সমবায় সমিতিগুলি থেকে চাহিদা মতো ইউরিয়া সার না মেলায় বিপাকে পড়েছেন মালদহের চাঁচল মহকুমার বোরো চাষিরা। সমবায় সমিতি গুলিতে ইউরিয়া অমিল হলেও বাইরে খোলাবাজারে তা মিলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বোরো চাষের সময় প্রত্যেক বছর সমবায় সমিতি থেকে ইউরিয়া সার পেয়ে থাকেন চাষিরা। সরকারি বিপণন সংস্থা বেনফেড থেকে ওই সার সমবায়গুলোতে দেওয়া হয়। কিন্তু এ বছর যোগান কম হওয়ায় সমস্যা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সমবায়গুলিকেও নাজেহাল হতে হচ্ছে। চাষিদের অভিযোগ, সমবায় সমিতিগুলিতে ওই সার না মেলায় একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী খোলাবাজারে সারের কালোবাজারি করছে। সার পেতে সমবায়ে চাষিদের বিক্ষোভের পাশাপাশি হাতাহাতির ঘটনাও নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বেনফেডের পাশাপাশি ইফকোর সঙ্গে একাধিকবার আলোচনার পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি বলে জেলা সমবায় ও কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
কৃষি দফতরের মালদহের উপ অধিকর্তা অনন্ত দেব মাইতি বলেন, “ইফকোর কর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। সমবায় সমিতি ও ইফকোর কর্তাদের নিয়ে ফের আলোচনায় বসার কথা ভাবছি।” মালদহের এআরসিএস (অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার অব কো অপারেটিভ সোসাইটি) সুবীর দত্ত বলেন, “সমবায়গুলো থেকে চাহিদা মতো ইউরিয়ার যোগান না পাওয়ায় বাইরে থেকে বেশি দামে তা কিনছেন চাষিরা। বিষয়টি নিয়ে ইফকোর সঙ্গে একাধিকবার আলোচনায় বসেছি। ওরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।” জেলা কৃষি ও সমবায় দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইফকোর ইউরিয়া সার কম দামে সমবায়গুলো থেকে পেয়ে থাকেন চাষিরা। বেনফেডের মাধ্যমে ইফকো তথা ইন্ডিয়ান ফার্মার্স কো অপারেটিভ সংস্থার ওই সার সমবায়গুলোতে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু এবছর জেলা জুড়েই সমবায়গুলোতে ওই সারের যোগান চাহিদার তুলনায় কম। ইফকোর যুক্তি ছিল, তাদের একাধিক কারখানা বন্ধ। তাই উত্পাদন কম হচ্ছে। বছরের একটা সময়ে হঠাত্ করে সারের চাহিদা আকাশছোঁয়া হলেও তা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না।
যদিও সংস্থার ওই যুক্তি মানতে রাজি নন সমবায় সমিতিগুলো। তাদের পাল্টা যুক্তি, উত্পাদন কম হলে খোলাবাজারেও তার প্রভাব পড়বে। কিন্তু খোলাবাজারে ওই সারের অভাব নেই। সংস্থার সঙ্গে বৈঠকেও প্রসঙ্গটি তোলা হয়েছিল বলে কৃষি বিপণন সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও ইফকোর পাল্টা যুক্তি ছিল, সংস্থার কিছু স্বীকৃত প্রতিনিধি আছেন। তাই তাদেরকেও তা সরবরাহ করা হয়।
হরিশ্চন্দ্রপুর লার্জ স্কেল মার্কেটিং সোসাইটির চেয়ারম্যান অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “আমাদের অধীনে ২৫টি সমবায় রয়েছে। ইফকো আগে বাইরে সার বিক্রি করত না। এখন তা করায় একশ্রেণির ব্যবসায়ী সেই সুযোগ নিয়ে সারের কালোবাজারি করছে। অথচ আমরা চেয়েও ওই সার পাচ্ছি না। এতে চাষিদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। কৃষিমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে সমস্যার কথা জানিয়েছি।”
চাঁচল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তথা সার ব্যবসায়ী প্রাণগোপাল পোদ্দার বলেন, “অনেক সময় সমবায়গুলোর একাংশও চাষিদের বকলমে ব্যবসায়ীদের কাছে ওই সার বিক্রি করে দেয়। ফলে আখেরে চাষিদেরকেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
হরিশ্চন্দ্রপুরের চাষি সুকুমার দাস, রতুয়ার মহম্মদ সাজাহানরা বলেন, “বোরো চাষের প্রধান উপকরণ সেচ ও সার। একে পর্যাপ্ত জলসেচের ব্যবস্থা নেই। তার উপর চড়া দামে সার কিনতে গিয়ে চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy