Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
শাসককে কটাক্ষ বিরোধী দলের
Pradhan Mantri Awas Yojana

আবাসে নয় ‘কাটমানি’, বার্তা তৃণমূলে

কেন্দ্রীয় সরকার সরকারি আবাস যোজনা (গ্রামীণ) খাতে দীর্ঘদিন ধরে টাকা না-দেওয়ায় মঙ্গলবার রাজ্য সরকার সেই খাতে আবাস প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েছে।

অনুব্রত মন্ডল।

অনুব্রত মন্ডল। —ফাইল চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৩
Share: Save:

শাসকদলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে সরকারি আবাস প্রাপকদের থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ অতীতে উঠেছে বহুবার। জেলযাত্রার আগে দলের বিভিন্ন বৈঠকে এই নিয়ে হুঁশিয়ারি দিতে দেখা গিয়েছে জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। এ বার যাতে তেমন পরিস্থিতি না হয়, সে জন্য সচেষ্ট তৃণমূল নেতৃত্ব। লিখিত ভাবে না-হলেও বৈঠক করে, ওয়টস্যাপ বার্তায় সে-কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের বলেই দল সূত্রের খবর।

কেন্দ্রীয় সরকার সরকারি আবাস যোজনা (গ্রামীণ) খাতে দীর্ঘদিন ধরে টাকা না-দেওয়ায় মঙ্গলবার রাজ্য সরকার সেই খাতে আবাস প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েছে। সেই তালিকায় বীরভূমের ৫২ হাজার ৮৮৫ জন উপভোক্তা আছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মঙ্গল ও বুধবার তাঁদের অনেকের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। আরও দুই বা তিন দিনের মধ্যে বাকিদের অ্যাকাউন্টে টাকা চলে আসার কথা। সেই সব উপভোক্তার থেকে যাতে কোনও ভাবেই ‘কাটমানি’ নেওয়ার অভিযোগ না-ওঠে, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

রাজনগর ব্লক তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে ব্লক সভাপতি ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নেতাদের ডেকে বলে দিয়েছেন, আবাস প্রাপকদের থেকে এমন কোনও অভিযোগ যেন সামনে না-আসে। অভিযোগ এলে সংশ্লিষ্ট নেতা বা কর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে। তৃণমূলের দুবরাজপুর ব্লক কোর কমিটির সদস্য তথা দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্য বলেন, ‘‘আবাস নিয়ে যাতে কোনও দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা বা উপভোক্তার থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ না-ওঠে, সেটা দলের বিভিন্ন গ্রুপে ওয়টস্যাপ বার্তা পাঠানো হয়েছে। তার পরেও দলের কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে পুলিশে জানানো হবে।’’

ঠিক একই কথা বলেছেন সিউড়ি ১ ব্লকের এক অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি। মহম্মদবাজার ব্লক তৃণমূলের এক নেতাও মানছেন, কাটমানি ও দুর্নীতি নিয়ে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। খয়রাশোলের ব্লক কোর কমিটির এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা উপভোক্তাদের সচেতন করার জন্য মাইকিং করানোর কথা ভেবেছি। বাংলার বাড়ি প্রাপকের অ্যাকাউন্টে যে টাকা দিদির সরকার দিয়েছে, সেই টাকা উপভোক্তারই। কেউ টাকা চাইলে গ্রাম পঞ্চায়েতকে জানানোর জন্য প্রচার করার ভাবনা রয়েছে।’’

শাসকদলের এমন উদ্যোগকেই বিঁধেছেন বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘এই উদ্যোগ থেকেই স্পষ্ট, এত দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্যি। তৃণমূল দলটা করার মূল উদ্দেশ্য, বিভিন্ন পথে রোজগার। সেটা আটকাতে পারবে না-জেনেই দায় এড়ানোর চেষ্টা ওদের নেতাদের।’’ দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহার বক্তব্য, ‘‘দুর্নীতির প্রশ্নেই আবাসে টাকা দেওয়া বন্ধ করেছে কেন্দ্র। ফের দুর্নীতি হতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই শাসকদল এমন পদক্ষেপ করছে। তাতেও স্বচ্ছতা থাকবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। এটা অনেকটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো।’’

তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর অবশ্য দাবি, ‘‘কে কোথায় কী করছেন, বলতে পারব না। দলের তরফে এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।“ তবে, আবাস নিয়ে কোনও অভিযোগ উঠলে সেটা দেখা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Awas Yojana Anubrata Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy