Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

শরীরে সেঁধানো আর্সেনিক মুক্তির উপায় বার করে আন্তর্জাতিক শিরোপা এ রাজ্যের পড়ুয়াদের

কিন্তু জলের সঙ্গে শরীরে সেঁধিয়ে যাওয়া বিষ থেকে মুক্তির উপায়?  সেই উপায় বাতলে মার্কিন মুলুকে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা পেলেন কল্যাণীর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার)-এর জনা কয়েক পড়ুয়া।

সফল আইসার। নিজস্ব চিত্র

সফল আইসার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৩৯
Share: Save:

পানীয় জল থেকে ক্ষতিকর আর্সেনিক বার করার নানা উপায় রয়েছে। কিন্তু জলের সঙ্গে শরীরে সেঁধিয়ে যাওয়া বিষ থেকে মুক্তির উপায়?

সেই উপায় বাতলে মার্কিন মুলুকে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা পেলেন কল্যাণীর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার)-এর জনা কয়েক পড়ুয়া। এ বারই প্রথম তাঁরা ওই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিলেন। শুরুতেই এমন সাফল্য পড়ুয়াদের মনোবল যেমন বাড়িয়েছে, আইসার-এর সাফল্যের টুপিতেও যোগ হয়েছে নতুন পালক।

‘ইন্টারন্যাশনাল জেনেটিক্যালি ইঞ্জিনিয়ার্ড মেশিন’ প্রতিযোগিতার আসর এ বছর বসেছিল আমেরিকার বস্টনে। আইসার-এর জীববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অনিন্দিতা ভদ্র জানান, সেই প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার ছাড়পত্র পেতে গেলে প্রথমে জাতীয় স্তরে একটি প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে হয়। সেখানে নিজেদের পরিকল্পনার রূপরেখা তৈরি করে ছাড় মেলে আট মাস আগে। এই প্রকল্পের জন্য জীববি়জ্ঞান বিভাগের ন’জন পড়ুয়াকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। দলের মাথায় ছিলেন ওই বিভাগেরই দুই অধ্যাপাক পার্থসারথী রায় এবং অর্ণব গুপ্ত। কেন্দ্রীয় সরকারের দীব-প্রযুক্তি বিভাগ এই প্রকল্পের জন্য আইসারকে ১০ লক্ষ টাকা দেয়।

আইসার সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের বিষয় ছিল, শরীরে ঢুকে থাকা আর্সেনিকের প্রভাব কী ভাবে কমানো যায়। শুরুতেই গবেষকেরা ঠিক করেন, ব্যাক্টেরিয়া দিয়ে তা করা হবে। কিন্তু শরীরে আর্সেনিক কঠিন অবস্থায় থাকায় সাধারণত ব্যাক্টেরিয়া তা শোষণে সক্ষম নয়। তাই সাধারণ ব্যাক্টেরিয়ার জিনগত পরিবর্তন করা হয়। দীর্ঘ পরীক্ষার পরে তাঁরা সফল হন। পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়, তাঁদের তৈরি এই ব্যাক্টেরিয়া আর্সেনিক শুষে নিতে সক্ষম। তাঁদের গবেষণা বলছে, উপকারি এই ব্যাক্টেরিয়াকে ওষুধের মধ্যেও বন্দি করা সম্ভব। সেই বড়ি খেলেই শরীরে আর্সেনিকের প্রভাব কমানো যাবে।

কাজ শুরু জন্য আইসার-এর পড়ুয়ারা আর্সেনিকপ্রবণ এলাকায় গিয়ে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেন। চিকিৎসক এবং এই বিষয়ে গবেষণা করছেন, এমন লোকজনের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। আইসার সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ২৫ থেকে ২৮ অক্টোবর বস্টনের প্রতিযোগিতায় এখানকার দলের প্রতিনিধিরা হাতে-কলমে গোটা বিষয়টি তুলে ধরেন। সেটি উচ্চ প্রসংশিত হয়। মোট ৩০০টি দল প্রতিযোগিতায় এসেছিল। আইসা-এরর পড়ুয়ারাই স্বর্ণপদক জিতে নেন। আইসার-এর দুই বিজ্ঞানী স্বাধীন মণ্ডল ও রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু দিন আগেই দেশের বিজ্ঞান ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সম্মান শান্তিস্বরূপ ভাটনগর পুরস্কার পেয়েছেন। তার পরে এই পুরস্কার স্বভাবতই সম্মান বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানের।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE