সানিয়া বিবি। নিজস্ব চিত্র ।
দুয়ারে সরকারের শিবিরে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার পরে মঙ্গলবার মুরারই ১ ব্লকের চাতরা পঞ্চায়েতের শিবির সরেজমিনে দেখলেন জেলাশাসক বিধান রায়। কথা বললেন আধিকারিক ও কর্মীদের সঙ্গে। সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যার কথাও শোনেন তিনি। সমাধানের আশ্বাস দেন।
সোমবার শিবিরের প্রথম দিনেই মুরারইয়ে ঠেলাঠেলিতে পদপিষ্ট হয়ে আহত হন পাঁচ মহিলা। চারজনের চিকিৎসা করে রাতের দিকে ছেড়ে দেওয়া হলেও একজন মহিলার আঘাত গুরুতর হওয়ায় তিনি মঙ্গলবারও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আহত ওই মহিলা সানিয়া বিবির ক্ষোভ, ‘‘প্রশাসনের কোনও আধিকারিক খোঁজ পর্যন্ত নিতে আসেননি। ওষুধ কেনার টাকা নেই। প্রতিবেশীর কাছে টাকা নিয়ে ওষুধ কিনতে হচ্ছে।’’
সোমবারের আতঙ্ক এ দিনও কাটেনি আহত সানিয়া বিবির। তিনি বলেন, ‘‘মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরে অনেকেই আমার উপর দিয়ে চলে যায়। আমি ঘটনাস্থলে অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরলে দেখি হাসপাতালে আছি। ডান দিকের পায়ে এখনও প্রচণ্ড ব্যথা। পায়ে অনেকটাই কেটে গিয়েছে। বুকে ও পিঠের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছি।’’ তাঁর ক্ষোভ, ‘‘চিকিৎসক এক্স-রে করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে তাও করতে পারছি না।’’
জেলাশাসক বলেন, ‘‘ঘটনাটি জানতে পেরে বিডিওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাসপাতালে গিয়ে আহত মহিলার খোঁজ নিতে। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সরকারি সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতেও বলা হয়েছে।’’ এ দিন শিবিরে এসে নানা প্রকল্পে এই দু’দিনে কত জন আবেদন করলেন এবং জমা নেওয়া ফর্ম ঠিক আছে কি না সেই বিষয়গুলি নিজে দেখেন জেলাশাসক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবিরের আগে গ্রামে গুজব ছড়ায় যাঁরা প্রথমে ফর্ম তুলে জমা দেবেন তাঁদের সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রকল্পের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে। সেই জন্য মহিলারা ভোর থেকে ভিড় জমান। লাইনে দাঁড়ানো মহিলাদের অভিযোগ, প্রশাসন যদি সকাল থেকেই বিদ্যালয়ের গেট খুলে দিত তাহলে পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটত না।
শিবিরে আসা মহিলারা অনেকেই জানান, মুরারই পঞ্চায়েত এলাকার অনেকেই দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। সংসারে অনটন তাঁদের নিত্যসঙ্গী। মাসে পাঁচশো ও হাজার টাকা তাঁদের জন্য অনেক। সেই জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্ম তোলা ও জমা দেওয়ার জন্য সকলেই চেষ্টা করেছেন। তবে আগের দিনের ঘটনার পরে এ দিন তৎপর ছিল প্রশাসন। ওই স্কুল, চাতরা গণেশলাল উচ্চ-বিদ্যালয়ে এ দিন কোনও সমস্যা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy