রাত ১১টাতেও জমজমাট মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গের সচিবালয় উত্তরকন্যা। উপলক্ষ্য, পাহাড়ের চা বাগানের বোনাস নিয়ে ত্রিপক্ষ বৈঠক। যা কি না বেলা আড়াইটেয় শুরু হয়েছিল।
প্রায় ১১ ঘণ্টা আলোচনার পরেও বোনাসের হার ঠিক হলেও কী ভাবে বিলি হবে তা নিয়ে মতৈক্য না হওয়াতেই মাঝরাত অবধি গড়িয়েছে বৈঠক। পুলিশ, সিআইডি অফিসারদেরও উত্তরকন্যার চৌহদ্দিতে গভীর রাত পর্যন্ত দেখা গিয়েছে। শিলিগুড়ির এক পুলিশ কর্তা জানান, যে হেতু পাহাড়ের সব কটি শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধির বৈঠক শেষে যাতে নিরাপদে ফিরতে পারেন, সে জন্যই পুলিশের তরফে নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়।
তবে চা মহলের খবর, বোনাস নিয়ে বৈঠক মাঝরাত অবধি গড়ানো কোনও নতুন ব্যাপার নয়। অতীতেও তা হয়েছে। তবে সেটা কলকাতায়। সিটু, তৃণমূল, জন আন্দোলন পার্টি, জিএনএলএফের নেতারা একান্তে জানান, পাহাড়ের পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক নয় বলেই আলোচনা দীর্ঘ হয়েছে। কারণ, বোনাস দিলেও সব চা বাগানে শ্রমিকরা কবে কাজে যোগ দেবেন তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। রাজ্যের শ্রম কমিশনার জাভেদ আখতারও বৃহস্পতিবারই মীমাংসা করতে হবে বলে জানান।
সরকারি সূত্রের খবর, ঘণ্টা চারেক বৈঠকের পর নবান্নের শীর্ষ স্তর-সহ বিভিন্ন মন্ত্রী আমলাদের টেলিফোন পাহাড়ের বাগান মালিকদের কাছে আসতে থাকে। অনেক আলোচনার পর পাহাড়ে সমস্ত বাগানে ১৯.৭৫ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। ঠিক হয়, তিন দফায় বোনাস দেওয়া হবে। পুজোর আগে এক দফায়, বড়দিনে আরেক দফা এবং জুলাই মাসের মধ্যে আরেক দফা বোনাস দেওয়া হবে। কিন্তু শ্রমিকেরা এক দফায় টাকা দাবি করতে থাকেন।
রাত ১০টা নাগাদ শ্রমিক সংগঠনগুলি বেঁকে বসে। জিএনএলএফ নেতা এনকে কুমাই জানান, ‘‘এক দফায় ২০ শতাংশ লাগবে। নইলে বাগান খোলা হবে না।’’ মোর্চার শ্রমিক নেতা হরিহর আচার্য অভিযোগ করেন, ‘‘আসলে মালিকেরাই বাগান খুলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চান না।’’ মালিকেরা রাতে দু’দফায় দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পুজোর আগে এক দফা আর পুজোর পর বাগান স্বাভাবিক হলে আরেক দফার কথা বলেন।
সরকারি সূত্রের খবর, রাত ১২টা নাগাদ দু’দফায় পাহাড়ের ৮৭টি বাগানে বোনাসের চুক্তি হয়। পুজোর আগেই সব বাগান খুলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই বোনাসের ৫০ শতাংশ টাকা দেওয়া হবে। বাকি ৫০ শতাংশের দিন নিয়ে বিবাদ থাকায় ১৪ অক্টোবর উত্তরকন্যায় ফের বৈঠক হবে। সেদিন কবে বাকি টাকা দেওয়া হবে তার দিন ঠিক হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy