Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Development

জঙ্গল-সড়কে এ বার নজর

ডুয়ার্স থেকে দার্জিলিং, চিতাবাঘের দেখা মিলছে বারবার। গত মাসেই দার্জিলিংয়ের ম্যাল থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে রাতের অন্ধকারে বড় রাস্তার ধারে দেখা গিয়েছিল চিতাবাঘ

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৮
Share: Save:

ডুয়ার্স থেকে দার্জিলিং, চিতাবাঘের দেখা মিলছে বারবার। গত মাসেই দার্জিলিংয়ের ম্যাল থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে রাতের অন্ধকারে বড় রাস্তার ধারে দেখা গিয়েছিল চিতাবাঘ। মঙ্গলবার দার্জিলিং যাওয়ার রোহিণী রোডে গাড়ির ধাক্কায় মারা গিয়েছে আর একটি চিতাবাঘ। উদ্বিগ্ন বন দফতর ঠিক করেছে, জঙ্গল বা জঙ্গল লাগোয়া বনবস্তির পাশাপাশি এ বার রাতে হাইওয়েতেও নজরদারি করা হবে। বন দফতর যোগাযোগ রেখে চলবে পুলিশের সঙ্গেও।

বন দফতরের অফিসারেরা জানান, শীতের শেষে এই সময়টা চিতাবাঘের শাবকেরা বড় হয়। তারা খাবারের সন্ধানে দূরে দূরে যেতে শুরু করে। এক রাতে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার অবধি ঘোরাফেরা করার ক্ষমতা রাখে চিতাবাঘ। আগে চা বাগান, জঙ্গল বা বনবস্তিতে বেশি ঘুরলেও সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তারা বড় রাস্তাতেও চলে আসছে। রাস্তা টপকে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলে যাচ্ছে। মরিয়া হয়ে লোকালয়েও ঢুকে পড়ছে। তাতেই সতর্কতা বেশি করে দরকার হয়ে পড়েছে।

তাই বুধবারই কার্শিয়াং ডিভিশনের আওতাধীন তরাই থেকে পাহাড়ের বিভিন্ন ফরেস্ট প্রোটেকশন কমিটিগুলোতে চিতাবাঘ দেখামাত্র খবর দিতে বলা হয়েছে। জঙ্গল বা চা বাগানে চিতাবাঘ দেখা দিলেও তা জানাতে বলা হয়েছে। যাতে চিতাবাঘটিকে চিহ্নিত করে নিরাপদে জঙ্গলের রাস্তা দেখানোয় সুবিধা হবে। প্রতিটি বিট অফিসকে আর দশটা কাজের সঙ্গে রাতের হাইওয়েতে নজর রাখতে বলা হয়েছে। এ দিনই সুকনা বন্যপ্রাণ স্কোয়াডকে পানিঘাটা, বামনপোখরি, গাড়িধুরা, শিমুলবাড়ি, বাগডোগরা রেঞ্জের এলাকার রাস্তায় বিশেষ নজরদারির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।

কার্শিয়াং ডিভিশনের বনাধিকারিক সন্দীপ বেরওয়াল বলেন, ‘‘চিতাবাঘ অত্যন্ত দ্রুত যাতায়াত করে। আমরা সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিশেষ করে হাইওয়ে এবং জঙ্গল, চা বাগান লাগোয়া রাস্তাগুলিতে রাতে নজরদারি করতে বলা হয়েছে।’’

বনকর্তারা জানান, গত ১৬ জানুয়ারি দার্জিলিং হ্যাপিভ্যালি চা বাগানের পাশে পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে চিতাবাঘটি দেখা গিয়েছিল। মঙ্গলবার রোহিণীর রাস্তায় যে চিতাবাঘটিকে দেখা যায়, সেটি সম্ভবত শিমুলবাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। বন দফতরের ধারণা, ওই এলাকায় আরও ৫-৬টি চিতাবাঘ রয়েছে। গত বছরে পানিঘাটা, ত্রিহানা চা বাগান এলাকার রাস্তায়, চা বাগানে একাধিক চিতাবাঘ দেখা গিয়েছে। একটি চিতাবাঘকে বুনো শুয়োরের দল রাতে আক্রমণ করে মেরেই ফেলে। আর একটি বিষক্রিয়ায় মারা যায়। রাস্তার পাশে মরে পড়েছিল। আবার শিলিগুড়ি শহরে সেবক রোডে বৈকুণ্ঠপুর বনাঞ্চল থেকে একটি চিতাবাঘ বার হয়ে চলে এসেছিল। তার আতঙ্ক ছড়িয়েছিল গোটা শহরে। মূলত রাস্তার ধারে থাকা কুকুর, গরু বা শুয়োরের লোভে চিতাবাঘের দল হানা দিচ্ছে বলেও ওই অফিসারেরা মনে করছেন।

তাঁরা জানাচ্ছেন, বনবস্তির তুলনায় ফাঁকা হাইওয়ে থেকে শিকার ধরা সহজ বলেই চিতাবাঘের দল সম্ভবত বারবার রাস্তায় বার হয়ে আসছে। তাই রাস্তাতেও এ বার নজরদারি রাখতে হচ্ছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE