Advertisement
৩০ জানুয়ারি ২০২৫
Partha Chatterjee & Jyotipriya Mallick

বালুর জামিন! খবর জেনে ভেঙে পড়েছিলেন পার্থ, তার পরেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রাক্তন মন্ত্রী

গত ১৫ জানুয়ারি ২৫ হাজার টাকার জোড়া বন্ড এবং ৫০ লাখ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে জ্যোতিপ্রিয়কে। সেই ঘটনার পরেই জেলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Partha Chatterjee fell ill after Jyotipriya Mallick\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s bail after he broke down in jail

(বাঁ দিকে) জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। পার্থ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।

অমিত রায়
শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:২৯
Share: Save:

গুরুতর অসুস্থ হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনও তিনি জেল হেফাজতে। সংশোধনাগারে অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পার্থ আদালতের কাছে আবেদন জানান বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য। আদালত সেই আর্জি অনুমোদন করে। যদিও শর্ত দেয়, সেই চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে হবে পার্থকেই। তাতে রাজি হন প্রাক্তন মন্ত্রী। মঙ্গলবার রাতে প্রাক্তন মন্ত্রীকে বাইপাসের ধারে আরএন টেগোর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।

সংশোধনাগারের একটি সূত্রের বক্তব্য, একদা রাজ্য মন্ত্রিসভায় তাঁর সহকর্মী এবং তৃণমূলে সমসাময়িক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জামিন পাওয়ার খবরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন পার্থ। সেই থেকেই তাঁর শারীরিক অসুস্থতার সূত্রপাত, যা ক্রমশ গুরুতর আকার ধারণ করেছে।

২০২২ সালের ২৩ জুলাই মধ্যরাতে পার্থকে তাঁর নাকতলার বাসভবন ‘বিজয়কেতন’ থেকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি। সেই থেকেই জেলবন্দি তিনি। কয়েকটি মামলায় জামিন পেলেও একাধিক মামলায় অভিযুক্ত বলে জেল থেকে ছাড়া পাননি পার্থ। রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে ছিলেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ও। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে জেলে ছিলেন তিনি। দু’জনে একসঙ্গে প্রায় ১৪ মাস কারাবাসে কাটিয়েছেন। কিন্তু গত ১৫ জানুয়ারি ২৫ হাজার টাকার জোড়া বন্ড এবং ৫০ লাখ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেওয়া হয় জ্যোতিপ্রিয়কে। সেই ঘটনার পরেই শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়েছে তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিবের।

প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রের খবর, একদা তৃণমূলে সতীর্থ জ্যোতিপ্রিয় (যাঁকে তৃণমূলে সকলে ‘বালু’ নামেই চেনেন) জামিন পাওয়ার পরেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন বেহালা পশ্চিমের পাঁচ বারের বিধায়ক পার্থ। সে দিন থেকে খাওয়াদাওয়াও প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিলেন। তার পাঁচ দিনের মাথায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। জেল কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে পার্থকে জেল হাসপাতালে রাখার ঝুঁকি না নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকাকালীনই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চেয়ে আইনজীবীর মারফত পার্থ আদালতের দ্বারস্থ হন।

জেল সূত্রের খবর, যে দিন দুপুরে আদালত জ্যোতিপ্রিয়ের জামিন মঞ্জুর করে, সে দিনই তাঁকে জেল থেকে বাড়ি নিয়ে আসার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। জ্যোতিপ্রিয়ের জামিন পাওয়ার খবর পেয়েই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন পার্থ। সতীর্থ রাজনীতিককে অভিনন্দনও জানান তিনি। কিন্তু তার পরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, জ্যোতিপ্রিয় পার্থকে বিভিন্ন ভাবে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও থামানো যায়নি পার্থকে। একটা সময়ে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থের কান্না থামাতে এগিয়ে আসেন জেলের কয়েক জন আধিকারিকও। জ্যোতিপ্রিয় যখন জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরোবেন, তখন পার্থ তাঁর হাত ধরে অনুরোধ করেন, জ্যোতিপ্রিয় যেন পার্থের জামিন নিয়ে ‘উদ্যোগী’ হন।

উল্লেখ্য, জ্যোতিপ্রিয় ১৫ জানুয়ারি জেল থেকে বেরোনোর পাঁচ দিন পরে ২০ জানুয়ারি এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল পার্থকে। তার পরে সোমবার আদালতে আবেদন জমা দেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। সেই আবেদনে পার্থ জানিয়েছিলেন, এসএসকেএমে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হতে পারছেন না তিনি। তাই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক তাঁকে। এর পর এসএসকেএম হাসপাতালের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করে পার্থের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায় আদালত। মঙ্গলবার সেই রিপোর্ট আদালতে জমা দেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। সেখানে জানানো হয়, পার্থের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে কিছু সমস্যা রয়ে গিয়েছে। সংক্রমণের সমস্যাও রয়েছে। তার পরেই বিচারক নির্দেশ দেন, বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন পার্থ। তবে চিকিৎসার খরচ তাঁকেই বহন করতে হবে। সেই মতোই মঙ্গলবার রাতে এসএসকেএম থেকে বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তবে তাঁর জামিন কবে হবে, সে সম্পর্কে কেউই কিছু বলতে পারছেন না। জামিন পাওয়ার পরে পার্থের অনুরোধমতো জ্যোতিপ্রিয় ‘উদ্যোগী’ হয়েছেন কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়। কারণ, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর জামিনের সময় আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, তিনি যেন কারও সঙ্গেই কোনও কথা না বলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Partha Chatterjee Jyotipriya Mallick TMC Leaders West Bengal Ration Distribution Case Recruitment Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy