Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
bankura

Bankura Child Trafficking: দিদিমা আর তার প্রেমিকই কি পাঁচ শিশুর পাচারে জড়িত? অভিযোগ দাদুর

বাঁকুড়া শিশুপাচার কাণ্ড: উদ্ধার হওয়া পাঁচ শিশুর দাদুর বক্তব্য সামনে এসেছে। তার পরেই অভিযোগের তির ঘুরেছে চায়ের দোকানদার স্বপন দত্তর দিকে।

বাঁকুড়া সংশোধনাগারের সামনে রিয়া বাদ্যকরের বাবা রবীন বাদ্যকর

বাঁকুড়া সংশোধনাগারের সামনে রিয়া বাদ্যকরের বাবা রবীন বাদ্যকর নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২১ ২১:০৩
Share: Save:

বাঁকুড়ায় শিশুপাচার-কাণ্ডে শুক্রবারই তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে সিআইডি। আর সেই দিনই উদ্ধার হওয়া পাঁচ শিশুর দাদুর বক্তব্য সামনে এসেছে। তার পরেই অভিযোগের তির ঘুরে গিয়েছে দুর্গাপুর মেনগেট এলাকার চায়ের দোকানদার স্বপন দত্তর দিকে। স্বপন এখন পুলিশ হেফাজতে। ওই শিশুদের দিদা সুনীতা বাদ্যকরের সঙ্গে স্বপন আলোচনা করেই ছক কষেছিল শিশু বিক্রির। দাদু রবীন বাদ্যকর শুক্রবার এমন অভিযোগই করেছেন। স্ত্রী সুনীতা ও তার প্রেমিক স্বপন মারধর করে বাড়ি রবীনকে বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছিল বলেও দাবি করেছেন ওই প্রৌঢ়। তার পর থেকে সুনীতা থাকতেন প্রেমিকের সঙ্গে। তাঁরাই সমস্ত ষড়যন্ত্রের মূলে, এমনটাই রবীনের অভিযোগ।

এই ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ছেলের সঙ্গে দেখা করতে শুক্রবার বাঁকুড়া সংশোধনাগারে এসেছিলেন রবীন। তিনি দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি পার্কের কর্মীদের জন্য রাঁধুনির কাজ করেন। একাই থাকেন সেখানে। শুক্রবার রবীন জানান, ১৯৯৬-তে আসানসোলের হীরাপুর এলাকার বাসিন্দা সুনীতাকে দেখে তাঁর পছন্দ হয়। নিজেই সুনীতার পরিবারের কাছে হাজির হয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে দুর্গাপুরের মেনগেট এলাকায় ভাড়া বাড়িতে ওঠেন রবীন। বছর দুয়েকের মধ্যে রিয়া-সহ দুই সন্তানের জন্ম হয়। সেই সময় থেকেই সুনীতার সঙ্গে স্থানীয় চায়ের দোকানদার স্বপনের ঘনিষ্ঠতা শুরু হয় বলে অভিযোগ রবীনের। স্ত্রীর সঙ্গে স্বপনের এই ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারেননি তিনি। শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। বছর দশেক আগে এক দিন সুনীতা ও স্বপন তাঁকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেয় বলেও অভিযোগ। এর পর থেকে সুনীতা ওই বাড়িতেই স্বপনকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন বলে রবীনের দাবি।

রবীনের দাবি, স্বপনই কয়েক বছরের মধ্যে রিয়ার বিয়ের ব্যবস্থা করে। তার বিয়ে হয় হীরাপুর এলাকার গৌর বাদ্যকরের সঙ্গে। রবীনের কথায়, ‘‘মাত্র ১৪ বছর বয়স রিয়ার তখন। আমি জানতে পেরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। কিন্তু সুনীতা ও স্বপন আমার কথা কানে তোলেনি।’’ রবীনের দাবি, বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে রিয়ার পাঁচ সন্তানের জন্ম। বছরখানেক আগে রহস্যজনক ভাবে মারা যান রিয়ার স্বামী গৌর। রবীনের কথায়, ‘‘গৌর পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে অন্য ভাইদের সঙ্গে বসে মদ্যপান করছিল। সেই সময় ওর এক তুতো ভাইয়ের সঙ্গে বচসা বাধে। সে গৌরের মাথা রাস্তায় ঠুকে দেয়। গুরুতর আহত গৌরকে প্রথমে আসানসোল হাসপাতাল ও পরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। রিয়ার শ্বশুরবাড়ির চাপে সেই সময় অপরাধীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও জানাতে পারিনি। এর পর রিয়া নিজের পাঁচ বাচ্চাকে নিয়ে সুনীতার কাছে এসে থাকতে শুরু করে।’’

গত সাত বছর ধরে সুনীতার সঙ্গে তাঁর তেমন যোগাযোগ না থাকলেও বছরখানেক আগে পর্যন্ত রিয়া ও তার ভাইয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল রবীনের। তাঁর দাবি, ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ অটুট থাকলেও মেয়ের সঙ্গে বছরখানেক আগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। রবীনের কথায়, ‘‘যোগাযোগ ছল না বলে রিয়ার বাচ্চা বিক্রির কোনও কথা আমি জানতাম না। আমার ধারণা, রিয়াকে ভুল বুঝিয়ে সুনীতা ও স্বপনই শিশু বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল। আমি চাই এই ঘটনায় ওদের দু’জনের কঠোর সাজা হোক।’’

শুক্রবার বাঁকুড়া সংশোধনাগারে এসেছিলেন সুনীতার বাবা তপন মণ্ডলও। তিনি বলেন, “সুনীতা নিজের ইচ্ছেতে বিয়ে করায় তার সঙ্গে আমরা কোনও রকম যোগাযোগ রাখতাম না। খবরে দেখে আজ মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। আমার নাতনি হয় রিয়া। ওর পাঁচটি সন্তান হয়েছে বলেও শুনেছিলাম। কিন্তু কেন সেই সন্তানদের বিক্রি করার ফাঁদে পা দিয়েছিল ও তা আমাদের জানা নেই।”

অন্য বিষয়গুলি:

bankura Child Trafficking Child Rights
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE