বাংলা বিভাগের দুই শিক্ষকের মধ্যে ঝামেলার জেরে শুরু হওয়া আন্দোলন, পাল্টা আন্দোলনকে ঘিরে গত এক মাসে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। যার জেরে কখনও বন্ধ হয়েছ পড়াশোনা, প্রশাসনিক কাজ, এমনকি পরীক্ষাও। এই আন্দোলন আর চাপানউতোরের আঁচ এখনও পুরোপুরি নিভে যায়নি। এই পরিস্থিতিতে আজ, শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি। কর্মসমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে বাংলা বিভাগের ঝামেলা নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে। তৈরি করা হতে পারে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটিও। সূত্রের খবর, কেন পরিস্থিতি জটিল হল, তা উপাচার্যের কাছে জানতে চাইতে পারে সমিতি।
বাংলা বিভাগের দুই শিক্ষকের ঝামেলা এর আগেও কর্মসমিতির আলোচনার বিষয় হয়েছিল। সমিতির এক সদস্য জানিয়েছেন, সেই সময় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এক শিক্ষককে সংযত হতে নির্দেশ দিয়েছিল সমিতি। লিখিতভাবে তাঁকে সতর্কও করা হয়েছিল। ওই সদস্য বলেন, ‘‘এত সবের পরেও কেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হল না, তা খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজন বুঝলে ওই দুই শিক্ষককে ডেকে পাঠিয়ে গন্ডগোলের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। একটি বিভাগের জন্য গোটা বিশ্ববিদ্যালয় কেন ভুগবে, সেই প্রশ্নও উঠেছে। সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।’’ সূত্রের খবর, বাংলা বিভাগের ঝামেলা এবং তার পরবর্তী গন্ডগোল নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের বেশ কিছু লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। জমা পড়েছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে যাওয়া বহু ভিডিও ক্লিপিংস, ছবি ও লেখা। সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে প্ররোচনা দিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়ানো হয়েছে বলেও অভিযোগ এসেছে কর্তৃপক্ষের কাছে। সমস্ত অভিযোগ কর্মসমিতির কাছে তুলে ধরা হবে বলেই জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার দিলীপকুমার সরকার।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বাংলা বিভাগের ঝামেলার তদন্তে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জন উপাচার্যকে নিয়ে তদন্ত কমিটি তৈরি করা হতে পারে। নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে কমিটিতে রাখা হবে না। অন্য একটি সূত্রের খবর, তদন্ত কমিটিতে তাদের প্রতিনিধি রাখার দাবিতে শুক্রবার কর্মসমিতির কাছে লিখিত আবেদন জানানোর পরিকল্পনা করেছেন একদল ছাত্রছাত্রী। তবে তাঁদের আবেদন গ্রহণ করলে অন্য পক্ষও লিখিত আবেদন জমা দিতে হাজির হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সমিতির সদস্যদের একাংশ। সে ক্ষেত্রে ফের ঝামেলা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই পড়ুয়াদের প্রতিনিধি তদন্ত কমিটিতে রাখা হবে কিনা, তাই নিয়ে সংশয় রয়েছে— জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র। রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘আমরা ছাত্র, শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী— সব পক্ষের বক্তব্য, দাবি এবং যা যা ঘটেছে সবটাই কর্মসমিতির কাছে তুলে ধরব। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, সমিতি নেবে। সেই অনুসারেই কাজ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy