দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়ার সমর্থনে বুধবার মহামিছিল হবে শিলিগুড়িতে। সেখানে শহরের সব সিটি অটো চালকদের উপস্থিত থাকার ফতোয়া দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাতে চালকদের একাংশ শঙ্কিত বলে জানিয়েছেন। ‘ভয়ে-ভক্তি’তে প্রায় সকলেই ওই মিছিলে যাবেন বলে জানিয়েও দিয়েছেন। ফলে বিকেল ৪টে থেকে ৬ টা পর্যন্ত তৃণমূল সমর্থিত ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য চালকরা অটো চালানো বন্ধ রাখবেন বলে জানিয়েছেন। এতে নিত্য অফিস যাত্রী, স্কুল-কলেজ ছাত্রছাত্রীরা ব্যপক সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিত্যযাত্রীরা দুর্ভোগে পড়লেও কিছুই করার নেই বলেও জানিয়েছেন অটো চালক ইউনিয়নের নেতারা। বিরোধী সংগঠনের অটো চালকরা তাঁদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অটোগুলি চালাবেন বলে জানিয়েছেন। তৃণমূল ছাড়া অন্য সংগঠনগুলির অধীনে রয়েছে ৩০ শতাংশ অটো।
বুধবার বিকেল ৫ টায় মিছিল শুরু হওয়ার কথা। সেই অনুযায়ী ৪ টা তেই সমস্ত অটো তুলে নেবেন বলে জানিয়েছেন আইএনটিটিইউসি সমর্থিত সিটি অটো ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি নির্মল সরকার। ফের মিছিলের শেষে ৬ টার পর অটো চালানো শুরু করবেন তাঁরা। নির্মলবাবু বলেন, “সাধারণ মানুষের অসুবিধা হবে আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু যে ইউনিয়ন করি তাঁর জেলা সভাপতির নির্দেশ মানতেই হবে। আমরা নিরুপায়।” যদিও অটো বন্ধ রাখার কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন দার্জিলিং জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি অরূপরতন ঘোষ। তিনি বলেন, “আমরা অটো চালকদের মিছিলে যেতে বলেছি। কিন্তু অটো বন্ধ রেখে কাউকে যেতে বলা হয়নি। কেউ ইচ্ছে না হলে আসবেন না। কাউকে ফতোয়া দেওয়া হয়নি।”
সিটুর সিটি অটো চালক ও মালিকদের ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমল পাল বিষয়টির নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা কখনও যাত্রী পরিষেবা বন্ধ করে এত বছরে কোনও অনুষ্ঠান করিনি। আমাদের নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে মালিকদের কেউই নেই। কিছু চালক থাকলেও, তাঁদের কিছু করার নেই। তাঁরা মালিকের নির্দেশেই অটো বন্ধ রাখবে।” যাত্রী হয়রানি হলেও তাঁদের আটকানোর উপায় নেই বলে আক্ষেপ করেন তিনি। সিটি অটোর নির্দলীয় সংগঠন, সিটি অটো অপারেটর্স ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ অটো চালাবেন বলে জানান, “তিনি বলেন, আমরা অটো চালাব। কিন্তু আমাদের সংগঠনে মাত্র একশো অটো চালক রয়েছে। তাতে সমস্যা মিটবে না।”
শিলিগুড়িতে বর্তমানে ১২০০ অটো চলে। তার মধ্যে প্রায় সাড়ে ৭ শো অটো চালক ও মালিক তৃণমূলের সংগঠনে যোগ দিয়েছেন। বাকিরা কংগ্রেসের আইএনটিইউসি, এসইউসিআই ও সিটুর সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে শুধু আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত সংগঠনের চালকদের অনুপস্থিতিতে সমস্যায় পড়বেন যাত্রীরা। শিলিগুড়ি পরিবহণ বোর্ডের সদস্য তথা জেলা তৃণমূল নেতা মদন ভট্টাচার্য বলেন, “সমস্যা একটু হবে। তবে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবেই মিছিলে আসছেন। প্রার্থীকে জেতাতে হবে তো!”
এক কলেজ শিক্ষক বলেন, “আমি সুকনা থেকে রোজ সাড়ে ৪ টায় অটো ধরি। অটো ছাড়া ওই রুটে কোনও যোগাযোগই নেই। ফলে কি করব বুঝতে পারছি না। দরকার হলে ছুটি নিতে হবে।” এক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া রিম্পা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ওই সময়ে বাসে প্রচণ্ড ভিড় থাকে। অটো না পাওয়া গেলে সমস্যায় পড়তে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy