Advertisement
E-Paper

প্রসূতির দেহের আবার ময়নাতদন্ত, অভিযুক্ত সাংসদ-পুত্র

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারীর পক্ষ থেকে মৃতার দেহ ফের ময়না-তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। তার প্রেক্ষিতেই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাঁকুড়া আদালত থেকে মৃতার দেহ ফের ময়না-তদন্তের জন্য জরুরি অনুমতি নেওয়া হয় বুধবার।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪ ০৯:৪০
Share
Save

বিদায়ী সাংসদের নার্সিংহোমে চিকিৎসায় গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ ওঠা প্রসূতির দেহের ফের ময়না-তদন্ত হল বাঁকুড়া মেডিক্যালে। ওই প্রসূতির অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে থাকা শল্য চিকিৎসক তথা সাংসদ-পুত্র সোমরাজ সরকারের বিরুদ্ধে বাঁকুড়া সদর থানায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করলেন মৃতার স্বামী। যদিও ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ গাফিলতির অভিযোগ মানেননি। তাঁদের দাবি, চিকিৎসার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হয়েছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগকারীর পক্ষ থেকে মৃতার দেহ ফের ময়না-তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। তার প্রেক্ষিতেই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাঁকুড়া আদালত থেকে মৃতার দেহ ফের ময়না-তদন্তের জন্য জরুরি অনুমতি নেওয়া হয় বুধবার। এ দিন বাঁকুড়া মেডিক্যালে ময়না-তদন্ত করা হয়।

মৃতা প্রসূতি মৌসুমী দে (২৬) বাঁকুড়ার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়ার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার তাঁকে গর্ভবতী অবস্থায় বাঁকুড়া সদর থানা লাগোয়া একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করে অস্ত্রোপচার করা হয়। ওই নার্সিংহোমের অন্যতম কর্ণধার বাঁকুড়ার বিদায়ী সাংসদ তথা এ বারের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার।

নার্সিংহোম সূত্রের খবর, সেখানে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন মৌসুমী। মৃতার পরিবার ও নার্সিংহোম সূত্রে খবর, অস্ত্রোপচারের পর রাতেই মৌসুমীর শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাঁর রক্তে শর্করার মাত্রার ব্যাপক পতন ঘটে। রাতেই তাঁকে নার্সিংহোমের আইসিইউ-তে রেখে চিকিৎসা করানো হয়।

ধীরে ধীরে মৌসুমীর অবস্থার উন্নতি হলেও পরের দিন সকালে ফের তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুক্রবার মৌসুমীকে দুর্গাপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তাঁর ফের অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার গভীর রাতে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

সোমবার নানা কারণে তাঁর দেহের ময়না-তদন্ত করানো যায়নি। মঙ্গলবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে মৌসুমির দেহের ময়না-তদন্ত করিয়ে বিকেলে বাঁকুড়ায় নিয়ে এসে নার্সিংহোমের সামনে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানো হয়।

বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের বাঁকুড়ার পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার, উপপুরপ্রধান হিরন চট্টরাজ-সহ শহর তৃণমূল নেতৃত্ব। নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল ও চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।

বাঁকুড়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তী মৃতার দেহ বাঁকুড়া মেডিক্যালে ফের ময়না-তদন্তের দাবিও তোলেন।

বুধবার মৃতার স্বামী তন্ময় দে বলেন, ‘‘স্ত্রীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ তদন্ত করে দোষীকে শাস্তি দেওয়া হোক। আসানসোল হাসপাতালে হওয়া ময়না-তদন্তের প্রতি ভরসা হচ্ছিল না। তাই বাঁকুড়ায় ফের ময়না-তদন্ত করার দাবি তুলেছিলাম।’’

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘মৃতার পরিবারের দাবির ভিত্তিতেই আদালতে দ্বিতীয়বার ময়না-তদন্তের অনুমতি নেওয়া হয়। ওই প্রসূতির মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতি রয়েছে কি না জেলা স্বাস্থ্য দফতর তা তদন্ত করছে।’’

বাঁকুড়ার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, ‘‘পুলিশের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েই দ্রুত একটি তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। তদন্তকারী দল চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য খুঁটিয়ে দেখা শুরু করেছে।’’

এদিকে ওই বধূ মৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূল রাজনীতি জড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন সুভাষ। সাংসদের-পুত্র তথা প্রসূতির চিকিৎসক সোমরাজ বলেন, ‘‘শরীরে রক্ত জমাট না বাঁধার বিরল রোগে আক্রান্ত ছিলেন ওই প্রসূতি। চিকিৎসায় কোনওরকম গাফিলতি হয়নি। তদন্ত হলেই সেটা পরিষ্কার হবে।তদন্তে সব রকম সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Pregnancy bankura

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}