একটি আদালতের মামলা।
সেখানকার মোট আটটি কোর্টে প্রতিদিন প্রায় ৫০টি মামলা হয়। দীর্ঘসূত্রী নিষ্পত্তির পর সে সব মামলার সার্টিফায়েড কপি হাতে পেতেও সাধারণ মানুষের লেগে যায় আড়াই থেকে তিন বছর।
কাঠগড়ায় জেরক্স মেশিন।
কান্দি মহকুমা আদালতের এই অচলাবস্থা কাটাতে আইনজীবীরা কর্মবিরতি পালন করেন সোমবার। কান্দি প্লিডার্স অ্যান্ড অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশন ও কান্দি বার অ্যাসোসিয়েশন নামে দু’টি আইনজীবি সংগঠনের অভিযোগ বিচারাধীন মামলাগুলি নিষ্পত্তি হওয়ার পরেও মক্কেলদের সার্টিফায়েড কপি হাতে পেতে অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে। ফলে উচ্চতর আদালতে মামলা করতে পারছেন না তাঁরা। অথবা সরাসরি আদালতের নির্দেশ কাজে লাগাতেও বিস্তর দেরি হচ্ছে।
কিন্তু কেন এই দেরি? আইনজীবী সংগঠনের কর্তাদের দাবি, মহকুমা আদালতের জন্য তিনটি জেরক্স মেশিনের অনুমদন দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু বহরমপুরে মুশির্দাবাদ জেলা জজ কোর্ট থেকে তিনটির পরিবর্তে একটি মাত্র ওই মেশিন আসে। বাকি দু’টি দু’টি বহরমপুর আদালতেই থেকে যায়। এ দিকে সবেধন নীলমণি যে মেশিনটি কান্দিতে এসেছিল, সেটিও বেশির ভাগ দিন বিকল হয়ে পড়ে থেকে। ফলে সেই সময়ে সব কাজটাই করতে হয় টাইপ মেশিনের মাধ্যমে। একাধিক বার টাইপ করে প্রতিলিপি তৈরি অত্যন্ত ঝামেলার কাজ। স্বভবতঃই পিছিয়ে যায় ওই প্রতিলিপি হাতে পাওয়ার দিনক্ষণ।
জানা গিয়েছে, কান্দি আদালতের জেরক্স মেশিনটি বিকল হয়ে থাকালে আদালতের কপি বিভাগে মোট ছয় জন টাইপিস্টের মাধ্যমে প্রতিলিপি তৈরি করেন। তবে আইনজীবীরা তা হাতে পান।
আইনজীবিদের অভিযোগ নিয়ম অনুযায়ী ওই আদালতের কপি বিভাগে কর্মরত টাইপিস্টরা একদিনে ২০ পাতার বেশি কপি টাইপ করতে পারেন না। অথচ এমন অনেক মামলা হয় যার কপি ২০ পাতার বেশি। সে ক্ষেত্রে একটি মামলার ওই একটি কপিই একদিনে টাইপ করা সম্ভব হয় না। ওই আদালতের উপর নির্ভর করেন কান্দি মহকুমার বড়ঞা, খড়গ্রাম, কান্দি, ভরতপুর ১ও২ নং মোট পাঁচটি থানা এলাকার বাসিন্দারা। সেখানে একটা মাত্র জেরক্স মেশিনের উপর কেনই বা নির্ভর করতে হচ্ছে আদালতকে। নিয়ম অনুযায়ী ওই আদালত নিজে ওই মেশিন কিনতে পারেনা। জেলা আদালতের মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্ট ওই মেশিন সরবরাহ করে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী মহল।
বর্তমানে ওই আদালতে প্রায় ছয় হাজারের বেশি ফৌজদারি ও তিন হাজারের বেশি দেওয়ানি মামলা চলছে। আইনজীবী রাজীব রায় বলেন, “আমি প্রায় ৩০টি সার্টিফায়েড কপির জন্য আবেদন করেছি। কোনওটি এক বছর আগে তো কোনটি আবার তিন বছর আগে। আজ অবধি একটিও কপি হাতে পাইনি। মক্কেলদের অসুবিধা হচ্ছে।”
কান্দি প্লিডার্স অ্যান্ড অ্যাডভোকেট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সফিউর রহমান বলেন, “আমরা বারবার আলোচনার মাধ্যমে ওই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেছিলাম। জেলা আদালতের কাছেও বার বার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই ওই একদিনের কর্মবিরতি পালন করতে হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy