Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

পুড়ে মৃত শিক্ষিকা, অভিযুক্ত অধরাই

সীমা যে স্কুলে পড়াতেন সেখানকার সহকর্মীরাও অভিযুক্তদের ধরা না-পড়ার ঘটনায় হতাশ।

প্রতিবাদে সহকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদে সহকর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেথুয়াডহরি শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:১১
Share: Save:

এক শিক্ষিকাকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তাঁর বাপের বাড়ির লোক। কিন্তু চার দিন কেটে গেলেও অভিযুক্তেরা অধরা বলে ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা।

মৃতা সীমা মণ্ডল রায় (৩৯) বেথুয়াডহরি গার্লস স্কুলের গণিতের শিক্ষিকা ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বাবা গোড়াচাঁদ মণ্ডল নাকাশিপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন জামাই সুপ্রিয় রায় ও মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকের টাকার চাহিদা মিটছিল না। মেয়েকে তাঁদের অত্যাচার সইতে হত। বিশেষ করে সীমার সন্তান হয়নি বলে শাশুড়ি চরম লাঞ্ছনা করতেন, গঞ্জনা দিতেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘জামাই, মেয়ের শাশুড়ি, দেওর, জা ও জামাইয়ের এক মাসি মিলে আমার মেয়ের গায়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। ওদের কঠোর শাস্তি চাই।’’

সীমা যে স্কুলে পড়াতেন সেখানকার সহকর্মীরাও অভিযুক্তদের ধরা না-পড়ার ঘটনায় হতাশ। এক সহকর্মীর কথায়, ‘‘প্রায়ই সীমা দুঃখ করত। সবাই ওকে বিবাহবিচ্ছেদের পরামর্শ দিতেন। কিন্তু পরিবারের সম্মানের কথা ভেবে ও পিছিয়ে আসত। ওর উপরে শারীরিক নির্যাতন চালানো হত। স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ও চিকিৎসা করতো। পুলিশ জানিয়েছে, বধূহত্যার মামলা রুজু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে অভিযোগের উপর ভিত্তি করে তদন্ত চলছে।

ভালবাসার সম্পর্ক ছিল সীমা ও সুপ্রিয়-র। সুপ্রিয় ধুবুলিয়ার কামারহাটি হাইস্কুলের ইংরাজির শিক্ষক। ২০১৪ সালের জুলাইয়ে তাঁদের বিয়ে হয়। সীমার বাড়ির লোকের অভিযোগ, বিয়ের ছ’মাস যেতে না যেতেই সমস্যার সূত্রপাত হয়। অভিযোগ সীমার মাইনের টাকা গোটাটাই নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন সুপ্রিয় ও তাঁর বাড়ির লোক। সন্তান হচ্ছে না বলেও সীমার উপরে নির্যাতন চালানো হত। সীমার বোন শিখা মণ্ডল বলেন, গত ২ নভেম্বর রাতে দিদির পুড়ে যাওয়ার খবর পাই। দিদির মুখ, বুক ও পায়ের একটা দিক সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ১৬ দিন লড়াই চালানোর পরে ও মারা যায়।

শিখার দাবি, মারা যাওয়ার আগে সীমা তাঁকে ঘটনার দিনের কথা বিস্তারিত বলে গিয়েছেন। সেখান‌ে তিনি জানিয়েছেন, বর ও শ্বশুড়বাড়ির লোক তাঁকে পুড়িয়ে মেরেছে। সীমা ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমোচ্ছিলেন। প্রতিদিনের মতো মদ খেয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন সুপ্রিয়। হঠাৎ আগুনের তাত গায়ে লেগে ঘুম ভেঙে যায় সীমার। দেখেন, তাঁর শরীরের একাংশে আগুন জ্বলছে। শিখার দাবি, সীমা তাঁকে জানিয়েছিলেন, সুপ্রিয় তখন পাশে দাঁড়িয়ে হাসছিলেন। কিছু ক্ষণের মধ্যে সীমার চিৎকারে পাড়ায় ঘটনা জানাজানি হয়। অভিযোগ, তখন সুপ্রিয় সীমাকে বাঁচানোর অভিনয় করেন। তাতেই সুপ্রিয়র হাত অল্প পুড়ে যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Wife Murder Accused Absconding
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE