প্রতীকী ছবি।
‘তোমার বাবা ডাকছেন’— এই বলে স্কুলের গেট থেকে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রকে অপহরণের অভিযোগে মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল দুবরাজপুর পুলিশ। অপহরণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য উদ্ধার করা হয়েছে পাণ্ডবেশ্বরের বাসিন্দা ওই স্কুল পড়ুয়াকে। সোমবার সন্ধ্যার ঘটনা।
পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম ঈশ্বর কুচলাসি। বাড়ি মধ্যপ্রদেশের বালাগড়ের লেঞ্জি থানা এলাকায়। মঙ্গলবার ধৃতকে দুবরাজপুর আদালতে হাজির করানো হলে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে বছর চল্লিশের ওই বাসিন্দা আদৌ ‘অপহরণ’ করেছিলেন, না কি অন্য কোনও গল্প রয়েছে তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ঠিক কী হয়েছিল জানতে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুবরাজপুর শ্রী শ্রী সারদা বিদ্যাপীঠের সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রের নাম দীপ ধর। বাড়ি পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বর বাজার পাড়ায়। স্কুল লাগোয়া রামকৃষ্ণ আশ্রম পরিচালিত হস্টেলে থাকে সে। আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এ বছরই দীপের বাবা নিবিড় ধর ছেলেকে হস্টেলে ভর্তি করেন। সোমবার স্কুলে এসেই বেলা পৌনে এগারোটা নাগাদ হঠাৎ নিঁখোজ হয়ে যায় দীপ। প্রথমে সহপাঠী বা শিক্ষকেরা টের পাননি। টিফিনের সময়ে পড়ুয়ারা হস্টেলে ফিরতেই বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।
দুবরাজপুর রামকৃষ্ণ আশ্রমের শীর্ষ সেবক সত্যশিবানন্দ জানাচ্ছেন, সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শিক্ষক শুভাশিস চট্টরাজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখন আমরা জানতে পারি স্কুলের হাজির খাতায় উপস্থিতিই নেই বাচ্চাটির। তখনই দুবরাজপুর থানায় নিঁখোজ ডায়েরি করা হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ হস্টেলের এক কর্মী দুবরাজপুর স্টেশনে অণ্ডাল-সাঁইথিয়া শাখায় চলাচলকারী অণ্ডালগামী একটি লোকাল ট্রেনের কামরায় বাচ্চাটিকে দেখতে পান। কোনও রকমে ট্রেনে চড়ে তিনি দেখেন এক জনের সঙ্গে রয়েছে ওই পড়ুয়া। তাঁর দেওয়া খবর মতো পুলিশ ও আশ্রম কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় খয়রাশোলের পাঁচড়ায় নামনো হয় উভয়কেই। দুবরাজপুর থানায় এনে শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ।
ওই পড়ুয়া পুলিশকে জানিয়েছে, সে স্কুলে গিয়ে আইসক্রিম কিনতে বেরিয়েছিল। তখনই ওই ‘কাকু’ তাকে বাবার নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়ে হুল এক্সপ্রেসে চাপায়। বিকেলের ট্রেনে বাড়ি নিয়ে যাবে বলে অণ্ডালগামী লোকাল ট্রেনে চাপিয়েছিল। দীপের বাবা নিবিড় ধর বলছেন, ‘‘ছেলে নিখোঁজ শুনে ভেঙে পড়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত ছেলেকে পেয়ে খুশি। বাকিটা পুলিশ দেখুক।’’
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, মধ্যপ্রদেশের ওই বাসিন্দা যদি সত্যিই অপহরণ করে থাকেন, তা হলে প্রথমে শিশুকে নিয়ে সিউড়ির দিকে গিয়ে ফের কেন দুবরাজপুর-পাণ্ডবেশ্বর হয়ে অণ্ডালের দিকে যাচ্ছিলেন। নাকি শিশুটিই হঠাৎ পালিয়ে গিয়েছিল। সে সম্ভবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পুলিশ। দুবরাজপুরের এই হস্টেল থেকে মাস কয়েক আগেও তিন পড়ুয়া পালিয়ে গিয়েছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাদের সিউড়ি জিআরপি উদ্ধার করে ফের হস্টেলে পাঠায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy