চাঙড় খসার পরে। সিউড়ির দোকানে। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়
সাতসকালে জেলা সদরের জনবহুল এলাকার ভগ্নপ্রায় দোকানের কার্নিশ ভেঙে মৃত্যু হল এক কিশোরীর। সোমবার সকালে সিউড়ির টিনবাজার এলাকায় ওই ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে সিউড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে বর্ধমানে পাঠানো হয়। পরে তার মৃত্যু হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই ছাত্রী, দিশা ধীবর অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এ দিন সকালে দিশা ও তার ভাই ওই দোকানে কিছু কিনতে এসেছিল। সেই সময় হঠাৎই কার্নিশটি ভেঙে তার উপর পড়ে। আশপাশের দোকানদারেরা এসে তাঁকে উদ্ধার করেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি দোতলা বাড়ির নীচের তলায় পাশাপাশি গ্যাসের সরঞ্জামের ওই দুটি দোকান রয়েছে। দুই ভাই দাউদ শেখ এবং সফি শেখ দোকান দু’টি চালান। পুরসভা সূত্রে খবর, আগে বাড়িটি চারু দাসের নামে মালিকানা ছিল। যদিও পরবর্তী সময়ে ওই দুই ভাই বাড়িটি কিনে নেন। কিন্তু গোটা বাড়িটির অবস্থাই অত্যন্ত বেহাল। যে কোনও মুহূর্তে পুরো বাড়িটিই ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘গ্যাসের সিলিন্ডারে গ্যাস ভরতে যে কোনও সময় আগুন লেগে যেতে পারে। পাশাপাশি অনেক কাপড়ের দোকানও রয়েছে। কোনভাবে আগুন লাগলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাবে।’’ দু’টি দোকানের মালিক দুই ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁরা মুখ খুলতে চাননি।
এ দিন দুপুরে পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য কাজি ফরজুদ্দিন ওই বাড়িটি পরিদর্শন করে আসেন৷ ইতিমধ্যেই দোকানটিকে বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এ ভাবে দোকানের একাংশ ভেঙে পড়ায় দোকানদার এবং পুরসভার ভূমিকায় প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন এলাকার মানুষজন। স্থানীয় ব্যবসায়ী সৌরভ চন্দ্র বলছেন, ‘‘আমি বহুদিন ধরে দেখছি দোকানটি ভগ্নদশায় রয়েছে। পুরসভাকে একধিকবার বলা হয়েছে বাড়িটি ভাঙার জন্য। কেবল এটা নয় সিউড়ি শহরের একাধিক বাড়ি রয়েছে বিপজ্জনক অবস্থায়। সেগুলি নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।’’
এমন বিপজ্জনক বাড়ি বা বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ার ঘটনা সিউড়ি শহরে নতুন নয়। এর আগে গত বছর সিউড়ির বাজারপাড়ায় একটি প্রাচীন বাড়ি ভেঙে পড়ে। সিউড়ি সুপার মার্কেট এলাকাতেও একইভাবে বাড়ি থেকে চাঙড় খসে পড়েছিল। বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি বহুতলের পাঁচিলও ভেঙে পড়েছিল। ওই ঘটনাগুলির পরে পরে কিছুটা তৎপরতা দেখিয়েছিল পুরসভা। তবে তাতে কাজের কাজ কিছু হয়নি বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের।
পুরসভা সূত্রে খবর, সিউড়ি শহরের ২২ থেকে ২৪টি ভগ্নপ্রায় বাড়িকে চিহ্নিত করার কাজ আগেই হয়েছে। সেই তালিকায় টিনবাজারের এই দোকানটিও রয়েছে। সেখানেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শহরবাসী। তাঁদের দাবি, যদি পুরসভার কাছে আগে থেকেই তথ্য ছিল তাহলে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন? এ দিনের ঘটনার পর অবশ্য পুরসভার তরফে ফের ওই বাড়িটিকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য কাজি ফরজুদ্দিনের কথায়, ‘‘বাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় কোভিড পরিস্থিতির জন্য আমরা সেই কাজ আর সম্পূর্ণ করে উঠতে পারি নি। আমরা দ্রুত ওই ধরনের বাড়ির মালিকদের নোটিশ করব ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। অন্যথা পুরসভার পক্ষ থেকে বাড়িগুলি ভেঙে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy