Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
রোদ চড়তেই উত্তেজনা চড়ল উত্তর জুড়ে, বৃষ্টি নামায় কিছুটা শান্তি বিকেলে

দিনভর সংঘর্ষ

মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া নিয়ে বু‌ধবারই উত্তাল হয়ে উঠেছিল রায়গঞ্জ। বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরেরই ইটাহার উত্তপ্ত হয়ে উঠল সকাল এগারোটা থেকে। কয়েক দফায় তুমুল মারপিট, ভাঙচুর হল ইটাহারে। বিকেল ৪টে পর্যন্ত এমন সংঘর্ষ চলেছে।

জখম: আহত এএসআই শিবনাথ বর্মন। নিজস্ব চিত্র

জখম: আহত এএসআই শিবনাথ বর্মন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৮
Share: Save:

মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া নিয়ে বু‌ধবারই উত্তাল হয়ে উঠেছিল রায়গঞ্জ। বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরেরই ইটাহার উত্তপ্ত হয়ে উঠল সকাল এগারোটা থেকে। কয়েক দফায় তুমুল মারপিট, ভাঙচুর হল ইটাহারে। বিকেল ৪টে পর্যন্ত এমন সংঘর্ষ চলেছে। বিডিও অফিস ভাঙচুর হয়েছে। মাথা ফেটে গিয়েছে ইটাহার থানার সহকারী সাব ইন্সপেক্টর শিবনাথ বর্মনের। ১০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার জখম হয়েছেন। শিবনাথবাবুকে ইটাহার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

হামলা, ভাঙচুরের জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছে তৃণমূল। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের দিকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে শুক্রবার সুষ্ঠু ভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি তোলেন। সেই দাবিতে বিজেপির কর্মীরা তির, ধনুক, লাঠি নিয়ে ইটাহারের চৌরাস্তা এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ চলার পর পুলিশের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

পুলিশ দাঁড়িয়েছে বিজেপির বিরুদ্ধেই। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের দাবি, ‘‘সরকারি নিয়মে দুপুর ৩টেয় মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়। তারপর বিজেপির কর্মীরা জোর করে বিডিও অফিসে ঢুকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। পুলিশ বাধা দেওয়ায় তাঁরা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে বিডিও অফিসে ভাঙচুর করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ জেলাশাসক আয়েশা রানির দাবি, বিডিও অফিসে কোনও সম্পত্তি নষ্ট হয়ে থাকলে প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।

সিপিআইয়েরও অভিযোগ, সকালে ইটাহার ও দুর্লভপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিআই ও সিপিএমের কর্মীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে তৃণমূলের কর্মীরা তাঁদের বাঁশ, লাঠি ও উইকেট দিয়ে মারধর করে তাড়িয়ে দেন। প্রাক্তন সিপিআই বিধায়ক শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘হামলায় সিপিআইয়ের ইটাহার লোকাল কমিটির সম্পাদক অজয় চক্রবর্তী সহ সিপিআই ও সিপিএমের ১০ জন জখম হন।’’

এ দিন দুপুরে বিজেপির কয়েকশো কর্মী তির, ধনুক ও লাঠি নিয়ে তাঁদের প্রার্থীদের নিয়ে মিছিল করে বিডিও অফিসের সামনে জড়ো হন। বিজেপির অভিযোগ, বিডিও অফিস চত্বরে পুলিশের সামনেই তৃণমূলের কর্মীরা দলের এক কর্মীকে মারধর করে মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে দেন। ওই খবর বাইরে এসে পৌঁছতেই বিজেপির কর্মীরা অফিস চত্বরে ঢোকার চেষ্টা করেন। বাধা দিলে পুলিশকর্মীদের মারধর, তির ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পুলিশকর্মীদের একাংশ পালিয়ে যান। ইট, পাথর ও কাচের বোতল দিয়ে দরজা, জানলা ভাঙা হয়। সেই সময় ইটের আঘাতে জখম হন শিবনাথবাবু। বিজেপির জেলা সভাপতি নির্মল দাম বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ এ দিন ইটাহারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলেন।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘ইটাহার ব্লকে বিজেপি, সিপিআই ও সিপিএমের কোনও সংগঠন নেই। তাই তিনটি দল একজোট হয়ে সন্ত্রাস করেছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE