আন্দোলনে মিলেছে কেবল আশ্বাস। কাজের কাজ না হওয়ায় ভোটের মুখে রেল পরিষেবার উন্নয়ন নিয়ে তাতছে গঙ্গারামপুর। দীর্ঘ দিন ধরেই রেল স্টেশনের উন্নতি না হওয়ায় লোকসভা ভোটের মুখে সরব হয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা-ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। আজ, বুধবার গঙ্গারামপুরে দলের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের সমর্থনে প্রচারে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট প্রচারে রেল অন্যতম ইস্যু হয়ে ওঠার আঁচ পেয়ে ইতিমধ্যেই প্রার্থী অর্পিতা থেকে দলের সভাপতি বিপ্লব মিত্র, প্রচারে সকলেই বিষয়টি তুলে ধরছেন। পাল্টা প্রচারে নেমেছেন কংগ্রেস প্রার্থী ওমপ্রকাশ মিশ্রও।
২০০৪ সালে বালুরঘাট-একলাখি রেল পথ চালু হওয়ার পর থেকে মহকুমা শহর গঙ্গারামপুরে রেল স্টেশনের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি অব্যাহত। তৃণমূলের দাবি, রেলমন্ত্রী থাকার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গারামপুর স্টেশন-সহ জেলার রেল পরিকাঠামো উন্নয়নে গুচ্ছ পরিকল্পনা নেন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সমর্থন প্রত্যাহার করে সরে আসার পর ওই কাজ আটকে যায় বলে অভিযোগ। ২৪ হাজার বাসিন্দার গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে ওই দাবিতে গঙ্গারামপুর রেল উন্নয়ন কমিটির প্রতিনিধিরা গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর দিল্লিতে গিয়ে রেল মন্ত্রকের কাছে দাবি-সনদ পেশ করেন। রেল উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক অজয় দাস অভিযোগ করেন, “রেল মন্ত্রকের অফিসার থেকে রেলমন্ত্রী পর্যন্ত সবার দ্বারস্থ হয়েছি। প্রস্তাবিত গঙ্গারামপুর স্টেশনটিকে ডি-শ্রেণির স্টেশনে উন্নীত করা, কলকাতার সঙ্গে বালুরঘাটের সরাসরি রাতের ট্রেন চালু এবং রেল লাইনের পরিকাঠামো উন্নতির আবেদন করা হয়েছিল। আশ্বাস মিললেও কাজ হয়নি।” এই প্রসঙ্গে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের ডিআরএম অরুণ শর্মা জানান, গঙ্গারামপুর-সহ তিনটি হল্ট স্টেশনকে ডি-ক্যাটাগরি স্টেশনে উন্নীত করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, “নতুন করে গঙ্গারামপুরের জন্য প্রায় ১৫ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন এলে কাজ হবে।”
দক্ষিণ দিনাজপুরের দ্বিতীয় মহকুমা শহর গঙ্গারামপুর রেল স্টেশনটিকে হল্ট-স্টেশন থেকে ডি শ্রেণির স্টেশনে উন্নীত করতে গত প্রায় ১০ বছর ধরে শহরবাসী দাবি জানিয়ে আসছেন। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বালুরঘাট-একলাখি রেলপথ চালু হওয়ার পর থেকেই অবহেলার শিকার গঙ্গারামপুর স্টেশন। প্ল্যাটফর্ম এতটাই নীচু যে অন্যের সাহায্য নিয়ে বয়স্কদের ট্রেনে উঠতে হয়। নেই পর্যাপ্ত যাত্রীশেড। যাত্রীস্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। চুক্তিভিত্তিক ঠিকাদারকে দিয়ে চলে টিকিট কাউন্টার। গঙ্গারামপুরের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “গঙ্গারামপুর পুরসভার আওতাভুক্ত জেলার অন্যতম বাণিজ্য শহর গঙ্গারামপুরকে গুরুত্ব দিচ্ছে না রেল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে নেওয়া গঙ্গারামপুর স্টেশন উন্নয়ন ছাড়া একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন, সবই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” কংগ্রেস নেতা তথা বালুরঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, “গত ডিসেম্বরে গঙ্গারামপুর রেল উন্নয়ন কমিটির প্রতিনিধিদের দিল্লিতে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করানোর ব্যবস্থা করা হয়। প্রকল্পগুলি সম্পর্কে রেলমন্ত্রক সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু ভোট ঘোষণার কারণে কাজ শুরু করা যায়নি।” তিনি জানান, শেষ রেল বাজেটে জেলার জন্য বালুরঘাট-হাওড়া রাতের ট্রেন বরাদ্দ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy