সিউড়ির চৈতালি মোড়ে বিজেপির অবস্থান কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র।
প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুকথা বলে শুক্রবার বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিজেপি নেতা কালোসোনা মণ্ডল। শনিবার দলের অবস্থান মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো উৎখাতের ডাক দিয়ে ফের বিতর্কে বিজেপি নেতাদের একাংশ।
আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আগামী মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে 'পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ' নামে একটি সংগঠন। সমাজমাধ্যমে সেই অভিযানে শামিল হওয়ার ডাক দিয়ে প্রচারও চলছে। সেই সূত্রেই শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলে দলের নেতাদের দেওয়া এমন স্লোগানে বিব্রত জেলা বিজেপি। দলের বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা এই বক্তব্য দলের অবস্থান নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘সাধারণ মানুষ চাইলে রাজ্য সরকারকে উৎখাতের ডাক দিতেই পারেন। কিন্তু, এই অবস্থান দলের নয়।’’ বিজেপির এই বক্তব্যের মধ্য দিয়েই তাদের আন্দোলনের অভিমুখ স্পষ্ট হয়ে উঠছে বলে দাবি তৃণমূলের।
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিজেপির ঘোষিত থানা ঘেরাও ও অবস্থান-বিক্ষোভের কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে শুক্রবারের মতো এ দিনও সিউড়িতে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে বিক্ষোভ দেখান জেলা বিজেপির নেতা ও কর্মীরা৷ এ দিন অবস্থান মঞ্চের সস্মনে চেয়ারে কিছু পুতুল সাজিয়ে সেখানে লেখা হয়, ‘পশ্চিমবঙ্গের শাসনব্যবস্থার অকাল প্রয়াণে আমরা শোকাহত।’ বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিউড়ির এক যুবনেতা এবং রামপুরহাট মহকুমার একাধিক বিজেপি নেতা দাবি করেন, ২৭ অগস্ট নবান্ন অভিযানকে এমন আন্দোলনে পরিণত করতে হবে, যাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও শেখ হাসিনার মতো ‘পালিয়ে যেতে’ বাধ্য করা যায়। বিজেপির রাজ্য নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছাত্র-যুবদের উদ্দেশে বলছি, যাঁরা ২৭ তারিখ নবান্ন অভিযানের সঙ্কল্প নিয়েছেন, তাঁদের নবান্নের দখল নিতে হবে।
নবান্নের ১৪ তলা থেকে গঙ্গাকে একটা ছোট ডোবার মতো দেখতে লাগে। রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীকে সেই ডোবায় ছুড়ে ফেলতে হবে!’’
গত কয়েক দিন ধরে তৃণমূলের একাধিক নেতা অভিযোগ করেছেন, আর জি করের ঘটনাকে সামনে রেখে বিজেপি-সহ বিরোধীরা সরকার বদলের ‘ষড়যন্ত্র’ করছে। ঘটনাচক্রে স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীও বলেছিলেন, ‘‘অনেকে ভাবছেন, বাংলাদেশের মতো এখানেও সরকার ফেলে দেবেন। আমি ক্ষমতায় মায়া করি না।’’
এ দিন বিজেপি নেতাদের বক্তব্য জেনে জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই দোষীদের চরম শাস্তির পক্ষে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সাত দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে দোষীদের ফাঁসির ব্যবস্থা হবে। কিন্তু তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে যাওয়ার পর কী হচ্ছে, তা সবাই দেখছেন৷’’ বিকাশের দাবি, তদন্তকে দীর্ঘ করে বিজেপিকে ‘রাজনৈতিক সুবিধা’ পাইয়ে দিতে চাইছে সিবিআই। আর মানুষের প্রতিবাদকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে বিজেপি। তাঁর সংযোজন, “মানুষই বিজেপির ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না।”
বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, “যাঁরা এই বিষয়ে কথা বলছেন, সেটা তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত। এই বক্তব্যে দলের কোনও সমর্থন নেই। আমরা গণতান্ত্রিক দল। বর্তমান শাসক
দলের যা কার্যকলাপ, তাতে সাধারণ মানুষই তাদের গদিচ্যুত করবে। আমরা দলগতভাবে তেমন কোনও
ডাক দিচ্ছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy