এইভাবে ময়ূরাক্ষী থেকে বালি পাচার চলছে ময়ূরেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র।
নানুরের পরে এ বার ময়ূরেশ্বরেও বালি পাচারের অভিযোগ উঠল। রাতের অন্ধকারে নদীর নীচ থেকে পাইপের মাধ্যমে পাম্পের সাহায্য বালি তুলে অবাধে পাচার করা হচ্ছে বলে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, এর ফলে বিপুল পরিমাণ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। শাসকদলের কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য ওই অভিযোগ মানেননি।
কয়েক দিন আগে নানুরের থুপসড়া পঞ্চায়েত এলাকায় পুলিশ-প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মীর যোগসাজশে অজয় নদ থেকে বালি পাচারের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের কয়েক জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ বার একই অভিযোগ উঠেছে ময়ূরেশ্বরে। ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের ভাবঘাটি, আকনা এবং আকোলপুর মৌজায় অন্তত পাঁচটি জায়গায় নৌকার উপরে যন্ত্র বসিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে ময়ূরাক্ষী নদীর ১৫০ থেকে ১৭০ ফুট গভীর থেকে বালি তুলে দেদার পাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। দিনের পর দিন এই কারবার চললেও পুলিশ ও প্রশাসন উদাসীন বলেও অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা।
ব্লক ভূমি এবং ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় ভাবঘাটি মৌজায় একটি মাত্র বৈধ বালির ঘাট রয়েছে। কিন্তু, পাম্পের সাহায্যে বালি তোলা সম্পূর্ণ আইন বিরুদ্ধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ , আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ওই ভাবেই বালি পাচার চলছে। বালি পাচারের সঙ্গে স্থানীয় কুন্ডলা পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্যার স্বামী, তৃণমূলের ব্লক কমিটির এক সদস্য এবং আরও কয়েক জন নেতাকর্মী জড়িত রয়েছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে ব্লক ভূমি সংস্কার আধিকারিকের (বিএলএলআরও) কাছে এই মর্মে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। বিএলএলআরও আশিকউদ্দিন খান বলেন, ‘‘ওই অভিযোগ তদন্ত করে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হবে। পুলিশ-প্রশাসনের কেউ জড়িত থাকলেও খতিয়ে দেখা হবে।’’
অবৈধ ভাবে নদীগর্ভ থেকে যন্ত্রের সাহায্যে বালি পাচারের অভিযোগ অবশ্য বীরভূমে নতুন নয়। অজয় নদ ও ময়ূরাক্ষী নদীর পাশে রয়েছে বহু গ্রাম। ওই ভাবে বালি তুলে নেওয়ার জন্য ধস নামার আশঙ্কায় গ্রামবাসীরা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে পথ অবরোধ করে বহুবার বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ময়ূরাক্ষী থেকে বালি তোলার প্রতিবাদে বিজেপির পক্ষ থেকেও স্থানীয় তালতলা থেকে কোটাসুর পর্যন্ত পদযাত্রা এবং পথ অবরোধ হয়েছে। তার পরেও বালি পাচার বন্ধ হয়নি বলে অভিযোগ। বিজেপির স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য সহসভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের দাবি, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মীর যোগসাজশে শাসকদলের নেতারা নদীগর্ভ থেকে বালি তুলে অবাধে পাচার করে চলেছেন। এক দিন হয়তো ধস নেমে বহু গ্রাম নদীগর্ভে ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আর তার মাসুল গুণতে হবে সাধারণ মানুষকে।’’
ওই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ময়ূরেশ্বর ২ ব্লক সভাপতি প্রমোদ রায় বলেন, ‘‘আমাদের কেউ বালি পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে জানা নেই। থাকলে খোঁজ নিয়ে দলগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশও আইনমাফিক ব্যবস্থা নিতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy