কারও থেকে যে পিছিয়ে নেই মালদহ মেডিক্যাল, শুক্রবার তা ফের দেখিয়ে দিলেন সেখানকার চিকিৎসকেরা।
দু’বছর ধরে পেটের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন রতুয়ার চণ্ডীপুরের রঞ্জিনা বিবি। তাঁর স্বামী ফারমান মোমিন পেশায় দিনমজুর। এই সময়টুকু ধরে তিনি সাধ্যমতো চিকিৎসা করিয়েছেন স্ত্রী। কিন্তু কোনও উপকারই হচ্ছিল না। গত ছ’মাস ধরে কিছুই প্রায় খেতে পারছিলেন না রঞ্জিনা। জল খেলেও ব্যথা শুরু হচ্ছিল। গত কয়েক দিন ধরে পেট ফুলতে শুরু করে। শেষে মোমিন তাঁকে নিয়ে আসেন মালদহ মেডিক্যালে।
শুক্রবার দুপুরে দীর্ঘ অস্ত্রোপচারে তাঁর পেট থেকে বার হয় ১৩০টি সিস্ট। বাদ দিতে হয় প্লীহা বা স্প্লিন।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে বলা হয়েছে, যে অবস্থায় রঞ্জিনা এসেছিলেন, তাতে দ্রুত অস্ত্রোপচার না করলে বিপদ ঘটতে পারত। হাসপাতালের দুই শল্য চিকিৎসক অভিষেক মণ্ডল ও অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় জানান, ওই ৩৮ বছর বয়সী ভদ্রমহিলাকে সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আল্ট্রা সোনোগ্রাফির পরে দেখা যায়, রঞ্জিনার প্লীহায় রয়েছে বিরল হাইডাটিড সিস্ট। এবং সব মিলিয়ে তার আকার বেশ বড়। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ওই সিস্ট আরও বাড়লে রঞ্জিনার প্রাণরক্ষা করা মুশকিল ছিল।
শুক্রবার দুপুরে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। আড়াই ঘণ্টা ধরে চলে সেই অস্ত্রোপচার। অভিষেক জানান, পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে প্লীহা কেটে বাদ দিতে হয়। হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘হাসপাতালের চিকিৎসকেরা প্রায়ই নানা জটিল অস্ত্রোপচার করছেন। এ দিনও কাজ কঠিন ছিল। তবে সফল ভাবেই তাঁরা হাইডাটিড সিস্ট অস্ত্রোপচার করেছেন। রোগী ভাল আছেন।’’
অভিষেক জানিয়েছেন, মূলত কুকুরের বিষ্ঠা থেকে এই ধরনের সংক্রমণ হয়। কোনও ভাবে সেই বিষ্ঠার কাছাকাছি এলে এই সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাতে প্লীহা তো বটেই, আক্রান্ত হতে পারে ফুসফুস এবং লিভারও। সিস্টের আকার নিয়ে শরীরের সেই অঙ্গগুলি বড় হতে শুরু করে এবং পরে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। এর ফলে জীবনহানিরও আশঙ্কা রয়েছে।
রঞ্জিনার স্বামী মোমিন বলেন, ‘‘আমার পক্ষে জেলার বাইরের কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে স্ত্রীর অস্ত্রোপচার করা সম্ভব ছিল না। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy