ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র ঘোষণার পরে থেকে সকলের কাছে অন্য মাত্রা পেয়েছে রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। এই ক্ষেত্রের স্থাপত্য ভাস্কর্যের অন্যতম নিদর্শন বিশ্বভারতীর কলাভবন। সেই কলাভবনের ঐতিহ্যবাহী ‘কালো বাড়ি’ সংস্কারের কাজ বর্ষার আগেই এ বার শেষ হতে চলেছে।
শিল্পী নন্দলাল বসু, রামকিঙ্কর বেইজ প্রমুখের মূল্যবান স্থাপত্য ভাস্কর্যের কাজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে কলাভবনে। তেমনই ১৯৩৪ সালে মাটির উপর আলকাতরার প্রলেপ ও অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি হয় কলাভবনের কালো বাড়ি। এই বাড়িটি তৎকালীন সময়ে ছাত্রাবাস হিসেবে ব্যবহার হত। মূলত স্নাতকোত্তরের ছাত্রেরাই এই বাড়িতে আবাসিক হিসেবে থাকার সুযোগ পেতেন।
বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই বাড়ি কালের নিয়মে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব সেই বাড়ির বিভিন্ন অংশে ফাটল ধরিয়েছে, ভাস্কর্য খসে পড়তে শুরু করেছে। কলাভবনের গান্ধী মূর্তি-সহ কয়েকটি ভাস্কর্য জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে ছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
শান্তিনিকেতন বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রের স্বীকৃতি পাওয়ার পরে সমস্ত মূল্যবান ভাস্কর্য সংস্কারের দাবি জানান সকলেই। এতদিন সেগুলি সংস্কার না হওয়ার পিছন প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকেও দায়ী করেছেন অনেকে। যদিও নানা টালবাহানার মধ্যেই ২০২৩ সালের শেষের দিকে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ বাড়িটি সংস্কারের কাজ শুরু করে। তাদের তত্ত্বাবধানে সেই কাজে হাত লাগান বিশ্বভারতীর অধ্যাপক ও পড়ুয়ারাও। জোরকদমে শুরু হয় বাড়তি সংস্কারের কাজ।
বিশ্বভারতী সূত্রের খবর, চলতি বছরে বর্ষার আগেই কালো বাড়ি সংস্কারের কাজ শেষ করা হবে বলে আশ্বাস মিলেছে। কলাভবনের অধ্যক্ষ শিশির সাহানা বলেন, “এগুলি ঐতিহ্যবাহী দেওয়ালের গায়ের ভাস্কর্য যা রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কারণ এগুলি থেকেই আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা আগামী দিনে অনেক কিছু শিখবেন। প্রায় দু’বছর আগে কালো বাড়ির সংস্কার শুরু হয়, আশা করছি এ বছর বর্ষার আগেই কাজ শেষ করে ফেলতে পারব।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)