Advertisement
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দ্বন্দ্ব ঠেকাতে ধরপাকড়

কাউন্সিলরের দোকান লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ নেতা। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সাড়ে ১১ টা নাগাদ কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার গুড়িয়াহাটি এলাকায় নিজের বাড়ির সামনে থেকেই গ্রেফতার করা হয় অভিজিৎ দে ভৌমিক ওরফে হিপ্পিকে।

গ্রেফতারের পরে অভিজিৎ দে ভৌমিক (সামনে সাদা জামা)। — নিজস্ব চিত্র

গ্রেফতারের পরে অভিজিৎ দে ভৌমিক (সামনে সাদা জামা)। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২৬
Share: Save:

কাউন্সিলরের দোকান লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ নেতা। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সাড়ে ১১ টা নাগাদ কোচবিহারের কোতোয়ালি থানার গুড়িয়াহাটি এলাকায় নিজের বাড়ির সামনে থেকেই গ্রেফতার করা হয় অভিজিৎ দে ভৌমিক ওরফে হিপ্পিকে। ধৃত হিপ্পি বিধায়ক মিহির গোস্বামীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তৃণমূল কাউন্সিলর শুভজিৎ কুণ্ডুর কাপড়ের দোকান লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল হিপ্পির বিরুদ্ধে।

শুক্রবার সন্ধ্যাতেই আবার গুলিকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে শুভজিৎবাবুর অনুগামী স্বর্ণেন্দু ঘোষ ওরফে বামাকে দুর্গাপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগে ওই দিন সকালেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ঘনিষ্ঠ নেতা মহম্মদ কলিম খান ওরফে মুন্নাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। দলীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে ওই দুই গোষ্ঠীর বিরোধ চলছে কোচবিহারে। একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। শুভজিৎবাবুকেও কিছুদিন আগে গুলি চালানোর ঘটনায় মদত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গত তিন দিনে কোচবিহারে তৃণমূলের ওই দুই বিবদমান গোষ্ঠীর ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন অভিজিৎবাবুকে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁর দু’দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতেই ধরা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।”

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ৪ জুলাই রাতে ভবানীগঞ্জ বাজার লাগোয়া ওই দোকানটির সামনে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেখানে অভিজিৎবাবুর অনুগামী দীপেশ লামা নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনায় মদতের অভিযোগে শুভজিৎবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাতেই দোকান লক্ষ করে গুলি ছোড়ার অভিযোগ ওঠে অভিজিৎ ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। শুভজিৎবাবুকে উদ্দেশ্য করেই গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। শুভজিৎবাবু এ দিন বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। অভিজিৎ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে পূর্ণ আস্থা আছে। সঠিক বিচার পাব। আইন আইনের পথেই চলবে।”

দলীয় সূত্রে খবর, কোচবিহার শহর ও লাগোয়া এলাকায় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির কর্তৃত্ব কার হাতে থাকবে তা নিয়েই দু’পক্ষের বিরোধ। দু’পক্ষই কলেজের ছাত্র সংসদ নিজেদের হাতে রাখতে তৎপর হয়ে উঠতেই সংঘর্ষ শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং অনার্স পাইয়ে দেওয়ার নাম করে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তোলা হয়। দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ একাধিকবার তুলেছে। এ ছাড়া কোচবিহার পুরসভা এলাকায় কে কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে তা নিয়েই বিরোধ রয়েছে।

কোনও নেতাই অবশ্য মুখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করতে চান না। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “পুলিশ ওই ঘটনার তদন্ত করছে। তা নিয়ে কিছু বলার নেই।” বিধায়ক মিহিরবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন প্রশাসনিক স্বার্থে যা করছেন ঠিক করছেন। পুলিশের কাছে একটাই অনুরোধ করব যাতে সমাজবিরোধী ও রাজনৈতিক নেতাদের একই আসনে না বসানো হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Police accused
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE