উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের ‘স্টপ’ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে ফালাকাটা এবং ধূপগুড়িতে। সম্প্রতি ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন এলাকার মানুষজন। কারণ, আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইটে এটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, আগামী ১ অক্টোবর থেকে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে ওই দুই স্টেশনের কোনও টিকিট বুক করা যাবে না। আলিপুর দুয়ারের বিভাগীয় রেল আধিকারিক বীরেন্দ্র কুমার বলেন, “এই সিদ্ধান্ত রেলের উচ্চ পর্যায়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এই দুই স্টেশনে ফের উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের ‘স্টপ’ চালু করতে উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে আবেদন জানাব।”
উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস চালু হওয়ার পরে থেকে ধূপগুড়ি ও ফালাকাটায় ট্রেন থামার দাবিতে বহু আন্দোলন করেন এই এলাকার সাধারণ মানুষ। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফালাকাটাতে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের ‘স্টপ’ দেওয়ার নির্দেশ দেন। আন্দোলন চললেও সে সময় অবশ্য ধূপগুড়িতে ‘স্টপ’ দেওয়া হয়নি। দেড় বছর আগে পুরসভার নির্বাচনের প্রচারে ধুপগুড়ি গিয়েছিলেন মুকুল রায়। তখন রেলমন্ত্রীর কাছে ট্রেন থামার দাবিতে দরবার করেন ব্যবসায়ীরা। পুরসভার ভোটে তৃণমূলের জয়ের পর দিনই মুকুলবাবু ধূপগুড়িতেও উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রসের ‘স্টপ’ দেওয়ার নির্দেশ দেন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দুই স্টেশনে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের প্রচুর যাত্রী রয়েছে। স্টপ দেওয়ার ফলে টিকিট বিক্রিও অনেকটাই বেড়েছে। পুজোর মাসে স্টপ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়ে গিয়েছেন যাত্রীরা। কারণ বিকেল বেলা সব কাজ সেরে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে কলকাতায় যাতায়াত করাটা সুবিধাজনক বলে দুই শহরের বাসিন্দাদের কাছেই এই ট্রেন সেরা বাছাই। শুধু ফালাকাটা বা ধুপগুড়িই নয়, কোচবিহার জেলার মাথাভাঙা মহকুমার লোক ফালাকাটা এসে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে যাতায়াত করতেন নিয়মিত। উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস না থামলে কলকাতায় যাতায়াতের জন্য ফালাকাটার মানুষের ভরসা মাত্র তিনটি ট্রেন। আর ধূপগুড়ির বাসিন্দাদের নির্ভর করতে হবে ৪টি ট্রেনের উপর।
এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রেল মন্ত্রক কেন বিভাগীয় আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করল না তা নিয়ে বিস্মিত রেল কর্তাদের একাংশ। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতবর্ষের তিন হাজার স্টেশন রয়েছে যেখানে যাত্রী সংখ্যা হাতেগোনা। এইসব স্টেশনে অযথা ট্রেনের স্টপ দেওয়ায় বহু সময় চলে যাচ্ছে। সেই যুক্তিতে গোটা দেশেই বিভিন্ন ট্রেনের ‘স্টপ’ কমানোর সিদ্ধান্ত। উত্তরবঙ্গের ফালাকাটা ও ধূপগুড়ির পাশাপাশি মালদহের সামসি স্টেশনেও অক্টোবর থেকে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের স্টপ বন্ধ করা হয়েছে।
ফালাকাটা ও ধূপগুড়ির ব্যবসায়ী সংগঠন রেলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর অভিযোগ, বিজেপি এই অঞ্চলে ভোট না পাওয়ায় এলাকার মানুষের সঙ্গে নোংরা রাজনীতি করছে। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এই বিষয়টি নিয়ে রেল মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy