Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

মাথাভাঙায় নির্যাতিতার বাড়ি গিয়ে হুমকি

নির্যাতিতা দুই কিশোরীর পরিবারের লোকজনদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের একটি অংশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ সশস্ত্র অবস্থায় এক দল যুবক ওই দুই বাড়ির সামনে গিয়ে গালি দেয় বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৫
Share: Save:

নির্যাতিতা দুই কিশোরীর পরিবারের লোকজনদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক দলের একটি অংশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ সশস্ত্র অবস্থায় এক দল যুবক ওই দুই বাড়ির সামনে গিয়ে গালি দেয় বলে অভিযোগ। সে সময় গ্রামের বাসিন্দারা বেরিয়ে এলে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে পুলিশও সেখানে যায়। ওই ঘটনার পর থেকে গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের বেলেরডাঙা বুথ কমিটির সভাপতি হরিপদ সরকারের আত্মীয় হয় অভিযুক্ত দুই যুবক টোটন সরকার এবং রুদ্র তালুকদার। হরিপদবাবুর লোকজনেরাই ওই দুই পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। হরিপদবাবু সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

হরিপদবাবু অবশ্য এমন ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, অভিযুক্ত এবং নির্যাতিতা সব পরিবারই তাঁর আত্মীয়া। তিনি বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। তা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। ওই ঘটনার পর থেকে গ্রামে একটা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। কোনও রকম যাতে অশান্তি না হয়, সে জন্য সবার কাছেই আর্জি জানানো হয়। এর বাইরে কিছু হয়নি।’’ কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “কোনওরকম যাতে সমস্যা না হয়, সে কথা ভেবেই পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। আমরা নতুন করে কোনও অভিযোগ পাইনি।”

তবে হাজরাহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মণিবালা বর্মন বলেন, “ওই দুই পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে আমার কাছেও অভিযোগ এসেছে। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। আমরা ওই পরিবারের পাশে আছি।” ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্যা লতিকা বর্মনের স্বামী নারায়ণবাবু বলেন, “মঙ্গলবার রাতে একটি গণ্ডগোলের ঘটনা শুনেছি। ঠিক কী হয়েছে জানি না। তবে অভিযুক্তদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবি আমরাও করেছি।” তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পরিষ্কারই জানিয়েছেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়। তবে অভিযুক্তদের প্রতি সহানুভূতিশীল কেউ যদি গিয়ে হুমকি দিয়ে আসে, ভুল করেছে। পুলিশ পুলিশের কাজ করছে।’’

অন্য দিকে, বুধবার ধর্ষণ কান্ডে অভিযুক্ত ২ যুবককে চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল কোচবিহার পকসো আদালত। বিচারক শ্রীমতী বুলি দাস তাদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ দিনই হাসপাতাল থেকে চিকিৎসাধীন কিশোরীকে ছুটি দেওয়া হয়। কোচবিহার আদালতেই তাঁর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। পরে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় ওই কিশোরীকে। ওই মামলার সরকারি আইনজীবী শীর্ষেন্দু রায় বসুনিয়া জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দু’টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। পকসো আদালতে দুটি মামলারই শোনানি হয় এ দিন। তিনি বলেন, “সাত দিনের পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছিল। বিচারক চার দিন মঞ্জুর করেন।” অভিযুক্তদের আইনজীবী শিবেন রায় অবশ্য দাবি করেন, ওই ঘটনার সঙ্গে ধৃত দুই যুবক জড়িত নন। তিনি বলেন, “ওই দুই জন রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার হয়েছে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, কালীপুজোর রাতে ঠাকুর দেখতে যাওয়ার নাম করে পড়শি দুই কিশোরীকে জোর করে জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গ্রামের দুই যুবক টোটন ও রুদ্র ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই দুই কিশোরী সম্পর্কে পিসি ও ভাইঝি। বাড়ি ফিরে রাতেই সমস্ত কথা জানায় ওই কিশোরীরা। রাতেই একজন কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। রবিবার সকালে আরেক কিশোরী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। এদিনই মৃত তরুণীর বাড়িতে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হয়।

অন্য বিষয়গুলি:

police Victim Accused Threat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE