঘটনার পরে ভয় পেয়ে পরিবারের সদস্যেরাই ৬ মাসের জন্য নাবালিকাকে স্কুল যেতে নিষেধ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার রাজ্য শিশুসুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী বীরভূম জেলার সেই নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করে তাকে আশ্বস্ত করলেন। বললেন, ‘‘কোনও ভয় নেই। আমরা আছি, পুলিশ আছে। স্কুলে তোমাকে যেতেই হবে।’’ নির্যাতিতার পরিবার সম্মত হয়েছে তাকে স্কুলে পাঠাতে।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ টিউশন থেকে ফেরার পথে ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল জেলার এক থানা এলাকায়। ঘটনায় অভিযুক্ত দুই যুবককে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করে সিউড়ি বিশেষ আদালতের নির্দেশে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পরে পুলিশ ঠিকঠাক পদক্ষেপ করেছে কি না, তা জানতে এবং নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করার জন্য বৃহস্পতিবার জেলায় এসেছিলেন রাজ্য শিশুসুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলা শিশুসুরক্ষা আধিকারিক নিরুপম সিংহ।
জেলার যে থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, অনন্যা চক্রবর্তী এ দিন সেই থানার ওসির সঙ্গে দেখা করে বিশদে রিপোর্ট নেন। জানতে পারেন, সোমবার মধ্যরাতে নির্যাতিতার মা অভিযোগ করেন। অভিযুক্তsরা গা ঢাকা দিয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরেই দুই অভিযুক্ত ধরা পড়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। সোমবার রাতেই নাবালিকার মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে। জবানবন্দি দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার সকালে সিউড়ির বিশেষ আদালতে পাঠিয়েছিল পুলিশ। নির্যাতিতাকে জেলার শিশুকল্যাণ কমিটির (সিডব্লিউসি) কাছেও হাজির করানো হয়েছিল। সব নথি খতিয়ে দেখার পরে সংবাদমাধ্যমকে অনন্যা জানান, পুলিশের তরফে এই ঘটনায় কোনও গাফিলতি নেই। পুলিশ সঠিক ভাবেই ঘটনার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে।
অভিযোগ, টিউশন পড়ে ফেরার পথে এলাকারই দুই পরিচিত যুবক একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই নাবালিকাকে উত্ত্যক্ত করে, পোশাক ছিঁড়ে দেয়। পরে তার মুখে কাপড় চাপা দিয়ে ওই দুই যুবক পুকুর পাড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। কোনও মতে মেয়েটি পালিয়ে লোকালয়ে আসতে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ দিন সেই ঘটনাস্থলেও যান রাজ্য শিশুসুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা। পরে নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন, পরিবারের সদস্যরা তাকে স্কুলে যেতে নিষেধ করেছেন, কারণ সামনেই তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। অনন্যা নির্যাতিতার মাকে বোঝান, ১৮-র নীচে বিয়ে নয়। মেয়েটিকে স্কুলে যেতে দিন। কোনও ভয় নেই। প্রয়োজনে পুলিশ স্কুলে পৌঁছতে সাহায্য করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy