কুমারগঞ্জে রেল অবরোধ।
সাংসদের প্রতিনিধি হয়ে রেল অবরোধ তুলতে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হলেন উত্তর মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূরের স্বামী মির্জা কায়েশ বেগ। সোমবার ভোর থেকে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কুমারগঞ্জে রেল অবরোধ করেন বাসিন্দারা। এলাকাটি উত্তর মালদহ লোকসভা ও মালতিপুর বিধানসভার অন্তর্গত। দলীয় সূত্রের খবর, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে মালতিপুর বিধানসভা থেকে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন কায়েশ বেগ। ফলে জনসমর্থন পালে টানার চেষ্টা করতেই সেখানে তিনি গিয়েছিলেন বলে দলের অনেকের ধারনা। কিন্তু, সেখানে তাঁর কথা অবরোধকারীরা অনেকে গুরুত্ব দিতে না চাওয়ায় সাংসদের জনপ্রিয়তা কমছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে দলেই।
যদিও প্রত্যাখ্যানের কথা মানতে চাননি সাংসদ ও তাঁর স্বামী। সাংসদ বলেন, “বাসিন্দারা আমাকে দাবি জানানোর পর রেল প্রতিমন্ত্রীকে একাধিকবার চিঠি লিখে তা জানিয়েছি। বাসিন্দাদেরকে তা দেখিয়েছি। এদিন যাত্রীদের কথা ভেবে রেল ও প্রশাসনের তরফে বিষয়টি দেখার জন্য আমাকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু অসুস্থ থাকায় আমি যেতে পারিনি।” তাঁর সন্দেহ, “তৃণমূল মদতপুষ্টরা উসকানি দিয়ে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করে।”
কায়েশ বেগে’র দাবি, “আমি যাওয়ার পরেই তো অবরোধ উঠেছে। ওরা ১২ ঘন্টার জন্য অবরোধ কর্মসূচি নিয়েছিল। আমি বাসিন্দাদের বোঝানোর পর তারা অবরোধ তুলে নেন। আমাকে প্রত্যাখান করবে কেন! ওখানে তো পুলিশ-প্রসাসনের কর্তারাও ছিলেন। তারা সব দেখেছেন।”
পুলিশ সূত্রের খবর, সাংসদের স্বামী অবরোধকারীদের বোঝানোর সময়ে অনেকে রেল লাইন থেকে সরতে রাজি হন। কিন্তু অন্যপক্ষ তাতে রাজি হননি। বরং, ‘আপনি কে’, ‘আপনার কথা শুনব কেন’ বলে হইচই করেন তাঁরা। কয়েকজন পুলিশ কর্মী জানান, সেই সময়ে কায়েশ বেগ ও তার অনুগামীরা সরে দাঁড়ান। কিছুক্ষণ পর রেলের এক কর্তা সেখানে গিয়ে চিঠি পাঠানোর কথা ঘোষণা করলে অবরোধ ওঠে। মালতিপুরের আরএসপি বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সি’র দাবি, “পালে হাওয়া টানতেই কয়েশ বেগ ওখানে গিয়েছিলেন। ওরা আমাকেও জানিয়েছিল। দাবির যৌক্তিকতা থাকলেও অরাজনৈতিক ওই আন্দোলনে আমি যাইনি। সবকিছু নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।”
কিন্তু কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে কেন প্রত্যাখ্যাত হলেন কায়েশ! আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, কুমারগঞ্জে দুটি ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে প্রথম যারা আন্দোলন গড়ে তোলেন তাদের মধ্যে অন্যতম শ্রীপুর-২ গ্রাম পন্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান সেরিনা বিবির ভাগ্নে সাবির আলম। তার সঙ্গে ছিলেন সেরাজুল ইসলাম, এজাবুল হক, মহম্মদ আব্দুল আলিম ও বাবলু সরকার। বহুবার বিভিন্ন মহলে দরবার করে লাভ না হওয়ায় অবরোধ কর্মসূচি নেওয়া হয়।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, “সাংসদকে জানিয়েও ফল হয়নি। রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরী থাকার সময় সম্ভাবনা থাকলেও স্টপেজ চালু করতে সাংসদ ব্যবস্থা নেননি। তাই রাজনৈতিক নেতাদের বাদ দিয়েই লড়াই করে দাবি আদায়ের রাস্তায় নামা হয়েছে।” আন্দোলনের উদ্যোক্তা সাবির আলম, বাবলু সরকার একযোগেই বলেন, “আমরা রাজনীতি করলেও এই দাবি আদায়ের আন্দোলনে রাজনীতি আসুক তা চাই না। তাই বাধা দেওয়া হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy