Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Poush Mela

বিদ্যুৎ যেতেই শান্তিনিকেতনের মেলার মাঠে পৌষমেলা করতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যকে চিঠি পরিবেশবিদ সুভাষের

পরিবেশবিদের দাবি, সদ্য প্রাক্তন উপাচার্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পৌষমেলা বন্ধ করে দিয়ে তাঁর ঘাড়ে মেলা বন্ধের দায় চাপিয়েছিলেন। সুভাষ জানান, বিধি মেনে মেলার মাঠে পৌষমেলা হলেই তিনি খুশি হবেন।

File image of Poush Mela in Shantiniketan

কয়েক বছর আগে জমজমাট পৌষমেলার মাঠ। — আনন্দবাজার আর্কাইভ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:১৩
Share: Save:

শান্তিনিকেতনের মেলার মাঠেই পৌষমেলার আয়োজন করার আবেদন জানিয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয়কুমার মল্লিককে চিঠি দিলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। পৌষমেলার বাণিজ্যিকীকরণ রুখতে দিলেন প্রতীকী আর্থিক অনুদানও। তাঁর অভিযোগ, তাঁর কারণেই শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা বন্ধ হয়েছে, এই মিথ্যে রটানো হয়েছিল। প্রসঙ্গত, যে সময়ের কথা পরিবেশবিদ বলছেন, সেই সময় বিশ্বভারতীর উপাচার্যের পদে ছিলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সম্প্রতি তাঁর মেয়াদ শেষ হয়েছে। আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের ভার সামলাচ্ছেন প্রবীণ অধ্যাপক সঞ্জয়। এই প্রেক্ষাপটে মেলার মাঠেই পৌষমেলাকে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়ে চিঠি গেল তাঁর কাছে।

শুক্রবার, বোলপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সুভাষ। সুষ্ঠু ভাবে পৌষমেলা পরিচালনার জন্য তিনি শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনারের সঙ্গেও দেখা করে প্রতীকী আর্থিক সহায়তা বাবদ ১০ হাজার টাকা অনুদান দেন। পাশাপাশি, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপির আকারে একটি চিঠি দিয়েছেন সুভাষ। তাতে চিরাচরিত প্রথা মেনে মেলার মাঠেই পৌষমেলার আয়োজনের আবেদন রেখেছেন পরিবেশবিদ। সে ক্ষেত্রে পরিবেশবিধি বজায় রেখে কী করে মেলা আয়োজন করা যাবে, তা নিয়ে মেলা সংগঠকদের সহায়তা করতেও রাজি সুভাষ।

বিদ্যুৎ বিশ্বভারতীর উপাচার্য থাকাকালীন ২০১৯ সালে শেষ বার পূর্বপল্লি মাঠে হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা। সে বছর পরিবেশ আদালতের দূষণবিধি না মানায় জরিমানা হয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের। এর পর থেকে পৌষমেলাই বন্ধ করে দেন তৎকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ। গত ৮ নভেম্বর উপাচার্য হিসাবে তাঁর মেয়াদ শেষ হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে আপাতত দায়িত্বে সঞ্জয়কুমার মল্লিক। মেলা করার বিষয়ে তিনিও ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন বলে বিশ্বভারতী সূত্রে খবর।

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘ঐতিহ্যশালী পৌষমেলাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সে সময় উনি (প্রাক্তন উপাচার্য) দোষ দিলেন এনজিটির (পরিবেশ আদালত বা ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার বলে। আর পরোক্ষে আমাকে অনেক গালমন্দ করলেন। এটা ঠিক নয়। পৌষমেলা আদালত বন্ধ করেনি এবং পৌষমেলার বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ ছিল না। শুধু কয়েকটি পরিবেশবিধি মানা হয়নি, সেটা নিয়ে আমি আদালতে গিয়েছিলাম। আজ বিশ্বভারতী রাহুমুক্ত হয়েছে, তেমন আমিও কলঙ্কমুক্ত হতে এসেছি। আমি জনগণকে জানাতে চাই, আমি কখনওই মেলার বিরুদ্ধে ছিলাম না। বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে যে স্মারকলিপি দিয়েছি তাতে উল্লেখ করেছি যে, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং আদালত যে কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছিল, তারা পথনির্দেশিকাটি করে দিতে পারবে। যাতে বিধি মেনে মেলা হয়। আমি চাই, মেলার মাঠেই মেলা হোক। কারণ, স্থানমাহাত্ম্য বলে একটা ব্যাপার আছে। মেলা-বিরোধী আমি নই, কিন্তু আমাকে সে ভাবেই সাজানো হয়েছিল। মেলা হোক— শুধু এই দাবি জানানোই নয়, আমার সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে প্রতীকী ভাবে ১০ হাজার টাকা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টকে অনুদান দিয়েছি। এটা সবারই করা উচিত। যাতে মেলাটার সম্পূর্ণ বাণিজ্যিকীকরণ না হয়ে যায়। যদি ২৩ তারিখ প্রতীকী মেলাও হয় তা হলে ২৪ ডিসেম্বর এখানে এসে তা উদ্‌যাপন করব। মেলার মাঠে বুক পেতে দিয়ে আলিঙ্গন করব।’’

পৌষমেলায় মাত্রাছাড়া দূষণের অভিযোগে ২০১৬ সালে পরিবেশ আদালতে মামলা করেছিলেন সুভাষ। মেলায় কাঠ বা কয়লার উনুন জ্বালানো যাবে না, প্লাস্টিক বর্জন করা, পর্যাপ্ত ডাস্টবিন রাখা, ধুলো ওড়া রুখতে জল ছেটানোর ব্যবস্থা-সহ একাধিক দূষণ বিধি পালনের নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। সেই মতো চলছিল মেলা। কিন্তু, ২০১৯ সালে শেষ বার পূর্বপল্লির মেলার মাঠে হয়েছিল পৌষমেলা। তার পর থেকেই তা বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় বিশ্বভারতীর উপাচার্য ছিলেন বিদ্যুৎই।

অন্য বিষয়গুলি:

Poush Mela Subhas Datta Environment National Green Tribunal Shantiniketan Bidyut Chakraborty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy