রঘুনাথজিউ মন্দিরের সামনে মঙ্গলবার। ছবি: শুভ্র মিত্র
করোনার প্রভাবে এ বার বিষ্ণুপুর শহর ঘোরা হল না রাবণকাটা নৃত্যদলের শিল্পীদের। সবাইকে মাস্ক পরার বার্তা দিয়ে নিজেরা মুখোশ পরে দশমীর রাতে ‘কুম্ভকর্ণ বধ’, একাদশীতে ‘ইন্দ্রজিৎ বধ’ নৃত্যের মাধ্যমে উপস্থাপন করলেন শিল্পীরা। আজ, বুধবার ‘রাবণ বধ’ দেখাবেন বিষ্ণুপুরের বাবুরপাড়া, রঘুনাথজিউ মন্দিরের সামনে।
দুর্গা পুজো শেষে দশমী থেকে দ্বাদশী— শহরের বিভিন্ন পাড়ায় দুপুর হলেই ঘুরে বেড়ান বিভীষণ, জাম্বুবান, হনুমান, সুগ্রীবেরা। কাড়া-নাকড়া প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রের শব্দে বাসিন্দারা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। শিশুরা মায়ের আঁচল ধরে সেই নাচ দেখে। বহু প্রাচীন সেই প্রথায় এ বার ছেদ পড়েছে। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনা-সতর্কতার বিধি। খুশি হয়ে গৃহস্থেরা তাঁদের টাকা দিতেন। পাড়া ঘোরা বন্ধ হওয়ায় উপার্জনও বন্ধ শিল্পীদের। রাবণকাটা নৃত্য শিল্পীরা বলেন, ‘‘এখন লোকশিল্পী হিসেবে নিয়মিত ভাতা পাওয়া যায়। অনুষ্ঠানও থাকে বছরের বিভিন্ন সময়ে। সরকারি নির্দেশে অতিমারির সময়ে তাই পাড়ায়-পাড়ায় ঘুরছি না।’’
জাম্বুবান সাজেন নারায়ণ বারিক, বিভীষণ সাজেন রঞ্জিত গড়াই, হনুমান সাজেন সুকুমার অধিকারী। তাঁরা বলেন, ‘‘আমাদের কেউ আইসক্রিম বিক্রি করেন, কেউ রাজমিস্ত্রির কাজ করেন, কেউ বা আনাজ বিক্রি করেন। অতিমারিতে রুজিতে টান পড়েছে। রেশন আর লোকশিল্পীর মাসিক ভাতায় সংসার চলছে। এ বার পাড়ায়-পাড়ায় নাচ দেখাতে যেতে পারলাম না বলে দুঃখ হচ্ছে। তবে করোনা বিদায় নিক। সামনের বছর দ্বিগুণ আনন্দে ঘুরব।’’ বিষ্ণুপুরে দুর্গাপুজা দেখতে আসা কলকাতার ঢাকুরিয়ার বাসিন্দা সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ দিন সকালে রঘুনাথ জিউ মন্দিরে গিয়ে রাবণকাটা লোকনৃত্য দেখে মন ভরে গেল।’’
মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক (বিষ্ণুপুর) রামশঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘লোকশিল্পীদের সামাজিক দায়িত্ববোধের কথা শুনে ভাল লাগছে। সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরার সচেতনতা প্রচারে রাবণকাটা নাচের দলকে কাজে লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy