সোমবার বিধানসভায় হাবড়ার বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । —নিজস্ব চিত্র।
জামিন পেয়ে জেল থেকে মুক্তির পর প্রথম বার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এলেন প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার কিছু পরে বিধানসভায় আসেন তিনি। জামিন দেওয়ার সময় আদালত শর্ত দিয়েছে, কোনও ভাবেই সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা যাবে না। তাই প্রথম থেকেই সাবধানে ছিলেন তিনি। একাধিক বার জ্যোতিপ্রিয়কে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা নানা প্রশ্ন করলেও কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি তিনি। বিধানসভায় এসেই জ্যোতিপ্রিয় যান তৃণমূল পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের ঘরে। সেখানেই বিধানসভায় যোগদানের জন্য প্রয়োজনীয় কাজকর্ম প্রসঙ্গে কথাবার্তা বলেন নির্মলের সঙ্গে। সেই ঘরেই তাঁর দেখা হয় সতীর্থ বেশ কয়েক জন বিধায়কের সঙ্গে। সেখানেই আগ্রহী হয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সংগঠন কী ভাবে চলছে সে বিষয়ে খোঁজ খবর নেন বালু।
জ্যোতিপ্রিয়ের মতোই এ দিন বিধানসভায় এসেছিলেন স্বরূপনগরের বিধায়ক বীণা মণ্ডল ও আমডাঙার বিধায়ক রফিকুর রহমান। এসেছিলেন বনগাঁর তৃণমূল নেতা রতন ঘোষও। মুখ্য সচেতন নির্মল-সহ এই তিন নেতাই যে হেতু উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূলের শাখা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, মূলত তাঁদের সঙ্গেই সংগঠন নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যায় প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে। জ্যোতিপ্রিয়কে রেশন দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তিনি প্রায় ১৪ মাস জেল হেফাজতে ছিলেন। ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি বিশেষ ইডি আদালত ৫০ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড এবং ২৫ হাজার টাকার দু’টি বন্ডে শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করে। সেই দিন সন্ধ্যায় তিনি আলিপুরের প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পান এবং সল্টলেকের বাসভবনে ফিরে আসেন।
জামিনের শর্ত ছিল, জ্যোতিপ্রিয়কে তদন্তকারী আধিকারিকদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে হবে, বিচারপ্রক্রিয়ায় নিয়মিত উপস্থিত থাকতে হবে, সাক্ষীদের প্রভাবিত করা চলবে না, পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে এবং আদালতের অনুমতি ছাড়া রাজ্যের বাইরে যেতে পারবেন না। গ্রেফতারের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর, ২০২৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, রাজ্যপাল সংবিধানের ১৬৬(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জ্যোতিপ্রিয়কে বন দফতর এবং শিল্পোদ্যোগ ও শিল্প পুনর্গঠনের দফতরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন। যদিও এখনও হাবড়ার বিধায়ক পদে রয়েছেন তিনি। তাই দ্রুত নিজের বিধানসভা নিয়ে কাজ শুরু করতে চান তিনি।
তৃণমূল পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, জেলবন্দি কোনও বিধায়ক জামিন পেলে, নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে বিধানসভার টিএডিএ সেকশন থেকে ৫ নম্বর ফর্ম সংগ্রহ করতে হয়। সেই ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হয় যে জেল বা সংশোধনাগার থেকে তিনি ছাড়া পেয়েছেন সেখানে। সেই ফর্মটি নিজেদের অফিসে ব্যবহারের পর তার দু’টি পৃথক কপি পাঠানো হয় বিধানসভা সচিবালয় ও রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরে। জেল কর্তৃপক্ষের থেকে সেই নথি পাওয়ার পরই সংশ্লিষ্ট বিধায়ককে কাজকর্ম শুরু করার অনুমতি দেয় বিধানসভার সচিবালয়। এ ক্ষেত্রে সোমবার বিধানসভায় এসে সেই ফর্মটি সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়। মঙ্গলবার আবার বিধানসভায় আসবেন তিনি। সোমবার বিধানসভায় এলেও তাঁর দেখা হয়নি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তাঁরা দু’জনেই প্রিসাইডিং অফিসার্স কনফারেন্সে যোগ দিতে পটনায় গিয়েছেন। রাতেই তাঁদের কলকাতায় ফেরার কথা। তাই মঙ্গলবার বিধানসভায় তাঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হতে পারে বালুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy