আবাস যোজনার বাড়ি। —ফাইল চিত্র।
কবে শুরু হবে রাজ্য সরকারের আবাস প্রকল্পের সমীক্ষা— এই প্রশ্ন তুলেছেন বাঁকুড়া জেলায় কাঁচাবাড়ির বাসিন্দারা। বর্ষা গেলেও স্বস্তি নেই তাঁদের। জীর্ণ ঘরের মধ্যে ঢুকছে ঠান্ডা হাওয়া। অথচ আবাস প্রকল্পের বাড়ি কবে মিলবে, তা নিয়ে নিশ্চয়তা নেই। রাজ্যের অন্যত্র ওই সমীক্ষার কাজ প্রায় শেষের মুখে। কিন্তু তালড্যাংরা বিধানসভার উপনির্বাচন থাকায় বাঁকুড়া জেলা জুড়ে আবাস সমীক্ষায় সায় দেয়নি নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন শেষ হওয়ায় এ বার সমীক্ষার কাজ দ্রুত শুরুর দাবি করছেন বাসিন্দারা। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলায় প্রায় এক লক্ষ উপভোক্তা প্রকল্পে বাড়ি পেতে পারেন।
বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ২৩ নভেম্বর নির্বাচনের ফল প্রকাশ হবে। নির্বাচনী বিধি চালু থাকছে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত। তারপরেই রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের সঙ্গে কথা বলে বাঁকুড়ায় আবাস প্রকল্পের সমীক্ষার কাজ শুরুর বিষয়ে জেলা প্রশাসন আলোচনা চালাবে।
তবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে জেলা প্রশাসন। জেলার ১৯০টি পঞ্চায়েতে সমীক্ষার জন্য সরকারি আধিকারিক-কর্মীদের নিয়ে দল গড়া হয়েছে। সমীক্ষক দলের সদস্যদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। নতুন করে প্রশিক্ষণের আর দরকার নেই বলে জানাচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। সূত্রের খবর, মাঝে উপনির্বাচন পড়ে গেলেও ব্লকগুলি যাতে সমীক্ষায় নামার প্রস্তুতি নিয়ে রাখে তা নিয়ে সচেতন করা হয়েছিল। বাঁকুড়া জেলার এক বিডিও বলেন, “পঞ্চায়েত ভিত্তিক সমীক্ষক দলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। সবাই সমীক্ষায় নামার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।”
পুরুলিয়ার কিছু প্রত্যন্ত গ্রামে আবাসের সমীক্ষায় গিয়ে ইন্টারনেট সংযোগ না পেয়ে অ্যাপে তথ্য তুলতে পারেননি কর্মীরা। বাঁকুড়ারও কিছু গ্রামে একই সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রামে নেটওয়ার্কের অবস্থা দুর্বল। রানিবাঁধ ব্লকের মুকুটমণিপুর জলাধার লাগোয়া গ্রামগুলিতে ওই সমস্যা আগেও দেখা গিয়েছে। ফলে ওই সব এলাকায় কী ভাবে নির্বিঘ্নে সমীক্ষা করা যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কয়েকটি জেলায় মোবাইলের নেটওয়ার্কে সমস্যা থাকায় আবাসের সমীক্ষা প্রাথমিক পর্বে ব্যাহত হয়। পরে সেখানে তথ্য সংগ্রহ করে এনে ‘আপলোড’ করা হয়েছে। বাঁকুড়াতেও এমন সমস্যা হলে বিকল্প হিসেবে ওই পথেই হাঁটতে হবে।”
ঝড়বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলেই জেলায় কাঁচাবাড়ির দেওয়াল ধসে মৃত্যুর ঘটনা কার্যত রুটিন হয়ে গিয়েছে। চলতি বছরেও নিম্নচাপের বৃষ্টিতে জেলায় কাঁচাবাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে তিন জন মারা যান। বাড়ি ভেঙেছে চার হাজারের বেশি। ছাতনার বাসিন্দা পলাশ বাউরি বলেন, “আগেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়ার কথা ছিল। পাইনি বলে এখনও কাঁচাবাড়িতেই বাস করতে হচ্ছে। এ বার রাজ্য সরকার বাড়ি দিচ্ছে বলে সমস্যা মেটার আশায় ছিলাম। কিন্তু উপনির্বাচনের জন্য সেই প্রকল্পের সমীক্ষাও পিছিয়ে গেল। শীতেও ভাঙা ঘরে থাকার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলল না।’’ একই আক্ষেপ বাঁকুড়া ২ ব্লকের শান্তনু মাল, ওন্দার তপন মণ্ডলদেরও। তাঁদের একটাই দাবি, দ্রুত সমীক্ষার কাজ সেরে পাকা বাড়ি তৈরি করা শুরু হোক। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার আশ্বাস, “নির্বাচন বিধি উঠলেই রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমীক্ষার কাজ শুরুর বিষয়ে আলোচনা করা হবে। আমরা সমস্ত রকম প্রস্তুতি সেরে রেখেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy