নদী থেকে তুলে আনা হল গন্ডারের দেহ। ছবি: রাজকুমার মোদক।
দিনভর চেষ্টার পর জলদাপাড়া জঙ্গলের খরস্রোতা শিসামারা নদী থেকে একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ গন্ডারের দেহ উদ্ধার করল বন দফতর। বুধবার সকালে মালঙ্গি বিট এলাকায় শালকুমার ১ নম্বর পঞ্চায়েতের নতুনপাড়ার বাসিন্দারা নদীতে গন্ডারের দেহ দেখে বনকর্মিদের খবর দেন। বনকর্মিরা এসে শিসামারা নদীতে প্রথমে একটি কুনকি হাতি নামিয়ে গন্ডারের দেহ পাড়ে তোলার চেষ্টা করে। কিন্তু হাতিটি শুঁড় দিয়ে দেহ টেনে তোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও বনকর্মিরা দড়ি দিয়ে বেঁধে কিছু মানুষ ঠেলে ও কিছু মানুষ টেনে টেনে গন্ডারটিকে চরে নিয়ে আসে। সেখান থেকে ক্রেনের সাহায্যে গন্ডারের দেহ তুলে ময়না তদন্তের জন্য পূর্ব রেঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়।
নতুনপাড়ার বাসিন্দা খাদিরুল সরকার বলেন, “বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে সকালে শিসামারা নদীর বাঁধে ঘুরতে এসে জলে আটকে থাকা গন্ডারের দেহটি দেখতে পাই। প্রথমে সন্দেহ হয় গন্ডার না অন্য কিছু। প্রতিবেশিদের ডাক দিয়ে আনি। খবর দেওয়া হয় বনকর্মিদের। প্রথমে কুনকি হাতি দিয়ে পাড়ে তোলার চেষ্টা হয়। হাতি ব্যর্থ হলে বাসিন্দাদের সাহায্য নিয়ে গন্ডারটিকে চরে তোলা হয়।” কীভাবে নদীতে গন্ডারের দেহ এল সকাল থেকেই শুরু হয় তা নিয়ে জল্পনা। যেহেতু মৃত গণ্ডারের খড়্গটি অবিকৃত ছিল এবং গায়ে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না তাই চোরাশিকারের সম্ভাবনা খারিজ করে দেন বনদফতরের কর্তারা।
এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ মত, বর্ষায় বন্যপ্রাণীদের প্রজনন কাল। হয়তো মঙ্গলবার রাতে সঙ্গিনী দখলের লড়াইয়ে দুই পুরুষ গন্ডার মারামারি করতে করতে শিসামারা নদীর পাড়ে চলে আসে। মৃত গন্ডারটি কোনও ভাবে নদীতে পড়ে আর উঠতে পারেনি। তারপর ভাসতে ভাসতে মালঙ্গি এলাকায় কম জলে আটকে পড়ে।
তবে বেলা শেষে কোচবিহারের বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও জে ভি ভাস্কর বলেন, “গন্ডারটির ময়নাতদন্ত করে জলে ডুবেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন। গন্ডারটির গায়ে কোনও ক্ষতচিহ্ন ছিল না। সম্ভবত নদী পার হতে গিয়ে জলের নীচে পড়ে থাকা গাছের শক্ত ডালপালার মধ্যে আটকে মুখ থুবরে পড়ে গিয়ে আর উঠতে পারেনি গন্ডারটি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy