Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

প্রচারে বাধা, সর্বদলে সরব বিরোধীরা

তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে তুফানগঞ্জে প্রশাসনের ডাকা সবর্দল বৈঠকে সরব হল বিরোধীরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস প্রায় এক সুরে শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে নালিশ জানিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তুফানগঞ্জ শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২৬
Share: Save:

তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে তুফানগঞ্জে প্রশাসনের ডাকা সবর্দল বৈঠকে সরব হল বিরোধীরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, বাম, বিজেপি ও কংগ্রেস প্রায় এক সুরে শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে নালিশ জানিয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় তুফানগঞ্জের মহকুমা শাসকের দফতরে ওই বৈঠক হয়। তবে বিরোধীদের তোলা অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে বৈঠকেই উড়িয়ে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তুফানগঞ্জের মহকুমা শাসক তথা ওই পুরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার পালদেন শেরপা অবশ্য বলেন, “লিখিতভাবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পুলিশ ও ভোট মনিটরিং সেলে জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বৈঠকে যুযুধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের পাশাপাশি ১২টি ওয়ার্ডের প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিপিএমের তরফে প্রথমে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে দলীয় প্রার্থীদের প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়। সিপিএমের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তুফানগঞ্জ পুরসভার ১০ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডে দলের প্রার্থীরা প্রচারে বেরোলে মাঝরাস্তায় একদল তৃণমূল সমর্থক রীতিমতো হুমকি দিয়ে তাঁদের ফিরে আসতে বাধ্য করেন। পরে ওই ব্যাপারে পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানানো হয়েছে। পুরসভার ৪, ৫, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাম প্রার্থীদেরও তৃণমূল প্রচারে বাধা দেয় বলে অভিযোগ।

সিপিএমের দখলে থাকা তুফানগঞ্জ পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান সুভাষ ভাওয়াল বলেন, “ ওই পুরসভা সিপিএমের দখলে রয়েছে। এবারেও বামেদের পালে হাওয়া ভাল। তাই দলের প্রার্থীদের প্রচার বন্ধ করার কৌশল নিয়েছে তৃণমূল। বেশ কিছু ওয়ার্ডে আমাদের প্রার্থীদের প্রচারে বাঁধা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সমস্ত কিছু জানিয়েই আমরা এক ব্যাক্তির এক ভোটের অবাধ নির্বাচনের দাবি করেছি।”

বিজেপির অভিযোগ, দলের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ক্ষীরোদ রায়ের বাড়িতে গিয়ে সম্প্রতি তৃণমূল সমর্থকরা প্রচার না করার জন্য শাসিয়েছেন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নিবারণ বর্মা ও ১২ নম্বরের প্রার্থী প্রফুল্ল পালকে প্রচারে বাঁধা দিয়েছে তৃণমূল। বিজেপির কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি বিমল সরকার বলেন, “ তুফানগঞ্জ পুরসভায় শাসক দল সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রার্থীদের প্রচারে যেতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। বৈঠকে এসব জানান হয়েছে। অবাধ ভোট করাতে প্রশাসন উদ্যোগী হবে বলে আশা করছি।” কংগ্রেস নেতা দেবেন বর্মা জানিয়েছেন, তৃণমূলের চাপে বাধ্য হয়ে দলের একজন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। বৈঠকে তা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট নিশ্চিত করার দাবি আমাদের দলের তরফে উপস্থিত প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। তৃণমূল অবশ্য সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের তুফানগঞ্জ শহর কমিটির সভাপতি হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “একই কায়দায় সিপিএম, বিজেপি-সহ বিরোধীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বৈঠকে ভিত্তিহীন নানা অভিযোগ তুলেছেন। ও সব বাম আমলে হত।”

প্রসঙ্গত, ১২ আসনের তুফানগঞ্জ পুরসভা টানা দেড় দশকেরও বেশি সময় সিপিএমের দখলে রয়েছে। গত পুরভোটে সিপিএম সেখানে আটটি ও তৃণমূল চারটি আসন জিতেছিল। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বৈঠকে সরকারি জায়গা থেকে প্রচার সামগ্রী খুলে নেওয়া, খরচের হিসাব পদ্ধতি নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE