জেলা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে ‘ক্ষোভ প্রকাশ’ করেছেন কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ। ফাইল ছবি।
দশ দিন অতিক্রান্ত। তার পরেও বৈঠকে বসল না স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়ে দেওয়া ‘কোর কমিটি’। যে কমিটির কাজ জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে বীরভূমে তৃণমূলের সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখা। তৃণমূলনেত্রীর নির্দেশের পরেও কেন উদ্যোগী হয়ে কোর কমিটির বৈঠক ডাকা হল না, তা নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে শাসক শিবিরের অন্দরেই। তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে ‘ক্ষোভ প্রকাশ’ করেছেন কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ। যদিও কাজল প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। বরং জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
শনিবার বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানে হাজির ছিলেন নানুরের তৃণমূল নেতা কাজলও। কিন্তু বৈঠক শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই বেরিয়ে যেতে দেখা যায় তাঁকে। তৃণমূল সূত্রে দাবি, জেলা কমিটির বৈঠকে কাজল অভিযোগ করেন, কোর কমিটির সদস্য হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে যথাযথ সম্মান দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশিই, কমিটি গঠনের ১০ দিন পরেও কেন বৈঠক ডাকা হল না, তা নিয়ে কাজল প্রশ্ন তুলেছেন বলেই দাবি ওই সূত্রের। এ বিষয়ে কাজলের সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। বলতে পারব না। আজ জেলা কমিটির বৈঠক ছিল। আমি সেখানে গিয়েছিলাম।’’
কোর কমিটির বৈঠক না হওয়া নিয়ে কাজলের যে ‘অনুযোগ’ রয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘কাজল শেখ আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাঁকে কোর কমিটিতে নিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিমান ছিল যে, কেন কোর কমিটির বৈঠক ডাকা হল না! কোর কমিটির আহ্বায়ক যিনি, সেই বিকাশ রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, ব্যস্ততার কারণেই এখন বৈঠক ডাকা যায়নি। তবে বৈঠক ডাকা হলে তাঁকেও ডাকা হবে।’’ কাজল ‘অভিমান’ করেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন কি না, তা অবশ্য জানেন না মলয়।
গত মাসের শেষের দিকে বীরভূম সফরে এসে কোর কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়েছেন মমতা। কমিটিতে ঠাঁই হয় নানুর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি কাজলের, বীরভূমের রাজনীতিতে যিনি অনুব্রত-বিরোধী বলেই পরিচিত। জায়গা পান বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ও। দলীয় সূত্রে দাবি, পদাধিকারে শতাব্দীর জায়গা হলেও কমিটিতে কাজলকে কেন আনা হল, তা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্নে রয়েছে। তার কারণও যথেষ্ট রয়েছে। ২০১৬ সালে নানুরে অনুব্রত-শিবিরের প্রার্থী, তৃণমূলের গদাধর হাজরা কেন হেরে গিয়েছিলেন, সেই প্রশ্নের জবাবে অনেকেই কাজলের দিকে আঙুল তুলেছিলেন সেই সময়ে। গত বছর অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর কাজলের সমাজমাধ্যমের পোস্ট ঘিরেও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল দলের অন্দরে। নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, ওই সব পোস্ট অনুব্রতকে নিশানা করেই। যদিও কাজল বরাবরই তা অস্বীকার করেছেন।
কোর কমিটিতে কাজলের অন্তর্ভুক্তিতে জেলায় দলের একাংশ ‘বিস্মিত’ হলেও অনেকেরই দাবি, নানুর এলাকায় দলের রাশ আলগা হচ্ছে বুঝতে পেরেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলনেত্রী। এ বার সেই কোর কমিটি ঘিরেও নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে দলের অন্দরে। একাংশের দাবি, ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’রাই ‘ইচ্ছা’ করে কোর কমিটির বৈঠক ডাকছেন না। প্রসঙ্গত, কমিটির সদস্য বিধায়ক বিকাশ, রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত।
তবে কোর কমিটির বৈঠক না-হওয়া নিয়ে শতাব্দী আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘এখন লোকসভা, বিধানসভা চলছে। অনেকেই ব্যস্ত। সেই কারণেই এখন বৈঠক ডাকা যায়নি।’’ জেলা কমিটির বৈঠকে কী ঘটেছে, তা তিনি জানেন না বলেই জানিয়েছেন সাংসদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy