হেলমেট ছাড়া বাইক চালক দেখলেই গদা হাতে তেড়ে যাচ্ছেন যমরাজ। চালকের দিকে গোল গোল চোখ করে হেলমেট পরার নির্দেশ দিচ্ছেন। শুক্রবার, বিষ্ণুপুর রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে এমনই কাণ্ড দেখা গেল। তবে এই ‘যমরাজ’ হলেন বিষ্ণুপুর রঘুনাথসায়রের বাসিন্দা কৃষ্ণচন্দ্র লোহার। সাজ-পোশাকে তাকে দেখে যমরাজ ভেবে ভুল হতেই পারে। আসলে অসচেতন চালকদের সতর্ক করতেই তাঁর এমন উদ্যোগ। তিনি বলেন, “করোনার সময় মাস্ক ছাড়া কেই বাইরে বার হলেই গদা হাতে তাঁদের বাড়ি পাঠিয়ে দিতাম। এখন হেলমেট ছাড়া বা দ্রুত গতিতে বাইক চালালে সতর্ক করছি।”
কৃষ্ণচন্দ্রের কাণ্ডে পথ নিরাপত্তার বার্তা দিতে খানিকটা সুবিধা হয়েছে জেলা পুলিশেরও। শুক্রবার দেখা গেল, কিছু বাইক চালকদের মাথায় হেলমেট পরিয়ে
দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। হেলমেট ছাড়া বাইক চালালে জরিমানাও করা হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “বিষ্ণুপুরে
প্রতিদিন ৫০-এর বেশি চালকের জরিমানা করা হচ্ছে।”
গত এক সপ্তাহ ধরেই বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন ও বিষ্ণুপুর মহকুমা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের সহায়তায় পালিত হচ্ছে জাতীয় পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ। সেই উপলক্ষে এ দিন বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডে ছিলেন বাঁকুড়া জেলা পরিবহণ অধিকর্তা ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (অপারেশন) মাকসুদ হাসান, ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণকান্ত মণ্ডল, এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) সুপ্রকাশ দাস প্রমুখ।
পরিবহণ অধিকর্তা বলেন, “বাঁকুড়া জেলা জুড়েই চলছে পথ নিরাপত্তা সপ্তাহ। শেষদিনে বিষ্ণুপুরে যমরাজের সাহায্যে আমরা হেলমেটহীন চালকদের সতর্ক করলাম। ২০২৪ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী বলা যেতে পারে জেলায় দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে তবে মৃত্যুর সংখ্যা কমেনি। রাস্তাঘাট উন্নত হওয়ায় যানবাহনের গতি বেড়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছতে নিযুক্ত হয়েছেন পথবন্ধু। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন আরও সক্রিয় ভূমিকা নেবে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)