অসম প্রশাসনের হাতে সন্দেহভাজন জঙ্গি ও দুষ্কৃতীদের ৩০ জনের তালিকা তুলে দিল রাজ্য প্রশাসন। মঙ্গলবার অসমের ধুবুরি ও কোকরাঝাড় জেলার পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গের তিন জেলার পুলিশ ও প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা। কোচবিহার সার্কিট হাউসে বৈঠক হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার ছাড়াও আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকে অসমের পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের হাতে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত, দুষ্কৃতী ও সন্দেহভাজন জঙ্গিদের ৩০ জনের একটি তালিকা তুলে দেওয়া হয়েছে। তাতে খোদ কেএলও প্রধান জীবন সিংহ সহ সন্দেহভাজন জঙ্গিদের নাম রয়েছে।
কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে বিশদে আলোচনা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের একটি তালিকা এ দিন অসমের দুই জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই তালিকাভুক্তদের মধ্যে যাঁরা অসমে রয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “সন্দেহভাজন জঙ্গি কার্যকলাপ সহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ও দুষ্কৃতীদের ব্যাপারে সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। এ দিনের বৈঠকে ওই সমস্ত ব্যাপারে বিভিন্ন তথ্য আদানপ্রদান করা হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনে গোলমালের আশঙ্কা এড়াতে আন্তঃজেলা ও আন্তঃরাজ্য যোগাযোগ বাড়ানোর ব্যাপারে পরিকল্পনা হয়েছে। সেই হিসাবেই এ দিন কোচবিহার সার্কিট হাউসে বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে অসমের ধুবুরি ও কোকরাঝাড় জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপাররা ছাড়াও বিএসএফ ও এসএসবি’র প্রতিনিধিরা যোগ দেন।
প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, কোচবিহারের বেশ কিছু ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে অসম কিংবা আলিপুরদুয়ার বা জলপাইগুড়ি জেলার সীমানা পেরিয়ে যাতায়াত করতে হয়। ওই সব ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে কর্মীদের পৌঁছতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে ব্যাপারেও এ দিন আলোচনা হয়েছে। তবে সন্দেহভাজন জঙ্গি ও কোচবিহার সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে অথচ বেপাত্তা, এমন দুষ্কৃতীদের গতিবিধি জানার বিষয়টি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে।
কেন এমন বাড়তি সতর্কতা?
পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার অসম লাগোয়া। শ্রীরামপুর ও বক্সিরহাট হয়ে ওই দুই জেলার সঙ্গে অসম–বাংলার যোগাযোগ রয়েছে। অসম লাগোয়া কোচবিহারে সন্দেহভাজন কেএলও জঙ্গিদের আনাগোনা নিয়ে অভিযোগ বহুদিনের। এমনকি বাম আমল থেকে তৃণমূল জমানা সরকার বদল হলেও কেএলও’র দৌরাত্ম্যের অভিযোগ কমেনি।
পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারের বক্সিরহাট থেকে কেএলও’র শীর্ষ কর্তাদের অন্যতম বলে পরিচিত একাধিক সন্দেহভাজন জঙ্গি ধরাও পড়েছেন। তাদের মধ্যে লাল সিংহ ডেকা ও হিরণ্য রায়ের মত কেএলও’র দুই শীর্ষনেতা আছেন। যার জেরে এমনিতেই অসম লাগোয়া উত্তরের ওই দুই জেলার সীমানায় প্রায় সারা বছর নজরদারি থাকে।
ভোটের মুখে অশান্তি সৃষ্টির জন্য অসমকে করিডোর করে জঙ্গি গোষ্ঠী বা কোনও দুষ্কৃতী চক্র উত্তরবঙ্গে ঢুকতে পারে এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একাংশ। তাই এ বার বাড়তি সতর্কতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy