উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাধিপতির আসনটি এ বার সংরক্ষণের আওতায়। ফলে অন্য আসনে প্রার্থীর হওয়ার দৌড়ে থাকলেও টিকিট পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে আলেমা নুরির। গতকাল রায়গঞ্জে তৃণমূলের স্ক্রিনিং কমিটির বৈঠকেও সমাধান সূত্র মেলেনি। আর এই নিয়ে দলের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়েছে। জানা গিয়েছে, গোয়ালপোখর ১ ব্লকে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৭ নম্বর আসনে বর্তমান উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদ সভাধিপতি আলেমা নুরি সিপিএম থেকে জয়ী হন। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। এবং সভাধিপতি করা হয় তাঁকে।
বর্তমানে তাঁর আসনটি সংরক্ষণের আওতায় আসায় ওই আসনে প্রার্থী হতে পারবেন না তিনি। কিন্তু অন্য দু’টি আসনে তাঁর নাম প্রস্তাবিত হলে টিকিট পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই দু’টি আসনে ইতিমধ্যে গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানি ঘনিষ্ঠ প্রার্থী দৌড়ে আছেন। পাশের ৮ নম্বর আসনটি মহিলা সংরক্ষিত। সেই আসনে একজন মহিলা প্রার্থীর নাম প্রায় চূড়ান্ত। সব মিলিয়ে কোনও আসনে সভাধিপতি টিকিট পাবেন। তা নিয়ে দলের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। একে তো এমনিতেই একেকটি আসনে পাঁচ জন ছ’জন করে নামের তালিকা। তার মধ্যে স্থানীয়দের বাদ দিয়ে আলেমা নুরিকে কী ভাবে প্রার্থী করবে এই নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকে যাচ্ছে। এ দিন আলেমা নুরি বলেন, ‘‘পাশের দু’টি আসনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছি। জানিনা দল কি করবে।’’
গোয়ালপোখর ১ ব্লক বিধায়ক, মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘আলেমা নুরি যে আসনটিতে জয়ী হয়েছিলেন সেটা সংরক্ষিত হওয়ার ফলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। অন্য আসনে প্রার্থী বিষয়ে দলীয় ভাবে আলোচনা চলছে। এই মুহূর্তে আমার পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’
এ দিকে গোষ্ঠী-কোন্দলে জেরবার গোয়ালপোখর ২ ব্লকে পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদ আসনে প্রার্থীই ঘোষণা করতে পারছে না তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় সূত্র বলছে, কিছু আসনে প্রার্থী ঠিক করে ঘোষণার পরে ফের সেই তালিকা বদল করে দেওয়া হচ্ছে। ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতারা বলছেন, সকালে যে প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে, সন্ধ্যায় তা বদল হয়ে আবার অন্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। দিনভর দফায় দফায় বৈঠকে বসেও প্রার্থী নির্বাচন করতে পারছে না নেতৃত্ব।
এক আসনে প্রার্থী হওয়ার জন্য একাধিক দাবিদার হওয়ায় চূড়ান্ত তালিকা করা যাচ্ছে না বলে স্বীকার করেছেন ব্লক সভাপতি সেতাবুদ্দিন মুন্না। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীরা যেখানে প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না সেখানে আমাদের এক আসনে সাত থেকে আটজন প্রার্থী দাবিদার। যার ফলে প্রার্থী বাছাই করতে কিছু সমস্যা আছে। তবে আশা করছি শীঘ্রই চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা করা সম্ভব হবে। এই ব্লকের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘দল যাঁকে প্রার্থী ঘোষণা করবে তাঁকেই মেনে নিতে হবে। কোনওরকম বিরোধ বরদাস্ত করা হবে না।’’
ফরওয়ার্ড ব্লক তথা বামেদের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত গোয়ালপোখর। বিরোধীদের দল ভাঙিয়ে আনা হলেও শাসক দল সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। ফরয়ার্ড ব্লকের বিধায়ক আলি ইমরান রমজ বলেন, ‘‘আমরা বামেরা সব আসনেই প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা করছি।’’ গোয়ালপোখর-২ ব্লক পঞ্চায়েত সমিতি গত নির্বাচনে বামেদের দখলে ছিল। পরে তা শাসকদল ছিনিয়ে নেয়। জেলা পরিষদের তিনটি আসনের মধ্যে তিনটি আসনই কংগ্রেস দখল করে। পরে জেলা পরিষদের তিন সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy