নারী বা শিশু পাচারের মতো ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রেই তথ্য-প্রমাণের অভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে পাচারের শিকার যাঁরা তাঁদের বয়ান, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অভিযুক্তদের জেরা করার সময় কথাবার্তা রেকর্ডিংয়ের উপর জোর দিতে বলেন মুম্বই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। রবিবার ভারত-নেপাল সীমান্তে পানিট্যাঙ্কি এলাকায় এসএসবি এবং শিলিগুড়ির ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউট অব লিগ্যাল স্টাডিজের উদ্যোগে মানুষ পাচার রুখতে সচেতনতা প্রচার অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। এ ব্যাপারে পাচারের বিরুদ্ধে কাজ করছে দুই পারের এমন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোর সাহায্য নিতে বলেন।
মুম্বই আদালতে এ দেশ থেকে নেপালে পাচার করার একটি মামলা তুলে ধরে বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট প্রমাণের জন্য ভিডিও রেকর্ডিং খোঁজ করছিলেন। পরে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহায়তায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলানো এবং তা রেকর্ড করে প্রমাণ হিসাবে দেখালে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া সম্ভব হয়।
পাচার রুখতে সেমিনার, ওয়ার্কশপের মাধ্যমে আরও বেশি করে সচেতনতা প্রচারের উপর জোর দিতে বলেন। কাউকে ওপারে কাজের নামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানালে এসএসবির তরফে সেখানে যোগাযোগ গড়ে তোলা দরকার। না হলে পাচার বন্ধ করা যাবে না বলে দাবি করেন। এসএসবি শিলিগুড়ি ফ্রন্টিয়ারের উদ্যোগে ‘সীমা কা কাহানি’ নামে ৭ মিনিটের একটি সিনেমা তৈরি করা হয়েছে। দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে কী ভাবে চাকরির নামে ফুঁসলিয়ে বাইরে নিয়ে যাওয়ার ফাঁদ পাতা হয় এবং সচেতন থাকলে এসএসবির সহায়তায় কী ভাবে তাকে ধরিয়ে দেওয়া যায় তা
দেখানো হয়েছে।
চা বাগান এলাকা, সেখানকার স্কুলগুলোতে, প্রত্যন্ত এলাকার বাজারে ওই ছবি দেখানো হবে বলে জানান এসএসবির শিলিগুড়ি ফ্রন্টিয়ারের আইজি শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায় ‘‘চা বাগান এলাকা থেকে ওই বয়সের ছেলে-মেয়েরা প্রচুর পাচার হচ্ছে।’’ একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানান, ভারত নেপাল-সীমান্তে শিশু-কিশোর পাচারের যে সমস্ত অভিযোগ এসএসবি কাছে এসেছে সেই মতো ২০১৬-তে ৩১ জনকে উদ্ধার, ২০ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বছর ৫৬ জন উদ্ধার, ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কেরলে একটি পাচারের ঘটনা উল্লেখ করে মঞ্জুলাদেবী জানান, দুই থেকে এগারো বছরের বাচ্চাদের কেরলের একটি স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ছত্রিশগড় থেকে এমন ৫০০ বাচ্চাকে পচার করা হচ্ছিল। এমনকী ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বাবা, মায়েরা তাদের অনেককে বিক্রি করছেন বলে জানা যায়। অনেকসময় উদ্ধারের পরে পরিবার তাদের বাড়িতে ফেরাতে চান না। সে ক্ষেত্রে সঠিক পুনর্বাসনের কথাও জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy