মেলা ও সিনেমা দেখানোর নাম করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বিবাহ বিচ্ছিন্না এক তরুণীকে মাদক খাইয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক ট্যাক্সিচালক ও তার তিন সঙ্গীর বিরুদ্ধে। মালদহের চাঁচল থানার সাওরগাছি এলাকায় সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। তরুণীর বাড়ি চাঁচল থেকে ১২ কিলোমিটার দুরের এক গ্রামে। জখম অবস্থায় কোনওক্রমে পালিয়ে রাতে সাওরগাছি এলাকার একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন ওই তরুণী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁকে থানায় নিয়ে আসেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পুলিশ ওই তরুণীকে চাঁচল মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। গুরুতর অসুস্থ ওই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ গণধর্ষণের মামলা শুরু করেছে। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ট্যাক্সি চালকের সঙ্গে ওই তরুণীর সম্পর্ক ছিল। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্যাক্সি চালক তরুণীর সঙ্গে সহবাস করে। তরুণীকে আরও তিন যুবক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পুলিশ সবকিছুই খতিয়ে দেখছে। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণীর বাবা মুম্বইয়ে শ্রমিকের কাজ করেন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে বড় ওই তরুণী। এক বছর আগে হরিশ্চন্দ্রপুরে তাঁর বিয়ে হয়। কিন্তু স্বামী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তরুণী বিবাহবিচ্ছেদ করেন। কয়েক মাস আগে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীর সঙ্গে সইদুল আলি নামে ওই ট্যাক্সিচালক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই তরুণীর সঙ্গে চাঁচল লাগোয়া সাওরগাছি-বিদ্যানন্দপুর এলাকার যুবক সইদুলের পরিচয় হয়। চাঁচলে একটি সিনেমাহলের সামনে বেশ কিছুদিন ধরেই মেলা চলছে। গত সোমবার তরুণীকে মেলা ও সিনেমা দেখানোর কথা বলে তাঁকে চাঁচলে আসার কথা বলে সইদুল। অভিযুক্তই তাঁকে চাঁচলে নিয়ে আসেন। মেলায় ঘোরার পর রাতে সিনেমাও দেখেন দু’জন। এরপরেই খাবারের সঙ্গে তরুণীকে মাদক খাইয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সিনেমা দেখে তরুণীকে সাওরগাছি এলাকার একটি মাঠে নিয়ে যায় সইদুল। সেখানে প্রথমে সইদুল ও পরে একে একে তার তিন সঙ্গী ওই তরুণীকে ধর্ষন করে বলে অভিযোগ।
তরুণীর মা জানান, মাদক খাইয়ে জোর করে ওরা মেয়ের উপর নির্যাতন চালায়। মেয়েকে খুন করে ফেলার কথাও আলোচনা করছিল তারা। সুযোগ বুঝে কোনওক্রমে মেয়ে পালিয়ে এসেছে। রাতে গ্রামের রাস্তায় অপরিচিত অসুস্থ তরুণীকে দেখে বাড়িতে নিয়ে যান সাওরগাছির এক বাসিন্দা। সকালে ঘটনার কথা এলাকায় জানাজানি হয়। তরুণীর পরিবারকেও খবর দেওয়া হয়। তাঁকে নিয়ে সকলে থানায় যান। পরে তরুণীর মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়।
ঘটনার কথা জানতে পেরে সন্ধ্যায় থানায় আসেন মকদমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য তথা তরুণীর প্রতিবেশী আমিনুল হক। তাঁদের উদ্যোগেই তরুণীর মা পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানান। পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, “পরিবারটি খুব দুঃস্থ। আমরা চাই অভিযুক্তরা কঠোর শাস্তি পাক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy