শিলিগুড়ি পুরসভার কর আদায়কারী হিসাবে নিযুক্ত থাকায় কংগ্রেসের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বিমলেশ মৌলিকের প্রার্থীপদ খারিজ করে দিল নির্বাচন কমিশন।
শুক্রবার বিকালে কমিশনের তরফে কংগ্রেসকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে এবার ভোটে ৪৬ ওয়ার্ডেই প্রার্থী থাকছে দলের। তবে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী শর্মিলা দাস, ৪৪ নম্বরের সিপিএম প্রার্থী প্রীতিকণা বিশ্বাস, ৩৩ নম্বরের তৃণমূল প্রার্থী সমিরণ সূত্রধর, ১১ নম্বরের তৃণমূল প্রার্থী মঞ্জুশ্রী পালের মনোনয়নপত্র ঠিক রয়েছে বলে কমিশন জানিয়েছে। যদিও কমিশনের জবাবে সন্তুষ্ট না হতে পেরে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে কংগ্রেস মামলার পথে যাচ্ছে বলে জানিয়ে দিয়েছে।
কমিশনের যুক্তি, বিমলেশবাবু পুরসভা কর আদায়কারী হিসাবে কাজ করেন। পুরসভার কর আদায়ের আয়ের থেকেই তিনি পারিশ্রমিক কমিশন হিসাবে টাকা পান। এই অবস্থায় কমিশনের আইন অনুসারে তিনি প্রার্থী হতে পারবেন না।
পুরভোটের রিটার্নিং অফিসার তথা মহকুমা শাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, “মনোনয়নপত্র পরীক্ষার সময় যে যে আপত্তি উঠেছিল, সেগুলি আইন মেনে খতিয়ে দেখা হয়। পাঁচটি আপত্তি কলকাতায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়। সেখান থেকে চারটিতে কোনও সমস্যা নেই বলা হয়। কংগ্রেসের একজন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।”
নিবার্চন কমিশন সূত্রের খবর, সিপিএমের দুই প্রার্থী শর্মিলা দাস এবং প্রীতিকণা বিশ্বাস পুর এলাকার আইপিপি-৮ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত। তা নিয়ে তৃণমূলের তরফে আপত্তি তোলা হয়।
কিন্তু কমিশন জানিয়েছেন, ওই প্রকল্পে পারিশ্রমিক পুরসভা দেয় না। স্টেট আর্বান ডেভলপমেন্ট এজেন্সি বা ‘সুডা’ তাদের প্রকল্প ভিত্তিক নিয়োগ করে পারিশ্রমিক দেয়। তাই তাদের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী সমীরণবাবু সরকারি আইনজীবী নথিভুক্ত থাকলেও তিনি নিয়মিত কোনও বেতন বা পারিশ্রমিক পান না। আর ১১ নম্বর তৃণমূলের মঞ্জুশ্রীদেবী পুরসভার তালিকাভুক্ত ঠিকাদার হলেও তিনি ৬ ফেব্রুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে সংস্থাটি থেকে বার হয়ে আসেন। ২০ মার্চ পুরসভায় তা জানিয়ে ব্যবসা থেকে সরে আসেন।
যদিও জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারের অভিযোগ, “সময়সীমা চলে যাওয়ার পরেও তৃণমূলের দুই প্রার্থীকে নিয়ে আপত্তি তোলার পরেই তাঁদের ডেকে এনে কাগজপত্র ঠিক করানো হয়। পুরসভার সচিব সপ্তর্ষিবাবু মঞ্জুশ্রীদেবীর ঠিকাদারি ছাড়া এবং জমা দেওয়ার কাগজপত্র পুরানো দিনে করে দিয়েছেন।”
শঙ্করবাবু কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানানোর ও মামলার পথে যাওয়ার কথা জানান। মহকুমা শাসক অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “সমস্ত কিছু কমিশনের নির্দেশ এবং আইন মেনে হচ্ছে।” পুরসচিব সপ্তর্ষিবাবু বলেন, “যা বলার রির্টানিং অফিসার বলবেন।”
কংগ্রেসের অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “কমিশন যাদের কাগজপত্র ঠিকঠাক পেয়েছেন, তাদের প্রার্থী হিসাবে রেখেছে। আর যাঁদের হবে না, তাঁদের বাতিল করেছে। এতে তৃণমূলের কিছু নেই।”
মনোনয়নপত্র নিয়েই রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেই শিলিগুড়ি প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হীরক রায়কে গত বৃহস্পতিবার রাতেই কালিম্পঙে পাঠানো হয়েছে। ভোটের মুখে এই বদলি নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, হীরকবাবু নির্বাচনের মনোনয়নের দায়িত্ব ছাড়াও ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস ওয়েলফেয়ার, ডিস্ট্রিক্ট ইয়ুথ অফিসার এবং ত্রাণ বিভাগের দায়িত্ব ছিলেন।
রিটার্নিং অফিসার অবশ্য জানান, উনি আদলে কালিম্পং মহকুমা শাসকের দফতরের নিযুক্ত। এক অফিসার অসুস্থ ছাড়ায় অস্থায়ীভাবে তিনি এখানে কাজ করছিলেন। ভোটে যার যেখানে পোস্টিং সেখানেই থাকতে হবে বলে নির্দেশ থাকায়, উনি কালিম্পঙে চলে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy