Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
দৌরাত্ম্যে চুপ পুলিশ

কে আর ঘাঁটাতে চায় বাইকবাহিনীকে

রাতের কলকাতায় মোটর বাইক নিয়ে বেলেল্লাপনা নৈব নৈব চ— শুক্রবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

হেলমেটের বালাই নেই। — নিজস্ব চিত্র

হেলমেটের বালাই নেই। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর ও কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ০১:৩৯
Share: Save:

রাতের কলকাতায় মোটর বাইক নিয়ে বেলেল্লাপনা নৈব নৈব চ— শুক্রবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

শহরের ব্যাস্ত উড়ালপুলে রাতের বাইক-শাসনও নয়।

কলকাতায় সেই বার্তা কি দুই জেলা সদরে পৌঁছয়নি?

প্রশ্নটা উঠছেই। কারণ, ইদের সকাল থেকে দিনভর বাইকের দাপট এবং ক্রমান্বয়ে প্রাণহানির পরেও শুক্রবারও তাতে রাশ টানতে পারেনি পুলিশ।

এ দিনও খোলা মাথায়, হেলমেটের পরোয়া না করে ছুটন্ত বাইক নিয়ে পথচারীদের তঠস্থ করে রাখায় কোনও রাশ টানা যায়নি। এ ব্যাপারে কড়া হওয়ার প্রশ্নে জেলা পুলিশকেও সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। বরং প্রশ্ন করলে শুনতে হয়েছে, ‘‘আইন তো সবে হল এ বার ধীরে ধীরে তার প্রয়োগ হবে!’’

যে কোনও উৎসব-পার্বণের আগে পুলিশ প্রশাসন ঘটা করে বৈঠক করায় এ বারও গাটতি ছিল না। যেখানে যান নিয়ন্ত্রণ থেকে হেলমেটের ব্যবহার— উঠেছিল সব প্রশ্নই। কিন্তু নদিয়া-মুর্শিদাবাদ, দুই জেলায় তিন-তিনটি প্রাণ যাওয়া সত্ত্বেও পুলিশের তঞপরতা চোখে পড়েনি এদিনও। মুর্শিদাবাদের এক ট্রাফিক পুলিশ কর্তা যেমন স্পষ্টই বলছেন, ‘‘ইদের দিনে ধড়পাকর করে আর অশান্তি বাড়াতে চাইনি।’’ আর নদিয়ার এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘নিয়ম তো করেই খালাস কর্তারা, তার প্রয়োগ করা কি অত সহজ!’’ তা হলে কি পুলিশের করণীয় কিছুই নেই?

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, প্রয়োজনের তুলনায় ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা অনেক কম দুই জেলাতেই।ফলে অনেক সময়ে মোটরবাইক আরোহীদের বিরুদ্ধে আইনত পদক্ষেপ করা যাচ্ছে না।

পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘এটা সহজ কথা, যে নিজে সচেতন হলে তুমি বাঁচবে নচেৎ নয়!’’ যেমনটা হয়েছে ইদের দিন— মাথায়
হেলমেট থাকলে ছয়ঘরি পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে বহরমপুর-জলঙ্গি রাজ্য সড়কের মোটরবাইক দুর্ঘটনায় যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে তা ঠেকানো সম্ভব হত।

হাসপাতালের ওই চিকিৎসকেরাও জানাচ্ছেন, কোনও উৎসব-পার্বণ এলেই তাঁরা চিকিৎসকরা আগে থেকেই প্রস্তুত থাকেন যে, মোটরবাইক দুর্ঘটনা ঘটবেই এবং জখম ব্যক্তিদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হবে। ইদের আগেও সে প্রশ্তুতি ছিল। তবে যারা মারা যাচ্ছে তারা তো বেঁচে যাচ্ছে। তবে যারা বেঁছে থাকছে তারা সারা জীবনের মত পঙ্গু হয়ে যাওয়ায় ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

মুর্শিদাবাদের পাশাপাশি নদিয়া জেলাতেও ইদের দিন দুটি পৃথক মোটরবাইক দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। জখমের সংখ্যা চার। হতাহতের কারও মাথায় হেলমেট ছিল না এবং দ্রুত গতিতে মোটরবাইক চালানোর ফলেই ওই বিপত্তি ঘটেছে বলে পুলিশ প্রশাসন সূত্রের খবর। নদিয়া পুলিশ প্রশাসনের এক কর্তা জানান, যে কোনও উৎসবের দিনে মোটরবাইক দুর্ঘটনা সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোটরবাইক চালক ও আরোহীদের মধ্যে সচেতনতা না এলে কোনও ভাবে ওই দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া মুশকিল বলে ওই পুলিশ কর্তা মনে করেন। এ প্রসঙ্গে নদিয়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, ‘‘উঠতি যুবকদের মধ্যে হেলমেট ছাড়াই জোরে মোটরবাইক চালানোর প্রবণতা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে মদ্যপ অবস্থায় মোটরবাইক চালানোর ফলেও ওই বিপত্তি ঘটে। নিজেরা সচেতন না হলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব নয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

reckless driving
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE