ঝোড়ো হাওয়া, বৃষ্টিতে ধানখেতের অবস্থা এমনই। মহম্মদবাজারে।
কেউ ধান কেটে মাঠে শুকোতে দিয়েছিলেন। আবার কেউ ধান কাটার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সেই পাকা ধানে কার্যত মই দিয়েছে অকাল বৃষ্টি। বহু চাষির কাটা ধান মাঠে ভাসছে। কারওবা জমিতে নুইয়ে পড়ছে ধান। বেশির ভাগ ধানে অঙ্কুর বেরোতে শুরু করেছে।
কৃষি দফতর এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারে জেলায় বর্ষা মরসুমে ৩ লক্ষ ৭ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে চার হাজার হেক্টর আউশ ধান চাষ হয়েছিল। বাকিটা আমন। কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আউশ ধান চাষিদের ঘরে উঠে যাওয়ার কথা। এবারে এখনও ৫০ শতাংশ ধান মাঠে রয়ে গিয়েছে। বৃষ্টির কারণেই নির্ধারিত সময়ে চাষিরা ধান ঘরে তুলতে পারেননি বলে কৃষি দফতরের মত। এই পরিস্থিতিতে ধান নিয়ে চাষিরা মহা বিপাকে।
নানুরের থুপসড়ার দিলীপ মাঝি, লালু মণ্ডলরা বিঘে খানেক করে জমির আউশ কেটে জমিতে শুকোতে দিয়েছিলেন। সেই ধান এখন জলে ভাসছে। তাঁরা জানান, ধান ছেঁকে তুলে নিয়ে রাস্তায় মেলে দিচ্ছেন। সেই খাটাখাটুনিও সার হচ্ছে। কেননা খড়ও হয়তো কাজে লাগবে না। আবার ধানেও অঙ্কুর বেরিয়ে গিয়েছে। একই আক্ষেপ ময়ূরেশ্বরের ঢেকার সুকান্ত মণ্ডল, লক্ষ্মণ বাগদিদেরও। তাঁরা জানান, জমির ধান পেকে এসেছিল। ২/৩ দিনের মধ্যেই কেটে ঘরে তুলতেন। কিন্তু, বৃষ্টিতে পাকা ধান জমিতে শুয়ে পড়েছে। বেশির ভাগ ধান শিস থেকে ঝড়ে গিয়েছে। ঘরে তোলার খরচ উঠবে কিনা তা নিয়েও নিশ্চিত নন তিনি।
আগাম আলুর চাষও মার খাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ বারে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কৃষি দফতর। তার মধ্যে ময়ূরেশ্বর ২ ব্লক, লাভপুর, বোলপুর, ইলামবাজার প্রভৃতি এলাকায় বহু জমিতে আগাম চাষ হয়ে থাকে। কোথাও কোথাও ওই সব জমিতে দু’বারও আলু চাষ হয়। এ বারে সেই চাষ মার খেতে পারে বলে কৃষি দফতরের আশঙ্কা। সাধারণত ১৫ অক্টোবর থেকে মাসখানেকের মধ্যে আগাম আলুর চাষ হয়ে থাকে। তার আগে চাষিদের জমি তৈরি করে নিতে হয়। এবারে বাদ সেধেছে বৃষ্টি। কেউ কেউ জমি তৈরি করতে পারেননি। আবার কারও তৈরি করা জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
বিঘে প্রতি ২০০০/৩০০০ টাকা খরচ করে বিঘে তিনেক করে জমি আলু চাষের জন্য তৈরি করেছিলেন সাঁইথিয়ার কাঁতুরির অনাথ মণ্ডল, লাভপুরের শাসপুরের আহাদ শেখরা। তাঁরা জানান, চাষের খরচ জলে গিয়েছে। এখন আবার জমি তৈরি করতে করতেই আগাম চাষের সময় পেরিয়ে যাবে। জেলা সহকারী কৃষি (তথ্য) অধিকর্তা অমর মণ্ডল বলেন, ‘‘ক্ষয়ক্ষতির হিসেব এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে অকাল বর্ষণে কিছু এলাকায় আউশ ধানের ক্ষতি হয়েছে। আগাম আলু চাষও মার খেতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy