আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল। —নিজস্ব চিত্র।
এক দিকে আশ্বাস দিলেও শাসকদলের জেলা সভাপতি তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেন না। উল্টো দিকে, তাঁদের পাশে এসে দাঁড়াল কংগ্রেস নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই তাঁদের আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানিয়েছ বামেরা। যত দিন যাচ্ছে, শিবপুরের জমি আন্দোলনকে ঘিরে এ ভাবেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে বিরোধীরা।
সব কিছু ঠিক থাকলে শনিবার এলাকায় গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় বসবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সেখানেই ঠিক হবে আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা। বুধবার শিবপুর মৌজায় গিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে এ কথা জানালেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি। তিনি বলেন, “আন্দোলনকারী ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাননি। যার জন্য জমি অধিগৃহীত হয়েছিল, সেই শিল্পও এখানে হচ্ছে না। তাই দলের প্রদেশ সভাপতির নির্দেশে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করলাম। শনিবার অধীরবাবু এলাকায় এসে আন্দোলনকারী জমিমালিক, চাষি, খেতমজুর ও বর্গাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।”
শিল্প, কর্মসংস্থান ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষিত গীতবিতান থিমসিটি, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প এলাকায় ঢুকে বিভিন্ন অংশে নির্মীয়মাণ প্রাচীর ভাঙা, টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নি সংযোগ করে আন্দোলনকারীরা। আর তার পরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকার পরিস্থিতি। নিরাপত্তার অভাবে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে দেন। তার পরেই পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামে তৃণমূল ও পুলিশ-প্রশাসন। পুলিশি পাহারায় মঙ্গলবারই ফের প্রকল্প এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ওই দিন থেকেই এলাকায় রীতিমতো পাহারা দিতে শুরু করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এলাকায় বহিরাগত তৃণমূলের লোকেদের উপস্থিতির জেরেই নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় প্রশাসন এবং তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব নাকচ করেন আন্দোলনকারীরা। এ দিনও শাসকদলের ওই বাহিনীকে এলাকায় জমে থাকতে দেখা গিয়েছে।
এ দিকে, এ দিন বিকেলে জিম্মি, বোলপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান তপন সাহা, আইএনটিইউসি নেতা ফারুক আহমেদ, দলের কৃষকসভার নেতা সৈয়দ কাসোফদ্দোজা-সহ সাত সদস্যের কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল শিবপুর মৌজায় যান। সাবিরগঞ্জ যুব সঙ্ঘে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করে তাঁরা কথা বলেন। আন্দোলনকারীদের পক্ষে শেখ ইউসুফ, শেখ আনোয়ার, শেখ কুদ্দুস, শেখ একরামুলরা বলেন, ‘‘অধিগ্রহণের পর থেকেই আন্দোলনের সঙ্গে কংগ্রেসও যুক্ত ছিল। আমাদের আন্দোলনকে তাঁরা সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে আমাদের ন্যায্য দাবি এবং প্রাপ্তির জন্য আগামিদিনের কর্মসূচি নির্ধারণ করব।’’
এ দিন তাঁদের নিয়ে বৈঠক করবেন বলে আগাম ঘোষণা করলেও তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অবশ্য সন্ধ্যা অবধি দেখা করেননি। আলোচনার পথ খোলা রয়েছে বলেও এ ভাবে পিছিয়ে আসা কেন? এ ব্যাপারে বারবার যোগাযোগ করা হলে অনুব্রত এ দিন ফোন ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy