ওষুধ খেলেন স্বাস্থ্য উপঅধিকর্তা মানবেন্দ্র ঘোষ। ছবি: সুজিত মাহাতো
ফাইলেরিয়া নির্মূলের জন্য ২০০৫ সাল থেকে গণওষুধ সেবন কর্মসূচি চলার পরেও পুরুলিয়া জেলাকে পুরোপুরি এই রোগের জীবাণু-মুক্ত করা যায়নি। এ বার ফাইলেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্যে পুরুলিয়া পুরসভা-সহ জেলার ১১টি ব্লকের ১৭ লক্ষ ২২ হাজার ২২০ জনকে গণওষুধ সেবন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য কুণালকান্তি দে। শুক্রবার পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রে নিজে ওষুধ খেয়ে কর্মসূচির সূচনা করেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উপঅধিকর্তা মানবেন্দ্র ঘোষ। জেলা স্বাস্থ্য-কর্তারাও ওষুধ খান। ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওষুধ খাওয়ানো হবে।
পুরুলিয়া জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘ওষুধ খাওয়ানোর জন্য জেলায় ৩,৭৪৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও ৩৭৫ জন সুপারভাইজার দায়িত্বে রয়েছেন।’’ এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি সৌম্যজিৎ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) প্রণবকুমার ঘোষ প্রমুখ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ফাইলেরিয়ার জন্য দায়ী কিউলেক্স মশার বাড়বাড়ন্ত পুরুলিয়া জেলায় রয়েছে। গোড়ার দিকে পুরুলিয়া জেলায় ১০০ জনের রক্তের পরীক্ষা করলে ১০ জনের মধ্যে মাইক্রো ফাইলেরিয়ার জীবাণু পাওয়া যেত। এখন জেলায় ২০০ জনের মধ্যে এক জনের রক্তে ওই জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে। টানা ওষুধ খাওয়ানোতেই এই সাফল্য। এ বার আড়শা, বাঘমুণ্ডি, বলরামপুর, পুরুলিয়া ১, পুরুলিয়া ২, জয়পুর, হুড়া, কাশীপুর, নিতুড়িয়া, পুঞ্চা ও বান্দোয়ান ব্লক এবং পুরুলিয়া পুরসভা ও আদ্রা রেলশহরকে গণওষুধ সেবন কর্মসূচির মধ্যে রাখা হয়েছে।
স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, রক্তে মাইক্রো ফাইলেরিয়ার জীবাণু ১০-১২ বছর ঘাপটি মেরে থাকার পরে এই রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। পুরুলিয়ার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (২) স্বপন সরকার জানান, গত নভেম্বরে জেলার সমস্ত ব্লক, পুরসভা এবং আদ্রা রেলশহরে রাতে বাসিন্দাদের রক্ত সংগ্রহ করা হয়। কারণ রাতেই রাতেই ফাইলেরিয়ার জীবাণু সক্রিয় হয়। প্রতিটি জায়গায় ৩০০ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেই সমীক্ষা রিপোর্টের ভিত্তিতেই এ বার ওষুধ খাওয়ানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক জানান, এত দিন জেলার যে সব ব্লকে আক্রান্তের হার বেশি, সেখান থেকে চারটি ব্লক এবং অন্য এলাকার চারটি ব্লকে ওই সমীক্ষা হত। সেই সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর জেলায় আক্রান্তের হার ০.৫৮ শতাংশ ছিল। তবে নিতুড়িয়া, পুরুলিয়া ২ ও আড়শা ব্লকে আক্রান্তের হার বেশি। ওই গড় আক্রান্তের তুলনায় বেশি আক্রান্ত ব্লক, পুরুলিয়া পুরসভা ও আদ্রা রেলশহরের বাসিন্দাদের ওষুধ খাওয়ানোর জন্য নির্বাচন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, যে ন’টি ব্লক এবং দু’টি পুরসভাকে ওষুধ খাওয়ানোর তালিকায় বাদ রাখা হয়েছে, সেখানে আগামী মার্চ মাসে ফের রক্ত পরীক্ষা করা হবে। সেখানে আক্রান্তের হার এক শতাংশের বেশি পাওয়া গেলে আগামী অগস্টে ফের ওই সব এলাকায় ওষুধখাওয়ানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy